Ameen Qudir
Published:2018-02-05 16:33:37 BdST
ক্যান্সার থেকে চাই পরিত্রাণ
তাওহীদ হাসান
_________________________
অনেকের মাঝে ক্যান্সার নিয়ে বিভিন্ন মতামত থাকলেও মূলত ক্যান্সার, একটি অস্বাভাবিক কোষ বৃদ্ধি জনিত রোগ যা শরীরের অন্যান্য অংশের উপর আক্রমণ বা বিস্তার লাভ করে। ক্যান্সারের সচেতনতা বৃদ্ধি, সনাক্তকরণ, প্রতিরোধ এবং চিকিৎসায় উৎসাহিত করার জন্য আন্তর্জাতিকভাবে প্রতি বছর ফেব্রুয়ারির চার (০৪) তারিখ আন্তর্জাতিক ক্যান্সার দিবস পালিত হয়ে আসছে। সারা বিশ্বে জনসংখ্যা মৃত্যুর একটি অন্যতম কারণ ক্যান্সার। ক্যান্সার তুলনামূলক একটি ভীতিকর রোগ। বর্তমানে শরীরের যে কোনো অঙ্গেই এ রোগ হতে দেখা যায়। তবে সঠিক সময়ে এই রোগ সনাক্তকরণ ও যথাযথ চিকিৎসা, মানুষকে অনেক অংশের সুস্থ করে তোলে। ধূমপান, এলকোহল, জর্দা-তামাকপাতা, কিছু প্রক্রিয়াজাত খাবার, রেড মিট, পোড়া খাবার খাওয়া এছাড়া আঁশযুক্ত খাবার সবজি, ফলমূল, ভিটামিন ডি, ক্যালসিয়াম, - কম খাওয়া, শারীরিক ব্যায়াম না করা, শারীরিক স্থূলতা বা বেশি ওজন, আলট্রাভায়োলেট রশ্মি, এক্স-রে রেডিয়েশন, কিছু রাসায়নিক পদার্থ, কিছু ভাইরাস ও অন্যান্য কারণে ক্যান্সার হয়ে থাকে।
ক্যান্সারের কারণে সারা বিশ্বে প্রায় ৮ কোটি মানুষের মতো মারা যায়। সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। দিবসটি উপলক্ষে জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, বাংলাদেশ ক্যান্সার ফাউন্ডেশ, সোসাইটি সহ সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংগঠন রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে নানা কর্মসূচি পালন করে। শোভাযাত্রা, পোস্টার, ফেস্টুন প্রদর্শনী, আলোচনা সভা, ক্যান্সার রোগী ও সারভাইবারদের অংশগ্রহণে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সহ নানান ধরণের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় এই দিবসটিকে কেন্দ্র করে। যেকারোও, যেকোন বয়সে, যেকোন সময়ে এই রোগটি হতে পারে। তবে কিছুটা সচেতনতা আর নিয়মানুবতিত আমাদের এই রোগের সম্ভবনা থেকে বাঁচিয়ে রাখতে পারে।
যেসব ধরণের খাবার খেলে এসব রোগ হয়, আমাদের সেসব খাবার থেকে পুরোপুরি দূরে থাকা উচিত। সাথে যেসব খাবার আমাদের নিয়মিত খাওয়া উচিত, সেসব খাবার প্রতিদিন নিয়ম করে খাওয়া দরকার। আর এই দুইটি কাজ করলে ক্যান্সার হওয়ার সম্ভবনা থেকে দূরে থাকা সম্ভব। ক্যান্সার অনেক ধরণের। হয়তো আমাদের সব ধরণের ক্যান্সারের সম্পর্কে ধারণা নেই। আমাদের আশেপাশে করোও মধ্যে যেকোন রকমের ক্যান্সারের লক্ষণ থাকলে আমরা সহজে বুঝতেও পারবোনা। রোগটি সামান্য পর্যায় থেকে গুরুতর পর্যায়ে চলে যাবে। তাই সকলের উচিত ক্যান্সারের লক্ষণ সম্পর্কে নূন্যতম জ্ঞান রাখা।
