Ameen Qudir

Published:
2018-10-03 20:36:16 BdST

পাকস্থলির ক্যান্সার যাতে না হয়, সেজন্য যা করনীয়


 



ডা:নাহিদ ফারজানা
______________________________

পাকস্থলির ক্যান্সার যেন না হয়, তার জন্য আমাদের সচেতন থাকতে হবে।

১. লবণ পরিমাণ মতো খেতে হবে।অনেকে মনে করেন, তরকারিতে ইচ্ছেমত লবণ দেওয়া যায়, এতে ক্ষতি হয়না।ধারণাটা ঠিক না।

২. এইসব খাবার পারতপক্ষে খাবেন না


ক. গ্রিল্ড মাছ, মাংস, কাবাব অর্থাৎ ঝলসানো
খাবার,
খ. গরু/খাসীর মাংস, বড় চিংড়ী
গ. ফাষ্ট ফুড, জাংক ফুড, কোক-পেপসি জাতীয় তরল, বাইরের ভাজা পোড়া, রেখে দেওয়া তেলে রান্না, চিপস, চানাচুর
ঘ. প্যাকেট জ্যুস, ক্যানে থাকা জ্যুস, ক্যানে থাকা খাবার, প্রিজারভেটিভ দেওয়া খাবার।
৩. শাক-সব্জি, ফল, ঘরের খাবার পরিমাণ মতো খাবেন।
৪. বিশুদ্ধ পানি খাবেন।
৫. ধূমপান কোন ভাবেই করবেন না।
৬. মদ্যপান করবেন না।
৭. সঠিক ডায়েট, এক্সারসাইজ করে মেদহীন থাকবেন।
৮. এই ক্যান্সার প্রতিরোধ করার জন্য অ্যান্টি অক্সিডেন্ট দরকার যা পাবেন ভিটামিন এ, সি, ই তে, তারমানে আম, গাজর, মিষ্টি কুমড়া, ছোট মাছ, দুধ, দুধের তৈরি খাবার, লেবু, আমলকি, আমড়া, কামরাঙা, পালং শাক, বাঁধাকপি, অন্যান্য রঙীন/সবুজ শাক সব্জি ইত্যাদি।

পরীক্ষা:কোন রকম লক্ষণ থাকলে/গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থাকলে/৪০ বছর বয়সের পর বছরে ১ বার অথবা ২ বছরে ১ বার

এন্ডোস্কোপি অফ আপার জি আই টি
(Endoscopy of upper GIT)

কোন সমস্যা না থাকলেও বছরে ১ বার

USG OF WHOLE ABDOMEN

CBC(blood test)

CA 74(blood test for tumour marker)

Stool for occult blood test (পায়খানা কালো হলে)

Chest X ray P/A VIEW(কাশির সাথে রক্ত গেলে, কোন কারণ না থাকলেও ২ বছরে ১ বার)

ল্যাবগুলোকে বিশ্বাস করা বেশ কঠিন, পরীক্ষা সব সময় ভাল জায়গা থেকে করবেন।
পাকস্হলির ক্যান্সারের কিছু লক্ষণ:

১. মনে হতে পারে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা, বুক-পেট জ্বলা, অল্প খেলেই মনে হয় অনেক খেয়ে ফেললাম।
২. যার আগে কোনো এসিডিটি ছিলনা, ৪০ এর কাছাকাছি বয়সে এসে এসিডিটির যন্ত্রণা শুরু হওয়া
৩. কালো পায়খানা হওয়া মাঝে মাঝে,
৪. অ্যাডভান্স অবস্হায় , খেলে বমি হয়ে যাওয়া,
৫. রক্তশূন্যতা, অবসাদ, চরম ক্লান্তি, দুর্বলতা,
৬. আরও অ্যাডভান্স হলে...
ক. পেটে চাকা অনুভব করা, বামের দিকে, খ. পেটে পানি আসা
গ. কাশি, কাশির সাথে রক্ত যাওয়া,
ঘ. লিভার বেড়ে যাওয়ার কারণে পেটের ডান দিকেও চাকা অনুভব করা,
ঙ. জন্ডিস,
চ. হাড়ে-হাড্ডিতে ব্যথা হওয়া
ছ. বাম কন্ঠার হাড়ের উপর চাকা অনুভব হওয়া
জ. সবচে বড় কথা, ৬ মাসের মাঝে চোখে পড়ার মতো ওজন কমা।
পাকস্হলির ক্যান্সার অতি ভয়াবহ, বলার অপেক্ষা রাখেনা।প্রাথমিক পর্যায়ে এটি সাধারণত: ধরা পড়েনা, কারণ, লক্ষণগুলো অনেকটা সাধারণ অ্যাসিডিটির মত হয়।আজ এই রোগের কারণগুলো একটু জানাবো।

১. প্রকৃত কারণ এখনও অজ্ঞাত।
২. সমুদ্র উপকূলবাসী সাবধান।লবণাক্ততার জন্য এইসব জায়গায় হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

৩. অতিরিক্ত লবণযুক্ত খাবার, টিনজাত খাবার, কৃত্তিম রং মেশানো খাবার খাওয়া
৪. গ্রীল্ড/আগুনে ঝলসানো মাছ, মাংস, কাবাব ইত্যাদি বেশি খাওয়া
৫. শরীরে পুষ্টি, ভিটামিন A, E, C র অভাব থাকা
৬. ধূমপান, ধূমপান, ধূমপান
৭. মদ্যপান
৮. জেনেটিক
৯. দূষিত পানি পান, এই পানিতে একটি বিশেষ জীবাণু থাকে, নাম.. হেলিকোব্যাকটার পাইলোরি
১০. শরীরে মেদ জমা
১১. ফাষ্টফুড, জাংক ফুড, কোল্ড ড্রিংক বেশি খাওয়া
১২. গ্যাষ্ট্রিক আলসার
১৩. আর ও কিছু ফ্যাকটর, বলা হয়, বয়সের সাথে সম্ভাবনা বাড়ে, মহিলাদের তুলনায় পুরুষদের বেশি হয়, রক্তের গ্রুপ A positive, তবে এগুলো অত ইমপর্ট্যান্ট ফ্যাক্টর না।
_______________________________

 

ডা:নাহিদ ফারজানা। সুলেখক। লোকসেবী চিকিৎসক।
২৫ তম ব্যাচ, শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ। বরিশাল ।

আপনার মতামত দিন:


কলাম এর জনপ্রিয়