Ameen Qudir

Published:
2018-05-04 03:06:23 BdST

নিষ্পাপ আহ্লাদী কন্যাটি বিকেলে বের হল; পরদিন ছিন্নভিন্ন লাশ ; এ কেমন বিপর্যয়


নিষ্পাপ কন্যাটির ছবিগুলো দেয়ার ইচ্ছে ছিল না। কিন্তু সতর্ক করতে দেয়া হল। ।চাই বাবা মা এবং বাচ্চারা ছবিগুলো দেখুক এবং ভয় পেয়ে সচেতন হোক।

 

ডা. শিরীন সাবিহা তন্বী
___________________________

আপনার আহ্লাদী আদুরে মিষ্টি মেয়েটি বিকেল বেলা ঘর থেকে বেরোলো আর পরের দিন সকালে হিংস্র পশু কতৃক ছিন্ন ভিন্ন সেই আদুরে মুখমন্ডল,নিথর একটি লাশ পেলেন!
মানবতার এ কেমন বিপর্যয়?

ছেলেকে নিয়ে পার্কে যাওয়া গত চার বছরের অভ্যেস।
ছেলের দুরন্তপানার কাছে হার মেনে দৌড় ঝাপ করতে হয়।পার্কের কোনা থেকে তাকে ডেকে আনতে হয়।
অতঃপর এমন দৃশ্য কোনার মধ্যে দেখি যে,তাদের তুলনায় সিনিয়র সিটিজেন হওয়া সত্ত্বেও লজ্জায় লাল হয়ে সরি বলে,ওদের প্রাইভেসী নষ্ট করেছি বলে মনে মনে কান ধরে ছেলেকে ভর্ৎসনা করতে করতে ফিরি।

বলছি কিশোর কিশোরীদের কথা।
জীবন পথ পরিক্রমায় আমাকে যদি প্রশ্ন করা হয়,জীবনের শ্রেষ্ঠ সময় কোনটি!
আমি আমার কিশোরী বয়সটাকেই বলব।এই বয়স শারিরীক বৃদ্ধিতে যেমন গুরুত্বপূর্ন তেমনি গুরুত্বপূর্ন মানসিক বৃদ্ধি এবং বিকাশে।

ভবিষ্যৎ ব্যক্তিত্ব,পছন্দ অপছন্দ,জীবন যাপন প্রনালী প্রায় সব ই কিশোরী বয়সেই নির্ধারিত হয়।

গত কয়েক বছরের মধ্যে যেন ঝড় জলোচ্ছাস্বের মত কিশোর বয়সের ছেলে মেয়েদের অবাধ অপার স্বাধীনতা দেবার একটা প্রতিযোগিতা চলছে।

আমি আমার ছোট বোনকে সহ ছেলে নিয়ে বেড়োলে একেবারে অবুঝের মতো বার বার বলি,এই বাচ্চা গুলো সন্ধ্যায় পড়তে বসে না?গল্প গুজব হাসাহাসি।আট দশ জন ছেলে মেয়ে একসাথে।কখন ও দুজন অপ্রীতিকর অবস্থায়।কখন ও স্কুল ড্রেস পরিহিত।
একটু যেন উদ্ধত ভাব।

অথচ এই প্রবল স্বাধীনতা তার ভোগ করছে নিজেদের আয়ে নিশ্চয় ই নয়।
পিতা মাতা কেন এদের বাঁধা দিচ্ছে না?
তথ্য প্রযুক্তির অবাধ প্রবাহ,অসৎ সমাজ,পিতামাতার অনিয়ন্ত্রিত দুর্নীতিগ্রস্থ আয় এবং তার অপব্যবহার এদের স্বেচ্ছাচারী করে তোলে।

  ছবি দেয়ার ইচ্ছে ছিল না। কিন্তু সতর্ক করতে দেয়া হল। ।চাই বাবা মা এবং বাচ্চারা ছবিগুলো দেখুক এবং ভয় পেয়ে সচেতন হোক।

 

এই ধারাবাহিকতায় চট্রগ্রামের সানসাইন স্কুলের নবম শ্রেনীর ছাত্রী তাসপিয়া জীবন দিল।

ভার্চুয়াল জীবনে আলাপ হওয়া বন্ধু বা প্রেমিকের সাথে প্রথম বার দেখা করতে যাবার পরদিন পতেঙ্গা নেভাল বীচের পাশে পাওয়া যায় তার লাশ।মৃত্যুর আগে তার শ্লীলতাহানি ও হয়েছে।
একটি ফুলের মত সুন্দর,নিষ্পাপ মেয়ে একাকিনী বের হলো।কফি শপে বন্ধুর সাথে কফি খেল।তারপর হারিয়ে গেলো!সকালে তার লাশ মিলল!

আমি জানিনা,কন্যা সন্তানের অভিভাবকগন কি ভাবছেন!নবম শ্রেনীতে পড়ুয়া তাসপিয়াকে ধর্ষন করে আবার হত্যা করেছে খুনী।জানি এই বয়সে সাহায্য করতে গেলে বাবা মাকে হিরো কম,ভিলেন বেশী ভাবে সন্তান।

কিন্তু আপনারা যখন পিতা মাতা - সন্তানের চোখে কি হচ্ছেন বড় নয়।আপনার কিশোর সন্তানের জীবন,সম্ভ্রম,ইজ্জত সব রক্ষার দায়িত্ব আপনার।
আর এই দায়িত্ব পালনে প্রয়োজনে খানিক কঠোর হোন।চাইল্ড সাইক্রিয়াটিষ্টের হেল্প নিন।

অনুরোধ,আপনার সন্তানকে তাসপিয়ার মতো অকালে ঝরে যেতে দিবেন না।
কোনমতেই না।

________________________________

ডা. শিরীন সাবিহা তন্বী । সুলেখক।

 

 

আপনার মতামত দিন:


কলাম এর জনপ্রিয়