Ameen Qudir

Published:
2018-08-29 16:37:50 BdST

অথ ডাক্তারচরিত: ডাক্তার বন্ধুদের কাছে মাপ চাইছি




অধ্যাপক ডা.অনির্বাণ বিশ্বাস
________________________________


( অনেক যন্ত্রনায় লেখা।ডাক্তার বন্ধুদের কাছে মাপ চাইছি।)

পুরাকালে স্বীয় কৃতিত্বে আদম বৈদ্য হয়েছিল।

দেবদূত হাঁপাতে হাঁপাতে এসে বললে, "শীঘ্র এস বৈদ্যবাবু, সর্বনাশ হচ্ছে !"

আদম খড়শয্যায় অর্ধশায়িত হয়ে মনদিয়ে শুশ্রুত পাঠ করছিল, মনোসংযোগে বিঘ্ন ঘটায় সে চটে গেল, "সর্বনাশের জন্য কিছু বাকি আছে নাকি? আমার যা কিছু ছিল ঈশ্বরের প্ররোচনায় সব মাটিতে মিশেছে।প্রহার,নিগ্রহ,বসিয়ে রাখা,এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে ছোটানো,কেস দাওয়া ,গু মাখানো...কি হয় নি আমার সাথে ! ঈশ্বর আমার কথা শুনতেই চাননি।তাই মহাপ্লাবনে স্বর্গ ডুবিলেও আমার কিছু আসে যায় না হে দেবদূত !"

দেবদূত বললে, "তোমার বাড়ির পেছনের বাঁশবাগানটি শয়তান ইজারা নিয়েছে! "

আদম সাবধানে বইটি বালিশের নিচে চালান করে বললে, "বিদ্যালাভের সময় সর্বদাই বিপত্তি ঘটে রে দেবদূত ! চল দেখে আসি।"

কয়েকশ গজ পা চালিয়ে নিকটস্থ বাঁশঝাড়ের সমীপে এসে দুইজনে দেখল, শয়তান আরও কতিপয় দূর্বৃত্ত সঙ্গে নিয়ে ফিতে দিয়ে বংশদণ্ডের আকার প্রকার মাপজোক করছে।

আদম হেঁকে বললে, "সুপ্রভাত বন্ধু ! হঠাৎ বাঁশঝাড়ে? বলি মতলবখানা কী?"

শয়তান ডাক শুনে পিছু ফিরে আদমকে দেখে মধুর হাস্যে কইল, "সুপ্রভাত আদম! ভাবলাম, অনেক তো হল, এইবার কৃষিকাজে মন দেই।"

দেবদূত ফুঁসে উঠল, "বাঁশ কবে কৃষিখাতের অন্তর্ভুক্ত হল?"

শয়তান স্মিত মুখে কইল, "সিঙ্গুরে কিছু জমি কিনেছি হে বার্তাবাহক শ্যালকপুত্র ! শুনেছি সেখানে নানা কনস্ট্রাকশন হবে। চারদিকে সেতু বাঁধ দালান রাজপথ নির্মাণ হবে। তখন বাঁশের চাহিদা বিপুল বাড়বে। তাই আগেভাগে ব্যবসার পথ সুগম করছি।"

আদম দেবদূতকে বললে, " শুনলে তো ! চিন্তার কিছু নেই।"

শয়তান পকেট থেকে একটি চশমা আর একটি ভার্নিয়ার ক্যালিপার্স বের করে কইল, "তিষ্ঠ আদম। এসেই যখন পড়েছ, তখন তোমার গুহ্যদ্বারের ব্যাসখানা মেপে নেই।"

আদম অবাক ! "আমার গুহ্যদ্বারের ব্যাস মেপে তুমি কী করবে?"

