Ameen Qudir
Published:2018-03-01 17:39:44 BdST
ভারতে ন্যাশনাল মেডিকেল কমিশন বিলের বিরুদ্ধে ডাক্তারদের পদযাত্রা
ডা. রেজাউল করীম
----------------------------------
ন্যাশনাল মেডিকেল কমিশন বিলের বিরুদ্ধে আমাদের ঘোষিত অবস্থানের সাথে সাজুয্য রেখে কেন্দ্রীয় আই এম এর উদ্যোগে যে ভারত-যাত্রা শুরু হল, তার সূচনা পর্বে আমরা সংগঠন ভাবে উপস্থিত ছিলাম। এই উপলক্ষে সভার সংক্ষিপ্ত ভাষ্যে দ্ব্যর্থহীন ভাষায় ক্রসপ্যাথি নিয়ে রাজ্য সরকারের ভন্ডামির কথা আমরা বলেছি।
আমাদের বহু কথিত অবস্থানের কথা আরেকবার মনে করিয়ে দেওয়া যায়। আমরা মনে করি এই বিল যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর বিরুদ্ধে, চূড়ান্ত অগনতন্ত্রিক, জনবিরোধী ও এই আইন মেডিকেল শিক্ষা ব্যবস্থায় মেধা ভিত্তিক ছাত্র ভর্তি অবসান করে ধনীদের কাছে মেডিক্যাল শিক্ষা খুলে দেবার অপপ্রয়াস। এই আইনে ব্রিজ কোর্সের যে ব্যবস্থা রাখা হয়েছে তা দেশের দরিদ্র ও নিম্নবিত্ত মানুষের কাছে বিভিষিকা হয়ে উঠবে। এ বছরের বাজেট ও এই বিল দুটিকে মিলিয়ে দেখলে এটি দিবালেকের মত স্পষ্ট হয়ে ওঠে এই সরকারের আসল উদ্যেশ্য কী! এরা একদিকে বেসরকারী মেডিক্যাল কলেজের হাতে অবাধ বানিজ্যের চাবিকাঠি তুলে দিতে চায়, আরেকদিকে ইন্সুরেন্স ভিত্তিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থা চালু করে জনস্বাস্থ্যের কল্যানকর ব্যবস্থার অবসান ঘটাতে চায়।
রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য বাজেট কেন্দ্রের তুলনায় বেশি হলেও একই রকম লক্ষ্যভ্রষ্ট ও তাৎক্ষনিক প্রয়োজনের অতিরিক্ত কোন সুদুর প্রসারী দিশা দেখাতে ব্যর্থ। এই সরকার ক্রসপ্যাথি সরকারী ভাবে চালু করেছে। যে আইন দিয়ে বেসরকারী স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে নিয়ন্ত্রন করার মিথ্যা দাবী করে এসেছেন, সেই আইন প্রকৃত প্রস্তাবে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার নেমেসিস হয়ে উঠবে। চিকিৎসকদের গনশত্রু বানিয়ে সরকার তাদের সীমাহীন ব্যর্থতার দায় চিকিৎসকদের স্কন্ধে সমর্পন করার অশুভ, অন্যায় ও অশোভন উদ্যোগ নিয়েছেন। এই আইন চালু হওয়ার পর ৭৬ জন চিকিৎসক হামলার শিকার হয়েছেন। হামলাকারীদের একজনের ও শাস্তি হয় নি। সরকারী ভাষ্যে হামলাকারীদের নিন্দাও করা হয় নি। এই পরিস্থিতির অবসানের জন্য লাগাতার আন্দোলন চলছে।
চিকিৎসকদের নি:শর্ত ঐক্য ছাড়া এই অসম যুদ্ধে জয় সম্ভব নয়। সাধারন মানুষের সমর্থন ও সক্রিয় সহযোগীতা ছাড়া এই অবস্থার অবসান সম্ভব নয়। ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টর্স ফোরাম রোগী-চিকিৎসক ঐক্য প্রতিষ্ঠার জন্য যে উদ্যোগ শুরু করেছিল তার প্রাথমিক কাজ শুরু করেছিলাম কল্যানীতে। এই সভায় শিশু বিশেষজ্ঞ ও অগ্রনী মানবাধিকার কর্মী ডা: বিনায়ক সেন উপস্থিত ছিলেন। এরপর শ্রমজীবি স্বাস্থ্য উদ্যোগের আরো কয়েকটি এমন সভা হয়েছে যেখানে ফোরাম সহযোগীর ভূমিকা পালন করেছেন। আমরা আগামী ১৬ ই মার্চ জলপাইগুড়িতে এরকম একটি গন কনভেনশনে উপস্থিত থাকবো। চিকিৎসকদের আসল বন্ধু রয়েছে তাদের রোগীদের মধ্যে। আরো বেশি করে তাদের কাছে যেতে হবে ও তাদের বন্ধুত্ব অর্জন করতে হবে। মৃচ্ছকটিকের সেই বিখ্যাত উক্তি মনে রাখতে হবে-
Empty his house to whom no child is born
Thrice empty his who lacks true friends and sure
To fools the world is empty and forlorn
But all that is empty to the poor
------------------------------------
ডা. রেজাউল করীম,কলকাতা
আপনার মতামত দিন: