Ameen Qudir
Published:2018-12-28 03:40:05 BdST
এপিটাফবাংলাদেশের এই মেডিকেল অধ্যক্ষ মৃত্যুকালে রেখে গেছেন ২০০০ টাকা: বাকি সব বিলিয়েছেন লোকসেবায়
বিশেষ লেখা
______________________
একজন চিকিৎসক , মেডিকেল অধ্যক্ষ মৃত্যুকালে রেখে গেছেন মাত্র ২০০০ টাকা। আর অসংখ্য বই। তার শোয়ার ঘরে বই রাখার চৌকিটি বইয়ের ভারে ভেঙে পড়েছিল। তবে কি তিনি ডাক্তার হিসেবে আয় রোজগার করেন নি ! তার বেতনের টাকাও বা কোথায় !
বাংলাদেশ জুড়ে কেবলই ডাক্তার বিদ্বেষ। অথচ এই মানুষটির কথা আমরা একটি বারও বলি না। কৃতজ্ঞতাও স্বীকার করি না। তিনি ছিলেন অকৃতদার। জীবনের সকল আয় ও সঞ্চয় তিনি দান করেছেন মানুষের সেবায়।
২০১৫ সালের ডিসেম্বরে প্রয়াত হন এই কিংবদন্তি চিকিৎসক। কর্মের কারণে আজও তাঁকে স্মরণ করছেন সকলে। প্রফেসর ডাঃ মনসুর খলিল।
এনাটমী'র লিজেন্ড ছিলেন এই কিংবদন্তি মানুষটি। প্রয়াণ কালে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ,কিশোরগঞ্জ-এর প্রিন্সিপাল ও এনাটমীর বিভাগীয় প্রধান, ছিলেন।
বিয়ে থা করেননি, তাই সংসার নেই, একা একা থাকতেই বেশি পছন্দ করতেন, সমাজ-সামাজিকতায় খুব একটা মানিয়ে ওঠার চেষ্টা করতেন না।
ছাত্রছাত্রীরাই ছিল তাঁর সন্তান, তাদের ঘিরেই তাঁর সব চিন্তা ভাবনা- তারা কীভাবে আরো ভালোভাবে জ্ঞানার্জন করবে, কীভাবে পড়াশোনা সহজ করে নিতে পারবে।
নতুন ভর্তি হওয়া ছাত্রদের জন্য নিজেই নীলক্ষেতে থেকে বই কিনে উপহার দিতেন। প্রত্যেক ছাত্রই তাঁকে বাবার মতো দেখত, বাবা বলেই সম্বোধন করত।
মাসে যে বেতন পেতেন তার থেকে নিজের চলার জন্য যা লাগে তা রেখে মায়ের কাছে পাঠিয়ে দিতেন। মা মারা যাওয়ার পর সেই টাকা দান করে দিতেন এতিমখানায়।
শুনতে অবিশ্বাস্য শোনাবে , মৃত্যুকালে কি রেখে গেছেন এই আমৃত্যু লোকসেবী চিকিৎসক।
তার গুনগ্রাহী ডা. আবেদুর রহমান জানাচ্ছেন,
সরকারী মেডিকেল কলেজের এই অধ্যক্ষের মৃত্যুর পর তাঁর ব্যাংক একাউন্টে সঞ্চিত অর্থের পরিমাণ পাওয়া গেল ২০০০/= (দুই হাজার টাকা)। তাঁর শয়নকক্ষে পাওয়া গেল একটি শোয়ার চৌকি, একটি বই রাখার চৌকি যা বই এর ভারে ভেঙ্গে পড়েছিল এবং একটি অতি সস্তা টেবিল (যা ফুটপাতে কিনতে পাওয়া যায়)।
বেতনের বেশীর ভাগ টাকা তিনি গঠনমূলক কাজে বিলিয়ে দিতেন।
এই অধ্যক্ষ ছাত্রজীবনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ৪ টি মেডিকেলের মধ্যে রেকর্ড নম্বর পেয়ে সবগুলো পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করেছিলেন।
আপনার মতামত দিন: