Ameen Qudir

Published:
2019-01-06 07:30:23 BdST

বই উৎসব তোমাদেরকে আলোর দিকে নিয়ে যাক রোজ রোজ


 

 

ডা. মাকসুদা খানম অনু
______________________________


হুমায়ুন আহমেদের একটা বইতে নায়ক ফুল নিয়ে রোগী দেখতে গিয়েছিল। ফুল দেখে রোগী মোটেও খুশি হননি।তিনি নায়ককে বলেছিলেন -"তোমরা আজকাল আর ফল নিয়ে রোগী দেখতে আসনা।"ফুল যে কত নান্দনিক তা উনি বুঝলেও ওনার মনে হয় ভালোলাগেনি।
আমাদের সময় মেলাকে বলতাম Exhibition.প্রথম পটুয়াখালীর মতোন একটা মহকুমা শহরে Exhibition সেকি আনন্দ!!সেকি কৌতূহল!! বলে বোঝানো যাবে না।আলোঝলমলে বিশাল মাঠে সার্কাস, পুতুল নাচ,বাতাসার দোকান,কটকটির দোকান আরও কতরকমের স্টল!!দিনের বেলায়ও মাঝে মাঝে সাজুভাইয়া আমার চাচাতো ভাইয়ের সাথে ঘুরতে যেতাম।কৃষি স্টলে গিয়ে দেখতাম মাটি দিয়ে বানানো কৃষক হুক্কা হাতে বসে আছে উঠোনে পাশে গাছভর্তি টমেটো।তবে রাতের আলোঝলমলে Exhibitionই আমাকে টানতো বেশি।।আমার আম্মা আমাকে লম্বা গোলাপি মালা আর কাঁচের চুড়ি কিনে দিয়েছিলেন এখনও মনে আছে।
এখন কত মেলা!!
বই মেলা।কৃষি মেলা।ফুল মেলা। শাড়ি মেলা।আরও কত রকমের উৎসব।বছরের প্রথমদিনে একদম প্রথমদিনে নতুন বই বিতরণ উৎসব -আমার কাছে খুব নানন্দিক মনে হয়।আমার কাছে সব উৎসবের সেরা উৎসব।নতুন বইয়ের একটা ঘ্রাণ আছে।এখনও মনে করতে ভালোলাগে। আমাদের কোন উৎসব না হলেও আমার আম্মা একটা উৎসব বানিয়ে ফেলতেন।আমি আর আসমা আম্মার পাশে বসে দেখতাম আম্মা কি সুন্দর করে ক্যালেণ্ডার দিয়ে শাদা ধবধবে মলাট দিয়ে দিতেন।কয়দিন শুধু নতুন বইয়ের ঘ্রাণ নিতাম।আমার ছোটবোনটা এখন বই উৎসবের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকতা। আমার খুব ভালোলেগেছে আমাদের টুকটুকি উম্মে আসমা এই নানন্দিক উৎসবের অংশ।

ছোট সোনামনিদের জন্য বিশাল প্রান্তর নেই।খেলতে পারেনা বেশির ভাগ শিশুরা।বিশেষ করে রাজধানীর শিশুরা।আহারে খেলতে না পারা যে কি কষ্টের!! আমাদের খেলার মাঠ ছিল দিগন্তবিস্তৃত। বনে বাঁদাড়ে,ধানক্ষেতে ঘুরে বেড়াতাম।শধু সবুজ আর সবুজ প্রান্তরে বাতাসে হিজলের ঘ্রাণ, কাঁচা ধানের ঘ্রাণ। ছোট্টসোনামনিদের এসব কিছুই নেই।তাই তোমরা আনন্দ আহরণ কর বই মলা হতে,বৃক্ষমেলা হতে,ফুলের মেলা হতে।সর্বোপরি নানন্দিক বই উৎসব তোমাদেরকে আলোর দিকে নিয়ে যাক রোজ রোজ।
প্রতিদিন। সারাদিনমান।।

__________________________

ডা. মাকসুদা খানম অনু । কবি, সুলেখক। প্রাক্তন : শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ।

আপনার মতামত দিন:


কলাম এর জনপ্রিয়