Ameen Qudir

Published:
2018-10-08 22:16:38 BdST

সর্বস্তরের চিকিৎসকদের মহাসম্মিলনতৃণমূল চিকিৎসকদের আবাসন সঙ্কট : বহুতল ফ্ল্যাট করার কথা জানালেন প্রধানমন্ত্রী


 

ছবি: পিআইডি

 

ডা. সুশান্ত সাহা
_______________________

রোববার বাংলাদেশের সর্বস্তরের চিকিৎসকদের মহাসম্মিলন হল গনভবনে। এসময় চিকিৎসক ও রোগীদের নানা দাবি নিয়ে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন - বিএমএ আয়োজন করে বিশাল চিকিৎসক সম্মিলন। দেশের নানা প্রান্ত থেকে দলে দলে চিকিৎসক বিএমএর আমন্ত্রনে এতে অংশ নেন। উৎসবমুখর আনন্দময় ছিল আয়োজন। সুশৃঙ্খল পরিবেশে অনন্য ব্যবস্থাপনায় সম্মিলন হয়।

উপজেলায় চিকিৎসকদের আবাসন সমস্যার বিষয়টি স্বীকার করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, উপজেলায় থাকার অসুবিধা আছে চিকিৎসকদের। ইতিমধ্যে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি প্রতিটি উপজেলায় বহুতল ফ্ল্যাট তৈরি করে দেব। যারাই যাবেন তারা থাকতে পারবেন সেখানে।

তিনি বলেন, উপজেলা হাসপাতালের শয্যা সংখ্যা ৫০ করে দিয়েছি। জেলার জনসংখ্যার ভিত্তিতে জেলা হাসপাতালের শয্যা সংখ্যা একশ থেকে বৃদ্ধি করে কোথাও পাঁচশ বা কোথাও তিনশ করে দিয়েছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, শুধু রাজধানী নয়, সারা দেশের মানুষের স্বাস্থ্য সেবাটা নিশ্চিত করতে হবে।


ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে উন্নতমানে নেওয়ার পরিকল্পনার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “সেখানে শত বছরের পুরনো বিল্ডিং, কেউ কেউ এটাকে হেরিটেজ বলেন। কিন্তু হেরিটেজ মাথায় ভেঙে পড়লে কি হবে সেটা আর কেউ ভাবে না।

তিনি বলেন, আমি নতুন প্ল্যান তৈরি করেছি। অত্যন্ত আধুনিক মেডিকেল কলেজ এবং হাসপাতাল আমরা নির্মাণ করে দেব। ইতোমধ্যে আমরা শয্যা সংখ্যা বৃদ্ধি করেছি। নতুন হাসপাতাল হলে এই শয্যা সংখ্যা আরো বৃদ্ধি করা হবে।
চিকিৎসক ও নার্সসহ সংশ্লিষ্টদের উন্নত প্রশিক্ষণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, প্রশিক্ষণটা একান্তভাবে প্রয়োজন। ভালোভাবে ট্রেনিং দিয়ে উপযুক্ত করে গড়ে তুলতে চাই।

 

ছবি: পিআইডি

 

অনুষ্ঠানে বিএমএর পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে ক্রেস্ট উপহার দেওয়া হয়। প্রায় আট বছর পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনে চিকিৎসকদের এ মহাসম্মিলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে রাজধানীসহ সারাদেশের বিএমএর সদস্যরা যোগদান করেন।

 

তিনি বলেন যারা বিত্তশালী-সম্পদশালী, তারা একটু হাঁচি-কাশি হলেও বিদেশে যেতে পারে চিকিৎসার জন্য। তারা যাক, তাতে আমার আপত্তি নেই। কিন্তু দেশের মানুষ যারা মধ্যবিত্ত-নিম্নবিত্ত, যাদের বিদেশ যাওয়ার মতো সঙ্গতি নেই, তাদের চিকিৎসা সেবাটা নিশ্চিত করাটা সরকার হিসেবে আমাদের দায়িত্ব-কর্তব্য। মানুষ হিসেবে আমাদের দায়িত্ব বলে মনে করি।

তিনি উপজেলায় চিকিৎসক না পাওয়ার বিষয়টি তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী । তিনি বলেন,
এখানে একটা দুঃখের কথা বলতে চাই। যেখানে ৫০ বেডের আমাদের একটা হাসপাতালে কমপক্ষে ১০ জন ডাক্তার থাকার কথা, কোথাও কোথাও একজন, কোথাও কোথাও খুব বেশি হলে চারজন। সেখানে কিন্তু ডাক্তার থাকে না। মানুষ তাহলে সেবা পাবে কিভাবে?

প্রধানমন্ত্রী বলেন, পদ আমরা সৃষ্টি করে দিয়েছি। কিন্তু সেখানে আমরা ডাক্তার পাই না। নিয়োগও আমরা দিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু কেন এই অবহেলা মানুষের প্রতি। এটা নিশ্চিয়ই জনগণ আকাঙ্ক্ষা করে না। সেটা আমি আপনাদের ভেবে দেখার জন্য অনুরোধ করব।

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা ১০ বছর পার করছি। এর আগে ছিলাম ৫ বছর। বাংলাদেশের মানুষের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছে দিতে আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি। ক্ষমতা আমরা হাতে নিয়েছি এই চিন্তা থেকে যে, জনগণের সেবা করা আমার কর্তব্য, আমার দায়িত্ব। নিজেরা কি পেলাম, না পেলাম সে চিন্তা করি না। চিন্তা একটাই মানুষকে কতটুকু দিতে পারলাম।

৩৯তম বিশেষ বিসিএস পরীক্ষার ফলাফলের কথা উল্লেখ করেতিনি বলেন, ফলাফলে দেখলাম মেয়েরা ভালো করেছে। ছেলেদের আরো বেশি পড়াশোনার দিকে নজর দেওয়া দরকার, যাতে সমান সমান হতে পারে।

তিনি বলেন, লক্ষ্য আছে প্রতি বিভাগে একটি করে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় করে দেব। আবার যদি ক্ষমতায় আসতে পারি নিশ্চয়ই আমরা তা করব।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকারি ৪২টি মেডিকেল কলেজ স্থাপন করা হয়েছে এবং বেসরকারি ৬৯টি মেডিকেল কলেজ বাংলাদেশে আছে।

সরকারি ও বেসরকারি মিলে ২৮টি ডেন্টাল কলেজ স্থাপন করা হয়েছে। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ট্রমাটোলজি

অ্যান্ড রিহ্যাবিলেশন (নিটোর) এর শয্যা সংখ্যা ৫০০ থেকে উন্নীত করে এক হাজার করা হয়েছে।

 

বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক এবং বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েনের মহাসচিব মো. ইহতেশামুল হক চৌধুরী বক্তব্য রাখেন।

_____________________________

ডা. সুশান্ত সাহা । ঢাকা।

আপনার মতামত দিন:


কলাম এর জনপ্রিয়