Ameen Qudir

Published:
2019-03-20 22:16:55 BdST

আবরারের স্বপ্ন ছিল ডাক্তার হবে: তাই আবারও জোর প্রস্তুতি নিচ্ছিল


 


ডেস্ক
_____________________

ঢাকার যমুনা ফিউচার পার্কের সামনে দেশ তোলপাড় করা সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত আবরারের স্বপ্ন ছিল ডাক্তার হওয়ার। এ বছর সুযোগ পায় নি সে। কিন্তু আগামী বছরের জন্য জোর প্রস্তুতি তার চলছিল । মেধাবী ছাত্র। লেখাপড়াই ছিল তার আরাধনা। মেডিকেলে পড়ে ডাক্তার হয়ে মানুষের সেবাই ছিল তার কাছে পরম ধর্ম। তাই আগামী বছর আবারও মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের ইচ্ছা ছিল তার। কিন্তু ঘাতক বাসের চাকায় সব স্বপ্ন শেষ হয়ে গেল।

এবার আপাতত: বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফোশনালসে (বিইউপি) ইন্টারন্যাশনাল রিলেশনশিপ (আইআর) বিভাগে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। খুব মনোযোগ দিয়ে সেখানে লেখাপড়া করত।

আবরারের ছোট চাচা মাসুদ আহমেদ চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ‘আবরার কমিশনার র‌্যাংকে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমান বাহিনীতে নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিল। কিন্তু তার ইচ্ছা ছিল সেনাবাহিনীর ডাক্তার হওয়া। এ বছর মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষায় সফল না হওয়ায় আগামী বছর আবারও মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের ইচ্ছা ছিল তার।

আবরার সম্পর্কে তিনি আরও জানান, ‘সে ছিল সবার আদরের পাত্র। বই পড়ার প্রতি তার আগ্রহ ছিল অনেক বেশি। সবাই তাকে অনেক পছন্দ করতো।’


আবরারসহ দুই ছেলে ছিল মা ফরিদা ফাতেমীর। ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল থেকে ‘এ’ এবং ‘ও’ লেভেল পাস করে বিইউপিতে পড়ছিলেন আবরার। আবরারের ছোট আবেদ আহাম্মেদ চৌধুরী ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের ৮ম শ্রেণির ছাত্র। বসুন্ধরা ডি ব্লকে ভাড়া বাসায় তারা থাকেন।

ছেলেকে শেষ বিদায় দিতে এসে মা ফরিদা ফতেমী বলছিলেন, ‘আমার বাবাকে কখনো একা ছাড়তে চাইতাম না। ও বলতো, আম্মু তুমি যদি আমাকে একা চলাফেরা করতে না দাও, তবে আমি ইন্ডিপেন্ডেন্ট হবো কীভাবে? সবাই আমার বাবাটাকে অনেক পছন্দ করতো। পরিবারের মাথার মুকুট ছিলি তুই। আমাদের একা ফেলে চলে গেলি কীভাবে? আমি কীভাবে তোকে ছাড়া থাকব? তুই একবার ফিরে এসে আমায় জড়িয়ে ধরে মা বলে ডাক বাবা।’

ছেলেকে কবরে শুইয়ে দেয়ার দৃশ্য দেখে আবরারের বাবা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আরিফ আহাম্মেদ চৌধুরী মুষড়ে পড়েন।

তিনি বলেন, ‘জীবনে অনেক কষ্টের সময় পার করেছি। ছেলেকে কবরে শুইয়ে দেয়ার মতো কষ্ট আর কিছুর সঙ্গে মিলবে না। জীবনের সব সফলতা যেন একটি ঘটনায় ছিন্নভিন্ন হয়ে গেল। আমার বাবাটা আর আমার কাছে আসবে না, কোনো দিন আর আমি তার মুখে বাবা ডাক শুনতে পারব না।’

আপনার মতামত দিন:


কলাম এর জনপ্রিয়