দেশের ভিতর জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়, ই এন টি এন্ড হেড নেক ক্যান্সার হাসপাতাল এন্ড ইনস্টিটিউট, আহ্ছানিয়া মিশন ক্যান্সার হাসপাতাল, ইউনাইটেড হাসপাতাল, স্কয়ার হাসপাতাল, ল্যাব এইড স্পেশালাইজড হাসপাতাল, ইবনে সিনা হাসপাতাল, এনাম মেডিকেল, ডেল্টা হাসপাতাল সহ বেশ কিছু হাসপাতালে চলছে ক্যান্সারের চিকিৎসা। পাশাপাশি বেশকিছু মানুষ কলকাতা, মুম্বাই, চেন্নাই, ব্যাংকক, সিংগাপুর সহ বিভিন্ন জায়গায় ছুটছেন। তবে যে যেখানেই চিকিৎসা কারাক, সঠিক সময়ে সঠিক সনাক্তকরণ ও যথাযথ চিকিৎসা প্রদানই আসল জিনিস। তবে প্রতিনিয়ত চলছে ক্যান্সার নিয়ে গবেষণা।
হিউস্টনের ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস এডি ক্যান্সার সেন্টার বা বাল্টিমোরের জনস হপকিন্স হাসপাতাল, চলছে উন্নত চিকিৎসা ও অত্যাধুনিক ঔষধের গবেষণা। হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি থেকে শুরু করে কিউবা সব জায়গায় চলছে উন্নত ক্যান্সারের ঔষধ নিয়ে কাজ, সেই পালে পিছিয়ে নেই আমাদের দেশও। কিউবার দাবি করা ঔষধের দিকে আছে অনেকের নজর। এমনকি কিছু কিছু আমেরিকানদের নজরও এড়াতে পারেনি এই ঔষধ। তবে, আমেরিকার ডাক্তারগণ কোনভাবেই এসব ঔষধ পরামর্শ দিতে পারেননা,
এই ঔষধ মার্কিন ক্লিনিকাল ট্রায়াল দ্বারা স্বীকৃতি পাবার আগে পর্যন্ত। চীনা দেশীয়দের এখনও আছে নতুন ও সনাতন উভয় ধরণের চিকিৎসা।
সচেতন নাগরিক হিসেবে আমাদের প্রত্যেকের ই দায়িত্ব রয়েছে এই ব্যাপারে। সচেতনতার অভাবে আমাদের হয়তো প্রিয় মানুষটিকে হারাতে হতে পারে। শরীরে যেকোন সমস্যা অবহেলা না করে বিশেষজ্ঞ এর পরামর্শ নেয়া, ক্যান্সারের লক্ষণ নিয়ে পড়াশুনা করে জানা, বিশেষজ্ঞ এর পরামর্শ ক্রমে পরিবারের সুষম খাদ্য নিশ্চিত করা, কোনভাবেই এসব দায়িত্ব এড়ালে চলবে না। আসুননা সবাই মিলে সচেতন হই, অন্যকে সচেতন করি আর সমাজ থেকে এই রোগটিকে নির্মূলের সর্বাত্মক চেষ্টা করি। আমরা আমাদের পাশ থেকে এই রোগের জন্য আর একটি প্রিয় মানুষকেও হারাতে দেবনা। আমাদের নিয়মিত ও যথাযথ জীবন যাপন, আমাদের এই রোগ থেকে দূরে রাখবে এটাই সবার কাম্য। পর্যায়ক্রমে এই চিকিৎসার ও ওষুধের আরও উৎকর্ষ সাধন হোক।
_____________________________
- তাওহীদ হাসান, ঢাকা।
আপনার মতামত দিন: