Ameen Qudir
Published:2018-04-05 15:35:28 BdST
ধর্ষণ সুনামি ও ধর্ষণ সংস্কৃতি বন্ধে যা যা করতে হবে
ধর্ষক রুবেল : কথিত সে আদালতে পুলিশ হেফাজত থেকে পালিয়েছে
প্রফেসর ডা. তাজুল ইসলাম
_____________________________
ধর্ষণ সুনামি বন্ধ করবে কে?
বিউটি তনুদের আত্মা
আমাদের ক্ষমা করবে?
ক্ষমার অযোগ্য এ কোন সমাজ,জাতি আমরা তৈরি করেছি?
কালের,ইতিহাসের প্রতিশোধ বড় নির্মম ।
হে রাষ্ট্র , হে সমাজ তোমাকে এর দায় অবিশ্যি নিতে হবে ।
ধর্ষন প্রতিরোধ প্রসঙ্গে
ধর্ষন
প্রতিরোধে প্রয়োজন ধর্ষন সংস্কৃতিকে উসকে দেয়,প্রশ্রয় দেয় তেমন সমাজকে
ধর্ষন বিরোধী, ধর্ষন প্রতিরোধী সমাজে রূপান্তর করা
।এর জন্য গল্প,উপন্যাস, নাটক,সিনেমা,বিজ্ঞাপনে নারীকে "যৌন পন্য" হিসেবে আকর্ষণীয় ভাবে উপস্হাপন বন্ধ করতে হবে।
নারীকে " সেক্সুয়ালাইজড" করার কালচার বদলে ফেলে, তাকে" মানুষ" হিসেবে ভাবার সাংস্কৃতিক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তুলতে হবে।
অন্য দিকে সমাজে যে সব মিথ,বিশ্বাস ধর্ষনকে প্রশ্রয় দেয়, তেমন মিথগুলোকে ভেঙ্গে দিতে হবে।
তেমন কিছু প্রচলিত মিথ হচ্ছে:
১। নারীর উগ্র পোষাক,চাল- চলন ধর্ষনকে উৎসাহিত করে;
২। নারী ধর্ষিতা হতে চায়;
৩। নারীর বুক ফাটে তো মুখ ফুটে না,তাই তাকে বার বার " আহ্বান " জানাতে হবে;
৪।
পুরুষরা অধিক যৌন- কাতর,তাই তারা নিজকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না;
৫। ভূমি দস্যুদের মতন এই যৌন দস্যুদের মানসিকতা এই যে নারীর দেহের উপর সে "অধিকার প্রাপ্ত"( এনটাইটেলমেন্ট);
৬। একবার শারিরিক সম্পর্ক হওয়া মানে পরবর্তীতে ও সে অধিকার থাকবে;
৭। রাত- বিরাতে নারীর একাকী চলাফেরা ধর্ষনের অন্যতম কারন;
৮। ধর্ষিতার শরীরে আঘাতের চিন্হ নেই,তাই তার নীরব সমর্থন ছিল- ইত্যাদি ভ্রান্ত বিশ্বাস সমাজ থেকে দূর করতে হবে।

এছাড়া ও ধর্ষন সংস্কৃতি পরিবর্তনে আরো যা যা করতে হবে:
৯। ধর্ষন প্রতিরোধে শুধু নারীকে সতর্ক থাকতে বললে হবে না,পুরুষকে ও " ধর্ষন করবে না" এই বার্তা বার বার দিতে হবে;
১০। পরিবার, সমাজে অন্যের " অনুমতি/ সম্মতি" নেওয়ার ( কনসেন্ট)কালচার তৈরী করতে হবে;
১১। প্রচার মাধ্যম,ভিডিওতে যৌন সুরসুরি দেওয়া প্রোগ্রাম বন্ধ করতে হবে;
১২। পৌরুষত্বের সনাতনী ধারনায় পরিবর্তন আনতে হবে;
১৩। ধর্ষন " প্রাকৃতিক" ব্যাপার এ ভুল ধারনা ভেঙ্গে একে " অপরাধ " ও নারীর প্রতি " সহিংসতা " হিসেবে দেখতে হবে;
১৪। ধর্ষন মানে ধর্ষন, প্রেম - বন্ধুত্বের নামে একে " বৈধতা" দেওয়ার চেষ্টা করা যাবে না;
১৫। চোখের সামনে ধর্ষন হচ্ছে অথচ নির্বিকার, নিষ্ক্রিয় থাকার কাপুরুষতা পরিহার করতে হবে;
১৬। সামাজিক / আইনগত হয়রানি, অসম্মানের ভয়ে ধর্ষনের ঘটনা লুকিয়ে রাখা যাবে না;- ইত্যাদি ।
চলবে
________________________________
প্রফেসর ডা. তাজুল ইসলাম
সোশাল সাইকিয়াট্রস্ট
অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান
কমিউনিটি এন্ড সোশাল সাইকিয়াট্রি বিভাগ
জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল,ঢাকা
e- mail: [email protected]
আপনার মতামত দিন: