Ameen Qudir

Published:
2018-12-04 07:55:05 BdST

চুরি বিদ্যা বড় বিদ্যা


 

 
দেবব্রত তরফদার
_____________________________

মনোজ বসুর একটি উপন্যাস পড়েছিলাম " নিশিকুটুম্ব "। বাংলা ভাষায় অসাধারণ একটি উপন্যাস , চোর সম্প্রদায় , চুরিবিদ্যার খুঁটিনাটি নিয়ে লেখা । দাগি চোরদের কাছে চুরি ব্যাপারটা যে একটা আর্ট সেটাও এই বই থেকে জানতে পেরেছি । অজস্র অজানা তথ্য এই বই থেকে জানা গেছিল । লেখক বহু তথ্য সংগ্রহ করে চরম মুন্সিয়ানার সঙ্গে উপন্যাসটি লেখেন ।
বেশ কিছুদিন মনের মত কিছু লেখা হয়নি ।আজ যে বিষয়ে লিখবো তার সবগুলোতে আমি নিজে উপস্থিত ছিলাম না , আমার ঘনিষ্ট বন্ধুদের কাছ থেকে শোনা । (কিন্তু লেখার খাতিরে আমি নিজেকে এর একটা চরিত্র হিসেবে উপস্থাপন করছি )। যে বালক ছোটবেলায় চুরি চামারী করেনি তার শৈশবকাল মিথ্যে , পানসে ভ্যাদভেদে । আমার বাবা তাঁর ছেলেবেলায় ছিলেন অসম্ভব ডানপিটে আর ডাকাবুকো । তাই ছোটখাট অন্যায় করে বাবার কাছ থেকে পার পেয়েছি কিন্তু আমার নিপাট নিরীহ ভালোমানুষ মা এ ব্যাপারে কখনোই বরদাস্ত করেনি তাই সবকিছুই সাবধানে করতে হয়েছে , তবে দু একবার ধরা পড়ে পিঠেও পড়েছে ।
ছোটবেলার চুরিগুলো ছিল প্রায় নির্দোষ ফল ফলারি হাঁস মুরগির মধ্যে সীমাবদ্ধ তবে যারা আরো সাহসী তারা ছাগল অবধি গড়ায় কিন্তু এখানে চুরি করলে হবে না হজম করার হিম্মত থাকতে হবে । চুরি করা ছাগলের মাংস খেয়েছি কিন্তু এই চুরির ইচ্ছে সাহস কোনোটাই ছিল না ।

যাইহোক প্ৰথমে আসে খেজুরের রস । গ্রামে নদীর ধারে সারবেধে খেজুরগাছ । শীতের সকালে ভাঁড়গুলি টইটম্বুর । চাইলেই পাওয়া যায় । বাড়ির কাজের লোকেরা মাঝেমধ্যেই নিয়ে আসতো । আমার একদম প্রিয় নয় খেজুর রস ।সকালে ঠান্ডার মধ্যে হি হি করে কাঁপতে কাঁপতে পেট ভর্তি করো আর তারপর ঘন ঘন বাথরুমে ছোট । তবে দলে পড়ে ক একবার সামিল হতে হয়েছে । খুব বেশি রস চুরি হলে গাছের মালিক দু একটা ভাঁড়ে বুনো ওল বা ধুতরোর ফল কেটে রাখে । সেই রস খেলেই চোর বাবাজি ক্যাচ কট কট আবার তার নাভিশ্বাস ওঠার জোগাড় । তাই সবকিছু সাবধানে । একবারের কথা মনে আছে । চার্চের পিছনের গাছগুলো সেবার কেটেছিল ঈশাহাক কাকা । ক একটি চারা গাছে অসম্ভব ভালো রস হচ্ছিল। সন্ধ্যাবেলায় প্ল্যান হলো , ওই কাকার ভাইপো ও ছিল। যখন বাড়ি থেকে বেরোচ্ছি তখন ছোটদি একটা বালতি ধরিয়ে দিয়ে বললো -- আমরাও যেন বাদ না যাই
। তা রস টস খাওয়া হলো নির্বিঘ্নে ,বালতিতেও নেওয়া হলো তখনও ভাঁড়গুলো গাছে টাঙানো হয়নি , এমন সময় মসমস জুতোর শব্দে ঝোপের মধ্যে লুকোলাম । ঈশাহাক কাকা এসেই দুই তিন চার পাঁচ ছয় অক্ষরে দিতে শুরু করলো । বালতির রস টা নিজের বালতিতে ঢেলে বললো -- যাক একটা বালতি তো পাওয়া গেল । অমনি আমার মায়ের রাগী মুখটা মনে পড়ে গেল আর ঝোপের মধ্যে থেকে আমি ডেকে উঠলাম -- ও কাকা , এটা আমার বালতি । কাকা মূর্তি মানদের দেখে একটু বিচলিত না হয়ে বললো -- অ তুরা , ক্যানে অস খ্যাতি ইসচা হলি চেতি কি হয়েলো । কিন্তু এই ধরনের সব চোরেরা জানে যে ধরা পড়লে সব মালিকই এরকম কথা বলে । বাস্তবে তা হয়না , আর চুরির মজা সে কি বুঝবে।
গ্রামে মুরগি চুরির অভিজ্ঞতা নেই কারন নিজেদেরই ছিল মুরগির পাল । কলেজ পড়ার সময় শীতকালে বাড়ি গেলে প্রতি সপ্তাহে পিকনিক হতো। দশ টাকাতেই একটা পাতিহাঁস এক কেজি মাংস । খুশি দিদি পরিষ্কার করে রান্না করে দিত । সেবার বড় মামার মেয়ের বিয়েতে সবাই কৃষ্ণনগর আর বাড়ি ঠেকাতে আমি গ্রামে । ছোটদি ছিল আমাদের সঙ্গে ।উঠোনে তিন গাড়ি সর্ষে মেলা । বাবা টাকা দিয়ে বললেন ওই তিনগাড়ি সর্ষে ঝেড়ে ফেলতে । বাড়ি গিয়ে লোক না লাগিয়ে কাচ্চা বাচ্চা নিয়ে নিজেরাই সর্ষে ঝেড়ে ফেললাম । ফাল্গুন পূর্ণিমা রাতে পিকনিক গরম গরম হাঁসের মাংস ভাত । দামু আর তেঁতুল বললো -- মিঠুদা , হাঁস আর কিনতে হবে না , দেখি ব্যবস্থা করা যায় কিনা । আমাদের গ্রামে প্রচুর হাঁস পোষা হয় । সকালেই বেরিয়ে যায় তারা নদীতে আর গুগলি টুগলি খেয়ে পেট মোটা করে সন্ধ্যেবেলায় যে যার বাড়ি । তবে এর অন্যথা হয় বৈকি একটু আধটু ,মাঝে মধ্যেই প্রেমিক প্রেমিকার টানে চলে যায় এ ওর শশুরবাড়িতে , আর তখনই হয় মুশকিল ,আর নদীর ধার মুখরিত হয়ে চৈ চৈ আয় শব্দে । তা দামু আর তেঁতুল একটা ডোঙা নিয়ে চলে গেলো নদীর ওই পারে কিছুক্ষন পর নধর দুই নর হাঁস নিয়ে ফেরে ।রাতে জমলো খুব , সর্ষে ঝাড়ার জন্য ছিল রাক্ষুসে খিদে । ভাত নিয়ে বসেছি এমন সময় জেঠুর বাড়িতে পরিচিত গলা -- অ দিদি তুমাদের হাঁসের সঙ্গে দ্যুটু নর হাঁস এইচে , সন্ধ্যি থেকি খুঁজি পাচ্চিনে । বড়মা হাঁসের ঘর খুলে দেখে ঘোষ জেঠিমাকে হতাশ করে । দামু খুক করে হেসে ,তার হাসিটা গিলে ফেলে হাঁসের মাংসের সঙ্গে । তেঁতুলের মুখে বোকার হাসি আর জেঠিমা যতবার চৈ চৈ ডাকে ততবার আমি বলি -- দ্যাখ তেঁতুল তোর পাতের মাংসের টুকরোগুলো লাফাচ্ছে । বিশ্বকাপে কলম্বিয়ার প্লেয়ার এসকেবার সেমসাইড গোল করার পর বেচারীকে মরতে হয় আততায়ীর গুলিতে কিন্তু এখানে ব্যাপারটা জানাজানি না হওয়ায় তেঁতুলের সাজা হয়নি ।