শয়তান সহাস্যে বললে, "কৃষিকাজে প্রচুর তথ্য লাগে আদম। কয় মিলিমিটার বৃষ্টিপাত ঘটবে, কয় কিলোমিটার বেগে হাওয়া চলবে, কত ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা থাকবে, আদমের গুহ্যদ্বারের ব্যাস কত ... এ সবই গুরুত্বপূর্ণ কৃষিতথ্য।"

আদম স্কন্ধ ঝাঁকিয়ে বলল, "বেশ, তোমার উপকারে লাগলে মাপো ।" এই বলেয় সে আপেলপত্রের কৌপীনখানি নামিয়ে সম্যক আয়োজন করে দাঁড়াল।

শয়তান নিপুণ হস্তে আদমের গুহ্যদ্বারে ক্যালিপার্স প্রবিষ্ট করিয়ে মাপজোক নিয়ে খাগের কলম দিয়ে প্যাপিরাসের চোথায় সকলই টুকে রাখল।

আদম বললে "তোমার কৃষিকাজে আমার কোন ক্ষতি হবে না তো হে শয়তান?"

শয়তান মধুরঞ্জিত কণ্ঠে কইল, "তোমার ক্ষতি হয়, এমন কোন কাজ শয়তান করবে না হে আদম। লিচ্চিন্তে থাক।"

ফিরবার পথে দেবদূত বলল, "লক্ষণ ভাল ঠেকছে না হে আদম। তুমি সাবধানে থেক।"

আদম চটে গেল "তুমি একটি নৈরাশ্যবাদী মূর্খ হে দেবদূত! শয়তান নিজেই বলছে সে আমার কোন ক্ষতি করবে না, আর তুমি তখন থেকে বকবক করেই চলেছ! তোমার জ্বালায় শান্তিতে একটি বেলা নিরিবিলি শুশ্রুত পাঠ করিতে পারি নে। যাও তুমি তোমার আপন কাজে!"

পরদিন দেবদূত সক্কাল সক্কাল আবার আদমের দুয়ারে টোকা দিল। আদম দুই মিনিট পর হাঁপাতে হাঁপাতে বেরিয়ে বলল, "কী বারতা কহ।"

দেবদূত কইল, "সর্বনাশ ঘটতে চলেছে আদম! শিগগীর এস !শয়তান তোমার বাঁশঝাড়ের বাঁশ কাটতে শুরু করেছে!"

আদম বিরক্ত হয়ে বললে, "চল দেখে আসি।"

দুইজনে বাঁশঝাড়ের সমীপে এসে দেখল, শয়তান ও তার সাঙ্গোপাঙ্গোবৃন্দ মহোৎসাহে বংশ কর্তন করছে। চারদিকে স্তুপাকৃতি বংশকাণ্ড।

আদম হাঁকল "সুপ্রভাত শয়তান! তোমার কৃষিকাজ দেখি ব্যাপক জোরেসোরে এগোচ্ছে ! ব্যাপার কী?"

শয়তান মুখ তুলে দংষ্ট্রাকরাল এক হাসি উপহার দিয়ে বললে, "তা এগিয়েছে বটে ! সামনে বাণিজ্যের মৌসুম। সময় থাকতে বাঁশ কেটে গুছিয়ে রাখছি।"
দেবদূত ফুঁসে উঠল, " কবে থেকে চোখা বাঁশ ফরমায়েশ হচ্ছে ?"

শয়তান একটি দা দিয়ে বাঁশ ছেঁটে অগ্রভাগ সূক্ষ্ম করছিল, মিষ্টি হেসে কইল, "পেলব বাঁশ নির্মাণের কাজে কমই আসে ওহে শ্যালকপুত্র! আগেভাগে এক মাথা চোখা করে রেডি করে রাখছি।আর,ওহে আদম, এসেই যখন পড়েছ, তখন তোমার গুহ্যদ্বারের ব্যাসখানি পুনরায় মেপে নিতে দেবে নাকি?"

আদম বিস্মিত হল, "গতকল্যই না এক দফা মাপলে?"

শয়তান সুমিষ্ট হেসে বলল, "কৃষিকাজে তথ্য হালনাগাদ রাখতে হয় হে আদম। তাছাড়া গতকল্য তোমার গুহ্যদ্বারের ব্যাস আর আজকে তোমার গুহ্যদ্বারের ব্যাসে যে আকাশ পাতাল ফারাক দেখা দেবে না, তা কে বলতে পারে?"

