Ameen Qudir
Published:2018-10-07 23:52:24 BdST
কিশোর গ্যাং কালচারের শেকড় কোথায়? কেন তারা উদ্ধত , উগ্র, বেপরোয়া !
অধ্যাপক ডা. মোহিত কামাল
______________________________
আমরা প্রত্যক্ষ করছি ঘরে-ঘরে, পাড়ায়-মহল্লায়, শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে একশ্রেণির তরুণ ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে রেখেছে। অভিভাবকদের অভিযোগ, বদলে গেছে তাদের সন্তান। কেবল মেজাজে, কথাবার্তায় ও আচরণে বদলাচ্ছে না, বদলে যাচ্ছে চেহারায়ও। স্বাস্থ্যহানি তো ঘটছেই, একই সঙ্গে বিপর্যয় ঘটছে পড়াশোনায়ও।
এসব সন্তানেরা ভুল পথে পা বাড়িয়েছে জ্ঞাতসারে বা অজ্ঞাতসারে। জড়িয়ে গেছে অপরাধপ্রবণতায়। ফলে নিজেদের জীবনের লক্ষ্য থেকে চ্যুত হয়ে গেছে তারা। তাদের প্রেষণা দখল করে ফেলেছে মাদক, মাদকের নেশা, ইন্টারনেটের অশুভ জগত্—পর্নসাইট, অনলাইন গেমস ইত্যাদি। ঘণ্টার পর ঘণ্টা অনিয়ন্ত্রিতভাবে তারা শেষ করে দিচ্ছে জীবনের মূল্যবান সময়টুকু। অপরাধপ্রবণ তরুণদের বিশ্লেষণ করে সাম্প্রতিক সময়ের গবেষণায় যে কারণগুলো প্রকাশ করা হয়েছে তার কয়েকটি বিষয় এখানে তুলে ধরা হলো:
প্রথম হচ্ছে অসত্সঙ্গ ও সঙ্গীদের চাপ। অশুভ পরিস্থিতিকে চিনতে পেরেও ‘না’ বলতে না-পারার কারণে তরুণরা এপথে ঝুঁকিতে আছে সবচেয়ে বেশি।
কখন তারা ‘না’ বলতে পারে না?
যখন দক্ষতার ঘাটতি থাকে, জীবনের নৈরাশ্য হানা দেয়, তখন একটি উঠতি বয়সী তরুণের আত্মবিশ্বাসের ভিত দুর্বল হয়ে যায়। দুর্বল আত্মবিশ্বাসী ও হীন আত্মপ্রত্যয়ীরা সহজেই অশুভ ফাঁদে আটকে যায় এবং দিনের পর দিন ঘণ্টার পর ঘণ্টা এই চক্রে সেঁটে থাকে। তাদের কাজ-কর্মের দেখভালের জন্য কোনো সুপারভাইজার না থাকার কারণে গড্ডলিকার প্রবাহে নামতে থাকে তারা। বাবা-মায়ের অপরাধপ্রবণতা, দ্বন্দ্ব-সংঘাত, মাদকাসক্তি, মানসিক অসুস্থতা, বেকারত্ব, অসচ্ছল আর্থিক ও পারিবারিক পরিবেশ সন্তানের আত্মবিশ্বাসে সিঁড়িগুলো ভেঙে দিতে পারে। এ ধরনের সন্তানেরা পড়াশোনায় পিছিয়ে যায়, স্কুল পালায়, অদক্ষতা নিয়ে বড় হয়, নিজেরাও মাদকাসক্তির সাথে জড়িয়ে যায়।
‘অ্যাগ্রেশন’ শব্দের আভিধানিক অর্থ হচ্ছে বিনা উসকানিতে বৈরী আচরণ, হামলা বা আগ্রাসন। পারস্পরিক সম্পর্কের দ্বন্দ্ব, টানাপোড়েন, পরিবেশগত চাপ কিংবা দেহগত ও স্নুায়বিক সমস্যার কারণেও নিজের মধ্যে জেগে উঠতে পারে প্রবল তাড়না বা ইমপালস। আচমকা জেগে ওঠা তাড়না ও নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতার মধ্যে রয়েছে সূক্ষ্ম ব্যালান্স। কিন্তু হঠাত্ সৃষ্ট ইমপালসটি শক্তিশালী হলে ভেঙে পড়ে নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা। অন্তর্গত মানসিক দুর্বলতা থাকলে সহজেই মানুষ হারিয়ে পেলে নিজস্ব নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা, তারা হয়ে উঠতে পারে হিংস্র-পাষণ্ড। তারা কাউকে ক্ষমা করতে পারে না, বর্বরতা-অসভ্যতা দেখাতে কঠিন হূদয়ের অধিকারী এ সকল কিশোর-তরুণের বুক কাঁপে না।