কৃষ্ণনগর , চাঁদসড়কের বাড়ির আশেপাশে সবাই মুরগি পুষতো , বাড়ি ওয়ালি দিদা খুব অপছন্দ করতেন , পাড়ার লোকের সঙ্গে মাঝেমধ্যেই বেধে যেত । এই দিদার শ্রাদ্ধের পরদিন প্রথম মুরগি ধরি ফাঁদ পেতে । সঙ্গী ছিল আমাদের বাড়িতে যে মেয়েটি থাকতো সে । পরে সেই হয়ে ওঠে এক্সপার্ট , আমি শুধু কাটাতাম ।ব্যাপারটা হতো দিদিকে লুকিয়ে । একদিন দিদির কাছে ধরা পড়ে গেলাম । দুপুরে খাবার পাতে মাংস দেখে দিদি অবাক , খুব বকুনি খেলাম দিদি না খেয়ে উঠে গেল । তারপর ওই পথ বন্ধ হলো । ক্লাবের মধ্যে চুরিতে সেরা ছিল ভাদু বা তারক।বারোদলের মেলায় যেতাম দলবেধে , ভাদু চুরি করতো রাজ্যের খেলনা আর মনোহারি জিনিস একটাও বাড়ি নিয়ে যেতোনা , বাচ্চাদের বিলিয়ে দিতো । তবে তার দোষ ছিল একটা , ১৯৮৬ র বিশ্বকাপ ফুটবল দেখার সময় রাজ্যের নারকেল চুরি করতো ছেলেরা আর অন্য কেউ গাছে থাকলে নারকেলগুলো কুড়িয়ে চোর চোর চিৎকার করে পালাতো , আর গাছে যে থাকতো তার হতো মরন । ভাদুকে দু চার ভট্টা দিলেও তার এই মজা থেকে বিরত রাখতে পারিনি । চুরি করতে গিয়ে অঘটনও ঘটে । গ্রামের হানেপ মোল্লার চারা গাছের আম চুরি করতে গিয়ে গিয়ে হটাৎ সামনে থেকে মোহন উধাও , পচা গোবরের গন্ধে চারদিক আমোদিত । কি , না মোহনের প্রায় সমাধি গোবর ফেলা গর্তে । আবার কলেজিয়েট স্কুলের পিছনে পুলিশ লাইনের মধ্যে সজনে ডাটা চুরি করতে গিয়ে অরিন্দম যেই ডাল ধরে টেনেছে অমনি ডাল ভেঙে প্রাচীর থেকে নিচে , চিফ মেডিকেল অফিসারের ছেলে বাড়িতে গিয়ে কি কৈফিয়ত দিয়েছিল তা জানা নেই ।
তবে পাড়ার ট্রালিচালক দিপুর এ ব্যাপারে মুন্সিয়ানা ছিল সাংঘাতিক । একদিন পেতে ব্যাথা করছে আমার ক্লাবের সামনে গাছতলায় বসে আছি শুনেই নিমেষের মধ্যে দেখি দিপুর হাতে দুটো ডাব , মুখও কেটে এনেছে । সঙ্গে সাবধানবাণী -- শাঁসটা খেওনা দাদা , শুধু জলটা , ওটা আমরা খাবো। আবার হাতখরচের দরকার হলে অনেক সময় পোস্টে উঠে স্ট্রিট ল্যাম্প খুলে বিক্রি করে দিত।
ক্লাব বিল্ডিং বানানোর জন্য চরম বর্ষার মধ্যে চলতো আমাদের ইট আর রড চুরির অভিযান । তখন এলুমিনিয়ামের পোস্ট ব্যবহার করা হতো টেলিফোন লাইন টানার জন্য । ফোনের লাইনও ছিল কম। ক্লাবের সামনে দিয়ে যে লাইনটা ছিল সেটার তার টার ছিঁড়ে একসা পোস্ট গুলো দীর্ঘদিনে বেঁকেচুরে দুমড়ে গেছে ,মানে ব্যবহারযোগ্য নয় ।একদিন দলবেঁধে রাত্রে লুকিয়ে হ্যাক্সো দিয়ে কেটে ফেলা হলো সব , টুকরোও করা হলো । ঘোড়াপটির ভাঙড়িতে কথা বলে আসলাম । মালিক গৌতমবাবু বললেন -- খুব সাবধানে , পুলিশে ছুঁলে আঠারো ঘা ।অনেকেই ভয় পেয়ে গেল । অগত্যা নির্ভীক দিপুর ট্রলিতে বস্তা বোঝাই করে আমি আর সন্দীপ। তবে মুখার্জি হোটেলে ডালপুরী আর চিকেন সাবড়ে তারপর বিক্রির টাকা জমা দেওয়া।
আমাদের বাড়ির সামনে চার্চের মাঠে দুটো বড় বড় কাঁঠাল গাছ । গোড়া থেকে ঝুম খুম করতো ফলে । যাতে চুরি না করতে পারে তারজন্য কুলের কাঁটাওয়ালা ডাল দিয়ে বেঁধে রাখতো । এক ভোরে কৃষ্ণনগর আসার সময় ভাবলাম দুটো ইচড় পেড়ে আনি । যেই ডালে হাত দিয়েছি ওমনি পিছন থেকে আর এক চোর -- বাপ ডালে হাত দিসনি , কাঁটা লেগি যাবে । বলে আমার ব্যাগ বোঝাই করে দেয় , আমি যত বলি আর লাগবে না , কে কার কথা শোনে , আমি যে তার দলের এই ভেবেই খুশি ।
ছাত্র পড়ানোকালিন মধ্যম ছেলেটি যখন পড়তে আসে , তখন সবাই সাবধান করেছিল । নামকরা উকিলের ছেলে , ওর দাদা ছিল আমার বন্ধু , মাজদিয়া কলেজে পড়তো। এসেই বলে -- দাদা তোমার ঘরের ফ্যানটা পুরোনো হয়েছে , কলেজ থেকে থেকে নতুন একটা ফ্যান এনে লাগাতে হবে দেখছি । আমি আঁতকে উঠে বলি -- পিঠের চামড়া গুটিয়ে দেবো , পুলিশে যাবো নাকি । তার দুদিন পরেই কলেজ থেকে এক বান্ডিল কোশ্চেন ব্যাংক এনে থার্ড ইয়ারের ছেলেদের কাছে বেচে দিল পাঁচ টাকা করে। আমি বকাবকি করাতে বললো -- কোনো কাজে লাগে না দাদা , লাইব্রেরীতে পুরোনো বই এর পাহাড়। আবার অমিত একদিন এসে বললো -- ভাইয়ের জন্য একটা বেল্ট কিনতে হবে । মধ্যম বলে -- তোর ভাইয়ের বয়স কতো ? আর টাকাটা নিয়ে বেরিয়ে যায় কিছুক্ষণ পরেই বেল্ট আর সিঙাড়া । বলে গরম গরম খেয়ে নাও । আমি বলি , সিঙাড়াটা ম্যানেজ করতে পারলি না । ও পকেট থেকে অমিতের দেওয়া পনেরো টাকা বার করে দেখিয়ে দেয়। সেই মধ্যমের সঙ্গে দেখা হলো কিছুদিন আগে । শিশুকন্যার হাত ধরে চলেছে । বলি , মধ্যম হবে নাকি কিছু ? বলে , দাদা পুরোনো কথা মনে হলে লজ্জা পাই ।
নদীতে মাছ ধরার ব্যাপারে কোনো নিষেধাজ্ঞা ছিলনা কিন্তু মৎসজীবী সমবায় সমিতি মাছ চাষ করতে শুরু করলে মাছধরা বন্ধ হয়ে গেল। তখন সেকেন্ড ইয়ারে পড়ি একদিন সুবলদার কাছ থেকে পড়ে এসে দেখি দামু বসে আছে । সুতো বড়শি কিনতে এসেছে । সোসাইটি মাছ ছেড়েছে ফেললেই খাচ্ছে , কিন্তু ছিপ ফেলা যাবে না পাহারা দিচ্ছে সবসময় । আর কে কলেজ যায় ছুটলাম বাড়ি ।একটা সুতোর মাথায় দু তিনটে বড়শি বেঁধে নাটবল্টুর ভার আটকে ছুড়ে ফেলা আর মাছ খেলেই টেনে তোলা । আমি অবশ্য ছিপেই ধরতাম। একটু পর পর টহলদারি মোটরবোট আসতো তখন সব গুটিয়ে ফেলতাম । এইভাবে লুকোচুরি খেলা চলতো । কিন্তু হঠাৎ ডাঙা পথে পাহারাদার নিয়োগ করালে ধরা পড়ে গেলাম । বাচ্চাদের ছিপ ভেঙে দেওয়ায় তার সঙ্গে হাতাহাতিও হয়েছে , কিন্তু রাতের খ্যাপলা অভিযানে আমি ছিলাম না কোনদিন।