আদম বলল, "তা বেশ তো, তোমার উপকারে লাগলে মেপে নাও।" এই বলে সে কৌপীন উঁচু করে সম্যক আয়োজন করে দাঁড়াল। শয়তান নিপুণ হাতে ক্যালিপার্স প্রবিষ্ট করিয়ে মাপজোক নিল। তার পর সেই ক্যালিপার্স দ্বারা হস্তধৃত বংশদণ্ডের সূক্ষ্ম প্রান্তটির অগ্রভাগে কী যেন মাপতে লাগল।

আদম বলল, "তোমার কৃষিকাজে আমার কোন ক্ষতি হবে না তো হে শয়তান?"

শয়তান নিক্কণমধুর কণ্ঠে কইল, "তোমার অনিষ্ট হয়, এমন কোন কাজ শয়তান করবে না হে আদম। লিচ্চিন্তে থাক।"

দেবদূত ফিরবার পথে আদমকে বললে, "লক্ষণ ভাল ঠেকছে না আদম। সাবধানে থেক!"

আদম ক্ষেপে গেল, "তুমি সবকিছুতেই কেবল দুর্লক্ষণ দেখ হে দেবদূত ! শয়তান নিজে বলল সে আমার কোন অনিষ্ট করবে না, আর তুমি সেই তখন থেকে ঘ্যানাচ্ছ !"

পরদিন প্রত্যুষে আদমের কুটিরের দুয়ারে ঘা পড়ল। আদম দরজা খুলে দেখল, শয়তান দণ্ডায়মান। হাতে একটি সুতীক্ষ্ণ বংশদণ্ড। অদূরে দণ্ডায়মান দেবদূত।

আদম বললে, "কী ঘটনা শয়তান? বায়সও নিদ্রিত এখন, আর তুমি এইবেলা আমার বাড়িতে? বাঁধ ভেঙেয কোথাও মহাপ্লাবন ঘটল নাকি? নোয়ার নাওখানার নোঙর উত্তোলন করেছে নাকি কেউ?"

শয়তান মধুর হাসল, "কিছু তথ্য দরকার আদম। তুমি কি অনুগ্রহ করে তোমার কৌপীন নামিয়ে তোমার গুহ্যদ্বারটি প্রস্ফূটিত করে ঘুরে দাঁড়াবে কিয়ৎক্ষণের জন্য? আমি কিছু তথ্য নিয়েই প্রস্থান করব, বেশি সময় লাগবে না।"

আদম বলল, "তোমার এই কৃষিকাজে আমার কোন ক্ষতি হবে না তো হে শয়তান?"

শয়তান বীণাবিনিন্দিত মধুর কণ্ঠে কইল, "তোমার ব্যথা লাগে, এমন কোন কাজ শয়তান করবে না হে আদম। লিচ্চিন্তে থাক।"

আদম বলল, "তা বেশ তো, তোমার উপকারে যদি লাগে, আপত্তি কী?" এই বলে সে কৌপীন খুলে ঘুরে সম্যক আয়োজন করে দাঁড়াল।

দেবদূত নক্ষত্রবেগে উড়তে উড়তে ঈশ্বরের দরবারে গিয়ে সিংহদ্বারে ঘা মারতে মারতে আর্তনাদ করে উঠল, "জাঁহাপন, দরওয়াজা খুলুন! শয়তান আদমকে ধরে গুহ্যদ্বারে সূচালো বাঁশ ঢোকাচ্ছে , আদমের কোনো হুঁশই নেই ! "

ঈশ্বর এক পেয়ালা চা হাতে প্রসন্ন মুখে বললেন, "কী ব্যাপার দেবদূত, তুমি এত ভোরে যে?"

দেবদূত সাশ্রুনয়নে বললে, "শয়তান আদমের গুহ্যদ্বারে বাঁশ দিচ্ছে প্রভু ! অথচ আদম এটা অনুধাবনও করতে পারছে না! সে আপনা হতেই কৌপীন খুলে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে প্রত্যহ!"

ঈশ্বর সুমধুর হেসে বললেন, "আমি কী করব বল? এটা তাদের আভ্যন্তরীণ বিষয়! আদম সব জেনেই বৈদ্য হয়েছে "

_______________________________

অধ্যাপক ডা.অনির্বাণ বিশ্বাস । লোকসেবী চিকিৎসক। কলকাতা।

আপনার মতামত দিন:


কলাম এর জনপ্রিয়