Ameen Qudir

Published:
2018-08-20 16:37:43 BdST

হজস্মৃতিমহামিলনের দৃশ্য: কাফেলায় নিজেকে একজন সৌভাগ্যবান মানুষ মনে হচ্ছিল


 

লেখকের ছবি। সঙ্গে তাঁর জীবনসঙ্গী বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ মো.দেলোয়ার হোসেন।



ডা. মাকসুদা খানম অনু
______________________________

আজ পবিত্র হজ্ব।।
আরাফাত দিবস।।

আমার জীবনের এত পথ পেরিয়ে এসে আমাকে কেউ যদি জিজ্ঞেস করে তোমার কাছে পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দরতম দৃশ্য কি?আমি বলবো -সকল বর্ণের, সকল ভাষার, ছোট -বড়,গরীব -ধনী একই পোশাকে,একই ধ্বনিতে মুখরিত সবাই আমরা যখন এগিয়ে চলেছি মুযদালিফা হতে মিনার দিকে শুধুমাত্র মহান আল্লাহ্তায়ালার নিকট আত্মসমর্পণ করার জন্য ।আত্মোৎসর্গ করার জন্য -সেই দৃশ্য আমার কাছে সবচেয়ে সুন্দর দৃশ্য ।।
ভোররাতে আমরা মুযদালিফায় রাত্রিযাপন শেষে রওয়ানা করলাম মিনার উদ্দেশ্যে ।।চারদিকে অন্ধকারের মাঝে হাঁটছি তো হাঁটছি।আস্তে আস্তে একটু একটু করে অন্ধকার কেটে গিয়ে ফর্সা হচ্ছে ।ভোরের শীতল বাতাসের ঝাপটা ।মনটা শীতল হয়ে যাচ্ছে ।শরীর শীতল হয়ে যাচ্ছে ।একটু পর পর লাব্বায়েক আল্লাহ্হুম্মা লাব্বায়েক ধ্বনিতে মুখরিত চারদিক আর কাফেলার পর কাফেলা যোগ হয়ে এমন
মহামিলনের দৃশ্য ।যে কাফেলায় অংশগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে এই পৃথিবীর একজন সৌভাগ্য বান মানুষ মনে হচ্ছিল নিজেকে ।।কৃতজ্ঞতা মহান আল্লাহ্তায়ালার কাছে ।
মুযদালিফার আলাদা একটা সৌন্দর্য আছে ।আরাফতের ময়দানে অবস্থানের পর মুযদালিফায় রাত্রিযাপন কালে কাছের পাহাড়, দূর পাহাড়ের দৃশ্য আপনাকে অভিভূত করবে ।।সুবেহ সাদিক পর্যন্ত মুযদালিফায় অবস্থান করে ফজরের নামাজ আদায় করেছি পথে পথে থাকা তাঁবুতে ।আপনি কাউকে চিনেন না ।অথচ আপন ভাইয়ের মতো আপন বোনের মতো মনে হবে।
ভালবাসায় একসাথে ফজরের নামাজ আদায় ।।
পথে পথে নিঃস্বার্থভাবে আল্লাহ্ র মেহমানদের সেবা করছে মানুষেরা।ঠান্ডা পানি, খেজুর, বিস্কুট ইত্যাদি ।
গ্লুকোজের সরবরাহে আপনার হাঁটার গতি বাড়ছে। বাড়ছে আপনার মনোবল।একটু ও কষ্ট নেই ।
নেই কোনও হাঁটার কষ্ট, নেই কোনও পাথর মারার কষ্ট ।
আরাফতের ময়দানে অবস্থানের পর, পাথর মারার পর ,সর্বোপরি ফরজ তাওয়াব সম্পন্ন হওয়ার পর মনে হয় সত্যিই কি আমাকে মহান আল্লাহ্তায়ালা হজ্ব সম্পন্ন করার তৌফিক দান করেছেন?
কোটি কোটি শুকরিয়া আবার ও মহান আল্লাহ্তায়ালার দরবারে ।সকল সুস্থ মুসলিম ভাইয়ের এই কাফেলায় শরীক হওয়ার তৌফিক আল্লাহ্ দান করুন ।। সুস্থ শব্দটা একারণে বললাম হজ্ব সম্পন্ন করার জন্য শারীরিক সুস্থতা একান্ত দরকার ।আমিন ।।

আর একটা কথা না বললে নয় আমার কন্যাটি আমাদের সাথে গিয়েছিল ।সে আমাদের কে অনেক সাহায্য করেছে।আমরা হারিয়ে গিয়েছিলাম সে আমাদের পথ খুঁজে হোটেলে নিয়ে গিয়েছে ।তার বাবা অসুস্থ হয়ে গিয়েছিল আরাফতে ,মক্কায় ।সে কতদূর হেঁটে গিয়ে জুস কিনে নিয়ে এসেছে।মক্কায় ভাষাএকটা বিরাট সমস্যা। আমরা দুজনে হিন্দি বুঝলেও বলতে পারিনা।আমার কন্যাটি আমাদের সাথে না থাকলে আমাদের অনেক কষ্ট হতো।অনেক কৃতজ্ঞতা মা পাখি টা তোমার কাছে।

___________________________

ডা. মাকসুদা খানম অনু । কবি ও সুলেখক।

আপনার মতামত দিন:


কলাম এর জনপ্রিয়