চুরির উপর বাটপারি বলে একটা কথা আছে । জোসেফের ছেলে রবিন আমাদের সমবয়সী । হটাৎ স্ত্রী মারা যাওয়ায় জোসেফ বিয়ে করলো , ছেলে সেটা মেনে নেয়নি । জোসেফকে সবাই কদমা নামে ডাকতো অতএব নতুন বউ কদমি । তাদের ছলাকলা গ্রামে বেশ প্রচার পেয়েছিল এমন কি গানও বাঁধা হয়েছিল। মাঝে মধ্যেই পেছনে লাগা খিস্তিটিস্তি চলছিল। রাতে চুরি করা হলো কদমার গাছের ক এক কাঁদি কাঁচকলা । কাটা তো হলো কিন্তু কি করা অতএব সবজি বিক্রেতা পচা শেখের বাড়ি । নামমাত্র টাকায় বিক্রি । টাকা পাওয়া গেল না কারন বিক্রি করে টাকা দেবে । দিন যায় পচাও ভুলে যায় , জোরও করা যায় না জানাজানির ভয়ে । অতএব ঋণ হয়ে গেল তামাদি । তাহলে বাটপার হল পচা শেখ।
এরই সঙ্গে আছে লাইব্রেরি আর বইমেলা থেকে বই চুরির গল্প , যা আগেও আলোচনা করেছি কোথাও ।
শেষ করবো যেটা দিয়ে সেটা চুরি কিন্তু চুরি নয় , বামাল আছে আবার নেইও । চোরই বলতে পারবে । তা এই চোরটি আমার ঘনিষ্ট বন্ধু। তার প্রেমের ব্যাপারটি জানাজানি হয়ে যাওয়ায় নায়িকাটিকে আগলে রেখেছে তার বাপ ভাই। আর স্বাধীনতা ভোগ করা বন্ধুটির ক্ষ্যাপা ষাঁড়ের মতো অবস্থা। অবশেষে উপায় একটি হলো । মেয়েটি পড়তে বসে রান্নাঘরে , নায়কটি দেওয়ালের ফাঁক দিয়ে পাটকাঠির খোঁচা দেবে নায়িকার গায়ে । নায়িকা চলে যাবে বাথরুম তার উপরে ছাদ নেই , খোলা আকাশ , আর নায়ক হয়ে ওঠে অরণ্যদেব । নয় ফুট প্রাচীর কোনো ব্যাপার । কিন্তু তিন চার মিনিট প্রেমিক প্রেমিকাদের কাছে লহমা মাত্র । কি আর করা । এমনই এক দিন পাটকাঠির খোঁচাখুঁচি শেষ , অরণ্যদেব উঠেছেন দেওয়াল বেয়ে আর বাথরুম গহ্বরে দিয়েছে ঝাঁপ । নায়িকা ছিলেন সেদিন সাহসিনী , জড়িয়ে ধরে নায়ককে । নায়ক জড়িয়ে ধরতে গিয়ে দেখে চ্যালা কাঠ , মুখে বিড়ির গন্ধ । ফিসফিস করে বলে -- খানকির ছেলে পেয়েছি তোকে এবার । নায়কের শ্বাসরোধ হয়ে আসে । অবশেষে উপায় না পেয়ে সেই অমোঘ অস্ত্র প্রয়োগ আর তার ভাবি শশুরের বি#তুঙ্গে । এই সুযোগে নায়ক পগারপার । পরের অংশটুকু আর জানা নেই ।
( শিশুকালের চৌর্য বৃত্তান্ত পড়িয়া যাহারা অধমকে পাপসলিলে নিক্ষেপ করিতে ইচ্ছুক এটি তাহাদের জন্য নহে )
___________________________

 

 

দেবব্রত তরফদার। কথাশিল্পী। জীবনের নানা টুকরো কাহিনি তার কলমের যাদুতে ব্যাপক পাঠকধন্য।

আপনার মতামত দিন:


কলাম এর জনপ্রিয়