মানুষের মনে হিংস্র চিন্তা বা কল্পনা থাকতে পারে। কিন্তু নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা না হারালে সহিংস আচরণ ঘটাবে না সে। পারিবারিক, সামাজিক, বিদ্যালয়ের পরিবেশের সঙ্গে মিথষ্ক্রিয়ার মধ্য দিয়ে গড়ে ওঠে স্বাভাবিক নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা। সহজে তারা শাসন করতে পারে নিজের মধ্যে জেগে ওঠা ইমপালস। এ তাড়না যত প্রবলই হোক না কেন, তারা হারায় না নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা। বাবা-মাকে মনে রাখতে হবে, অযৌক্তিক, রক্ষণশীলতা, প্রবল আধিপত্য, সন্তানের সব কাজে অনুমতি দেওয়া, অথবা সন্তানের খোঁজ-খবর না রাখা, বাবা-মায়ের সঙ্গে সন্তানের দূরত্ব কিংবা বাবা-মায়ের সম্পর্কের তিক্ততা, অবিশ্বাস, অশান্তি সন্তানকে মনের দিক থেকে দুর্বল করে দিতে পারে। এ ধরনের সন্তান মাদক গ্রহণের ঝুঁকিতে পড়ে যায়। অশুভকে ‘না’ বলার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে, সহজে প্রভাবিত হয়। এরাই এলাকার দলবদ্ধ ‘গ্যাং পরিবারে’ আশ্রয় গ্রহণ করে। এই দলে থেকে তারা অর্থ পায়, মমতা পায়, নিরাপত্তা পায়। তখন দলনেতার যে কোনো নির্দেশ তারা পালন করতে বাধ্য হয় কিংবা উত্সাহের সাথে পালন করে। ভালো পরিবারের বাচ্চারাও ‘কমিউনিকেশন গ্যাপ’ বা পারিবারিক যোগাযোগের ঘাটতির কারণে এ ধরনের অশুভ দলের সাথে জড়িয়ে যেতে পারে। অশুভকে চিনতে পারলেও অনেকে ‘না’ বলতে পারে না। ফেঁসে যেতে পারে অপরাধ জগতে। কিছু কিছু ভিডিও গেমস আছে যাতে দেখানো হয় ‘গ্যাং মেম্বার’ বা ‘গ্যাং লিডার’ অপরাধ করেও প্রশংসিত হচ্ছে, নায়কের মতো মর্যাদা পাচ্ছে, কোমরে পিস্তল গুঁজে চলাফেরা করে অন্যের ওপর আধিপত্য বিস্তার করছে, অন্যের সমীহ পাচ্ছে। ধীরে ধীরে তারা ওই অলীক আনন্দময় জীবনের দাসে পরিণত হয়।
সম্পর্কের মধ্যে বেশিমাত্রায় অসততা দেখা যাচ্ছে ইদানীংকালে। একই তরুণ গোপনে অনেক তরুণীর সঙ্গে চালিয়ে যাচ্ছে সম্পর্ক। অনেক তরুণীরও রয়েছে একাধিক বয়ফ্রেন্ড। এই অসততা সহিংসতার ইন্ধন জোগায়, মারপিট ও খুনাখুনির পথে টেনে নেয় তরুণ প্রজন্মকে। নিজের অসততা চোখে দেখে না মানুষ, কিন্তু অন্যের অসততা সইতে পারে না। নিজেকে সত্ হতে হবে প্রথম, স্বচ্ছ হতে হবে সম্পর্কের ব্যাপারে। স্বচ্ছতাই কমাতে সক্ষম তরুণ প্রজন্মের অস্থিরতা।
কিশোররাই বেশি জড়িয়ে যাচ্ছে সহিংস গ্রুপ কালচারে। এর জন্য বয়ঃসন্ধিক্ষণের বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ। মস্তিষ্কে কি ঘটে এ সময়ে? আমাদের জানতে হবে ব্রেনে রয়েছে হাইপোথ্যালামাস নামক গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ। বয়ঃসন্ধিক্ষণে এটি সক্রিয় হয়ে ওঠে। অনেকটা ঘুমন্ত বাঘের গা ঝাড়া দিয়ে উঠে দাঁড়ানোর মতো। ঢেউ ওঠে দেহে, মনে। ঢেউ ওঠার কারণে দেহের ভেতরে ঘটে বিপ্লব। হাইপোথ্যালামাস সক্রিয় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দেহের মাস্টার গ্ল্যান্ড পিটুইটারি গ্রন্থিতে আলোড়ন ওঠে। শুরু হয়ে যায় জোয়ার, হরমোনের নিঃসরণ। হরমোন দেহের জননেন্দ্রিয়, পেশি ও হাড়ের কোষে কোষে অভাবনীয় পরিবর্তন ঘটাতে শুরু করে, বাড়তে থাকে দেহ। ঝলসে ওঠে কিশোরীর মায়াবী লাবণ্য, সুঠাম হতে থাকে কিশোরের পেশি। পরিবর্তন ঘটে রোমে, স্বরে, আবেগে, চিন্তায়, আচরণে। দ্রুত, বাড়ন্ত পরিবর্তনশীল সময় হচ্ছে কৈশোরের মূল ফ্রেম। এই ফ্রেমটি ভবিষ্যত্ জীবনের ভিত গড়ে তোলে, যৌবনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করে, কৌশল আয়ত্ত করতে উদ্বুদ্ধ করে টিনএজারদের। কিন্তু অনেক গবেষক যৌন জীবনের ম্যাচিউরিটিকে Puberty বলে থাকেন। যে যেভাবেই দেখুক না কেন, শৈশব বা যৌবনের মধ্যবর্তী দ্রুত পরিবর্তনশীল বাড়ন্ত সময়টিকে সবাই কৈশোরকাল হিসেবে গ্রহণ করেছেন। ১৩-১৯ বছর সময়কে টিনএজ বলা হলেও কোনো কোনো গবেষক ১২-১৯ বছরকে কৈশোরকাল বলেছেন। ১২-১৪ বছর হচ্ছে প্রাথমিক কৈশোর, ১৫-১৯ হচ্ছে শেষ কৈশোর। এলিজাবেথ হারলার্কের মতে, বারো থেকে একুশ বছর হচ্ছে কৈশোরকাল। এখানে আরো জানা প্রয়োজন ব্রেনের মাস্টার গ্ল্যান্ড হচ্ছে পিটুইটারি গ্রন্থি। এটি অন্যান্য অনেক অনালি গ্রন্থির হরমোন নিঃসরণ নিয়ন্ত্রণ করে। গ্রন্থিরস বা হরমোন সরাসরি রক্তে মিশে যায়। হরমোন হচ্ছে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন জৈব রাসায়নিক পদার্থ। হরমোন নিঃসরণ মাত্রা কমবেশি হলে বিকাশ বিঘ্নিত হয়। হরমোন নিঃসরণ শুরু হওয়ার কারণে বয়ঃসন্ধিক্ষণে আবেগের তীব্রতর প্রকাশ ঘটতে শুরু করে। আবেগের বিকাশের সঙ্গে রয়েছে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়—চাহিদা পূরণ এবং তৃপ্তি অর্জন, চাহিদার অপূর্ণতা, অপূর্ণতা থেকে অতৃপ্তি, নিজের নিরাপত্তার অভাববোধ। গ্যাং কালচারের কিশোর-কিশোরীদের বুঝতে হলে উপরে আলোচিত এসব তথ্য অনুধাবন করা গুরুত্বপূর্ণ। কারণ বয়সের তীব্র আবেগের চাপ, যৌনতার চাপ, তৃপ্তি-অতৃপ্তি, নিরাপত্তা-অনিরাপত্তাবোধ টিনএজারদের দিশেহারা করে তুলতে পারে, ভুল পথে চালিত করতে পারে। এ সময় থেকে ভালোবাসা, ঘৃণা, ঈর্ষা, ভয়, রাগ, টেনশন এসব আবেগ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে আত্মপ্রকাশ করে। কৈশোরের শুরু থেকে ভালোবাসার প্রকাশ যেমন দাবানলের মতো জ্বলে উঠতে পারে, রাগের প্রকাশেও চলে আসতে পারে তেমনি উগ্রতা।
শৈশবের শেষ পর্যায় পর্যন্ত যৌন চেতনা সুপ্ত থাকে। বহিঃপ্রকাশ থাকে না বললেই চলে। এ সময় যৌনতার বহিঃপ্রকাশ না থাকলেও বিকাশ চলতে থাকে তলে তলে। পূর্ণতার দিকে এগিয়ে যায় অন্তর্গত সুপ্ত চেতনা। এ কারণে এ সময়ে আবেগের চাঞ্চল্য দেখা যায় না, কোনো ধরনের অসঙ্গতির প্রকাশ পায় না। বয়ঃসন্ধিক্ষণের পর থেকেই টিনএজারদের আবেগে ঝড় ওঠে, অস্থিরতা বেড়ে যায় যৌন অনুভূতির কারণে। যদিও যৌনতার পূর্ণতা ঘটে কৈশোরের শেষ পর্যায়ের যৌনস্পৃহা, প্রেম, যৌন আগ্রহ ইত্যাদি তাড়না বিপর্যস্ত করে। ফলে অনেক টিনএজাররা বেসামাল হয়। দেহের মধ্যে হরমোনের জোয়ার ও যৌনাঙ্গের বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে যৌন-চেতনা, স্নেহ-মমতা ও ভালোবাসার আকাঙ্ক্ষা স্ফীত হয়ে ওঠে। এ সময়ে যদি তারা ইন্টারনেটে প্রফেশনাল নারী-পুরুষের যৌনতা দেখার সুযোগ পেয়ে যায় তাহলে দেহের মধ্যে অনিয়ন্ত্রিত জোয়ারের পাশাপাশি যৌনতার চাহিদাও বিপুল রঙে রঞ্জিত হতে থাকে। কিশোর-কিশোরীরা তখন একে-অপরকে ভোগের বস্তু মনে করে। নৈতিকতা বিবর্জিত এরা যেকোনো অপরাধের দিকেও চলে যেতে পারে নিজেদের অজান্তে। পচা গর্তে তাদের পা ডুবে যেতে পারে। একবার সেখানে আটকে গেলে তাদের পক্ষে উঠে আসা সম্ভব হয় না। আমরা দেখছি এভাবে সমাজে ঘটছে ভয়ঙ্কর সব কাহিনি। পাড়ায়, মহল্লায়, শহরে, গ্রামে-গঞ্জে দোর্দণ্ডপ্রতাপশালী, কিশোর গ্রুপ শত অপরাধ করে যাচ্ছে—ইভটিজিং, ধর্ষণ, হত্যার মতো ঘটনা আমরা দেখতে পাচ্ছি প্রিন্টিং এবং ইলেকট্রিক মিডিয়াতে।
কিন্তু কী করব আমরা?
ঘরে ঘরে স্নেহ-মমতার বন্ধন অটুট রাখতে হবে। সন্তানের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নত করতে হবে। যোগাযোগ বজায় রাখতে হবে সবসময়। পারিবারিক যেকোনো কাজে বা সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে সন্তানের মতামত শুনতে হবে। তার বয়সের স্তরে নেমে বুঝতে হবে তাকে। পরিবারে নৈতিকতা চর্চা করতে হবে। শিশুর সামনে বা সরাসরি শিশুর সঙ্গে কোনো নিষ্ঠুর আচরণ করা যাবে না। টেলিভিশন, মোবাইল ফোন বা কম্পিউটারে আক্রমণাত্মক বা হত্যার দৃশ্য দেখা থেকে সন্তানকে বিরত রাখুন। সন্তানের মধ্যে অবাধ্য আচরণ বা কনডাক্ট ডিস-অর্ডারের লক্ষণ দেখলে মনোরোগ বিশেষজ্ঞের মাধ্যমে চিকিত্সার ব্যবস্থা করুন। বন্ধু কারা সে সম্পর্কে বাবা-মা যেনো নির্বিকার না থাকেন। বন্ধুদের বাবা-মার সঙ্গে পরিচিত হন। তাদের বাসা চিনে রাখুন। সন্তানকে জানিয়ে দিন তোমার জীবনে ঘটা যে বিষয় বাবা-মাকে বলা যাবে না তার মধ্যে সমস্যা/বিপদ থাকে, থাকতে পারে। সন্তানের হাতে হঠাত্ দামি মোবাইল ফোন দেখলে, তাকে আপনার দেওয়া হাতখরচের বাইরে বেশি বেশি টাকা খরচ করতে দেখলে সতর্ক হন। এগুলোর উত্স জানুন। সন্তানের কোনো অপরাধের পক্ষে সাফাই গাইবেন না।
নিজেদের পাড়াকে মাদকমুক্ত রাখতে রাজনৈতিক মতামতের ঊর্ধ্বে উঠে সবাই সংঘবদ্ধ হন। মনে রাখতে হবে এই পাড়া সবার সন্তানের বিচরণক্ষেত্র। এটাকে নিরাপদ রাখা সবার দায়িত্ব।
_____________________________________
লেখক অধ্যাপক ডা. মোহিত কামাল। বাংলাদেশের কথাসাহিত্যের অপ্রতিদ্বন্ধী জনপ্রিয় লেখক। মনোবিদ, শিক্ষাবিদ, সম্পাদক শব্দঘর। অধ্যাপক , জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট , ঢাকা।
আপনার মতামত দিন: