Ameen Qudir
Published:2017-09-17 15:49:14 BdST
"প্রতিবাদীরা যেন রোহিঙ্গা শব্দটির চেয়ে তাদের ধর্মীয় পরিচয় নিয়ে বেশী উদগ্রীব"
ডা. রেজাউল করীম , কলকাতা
______________________________
গত কয়েকদিনে নানারকম ছবিসহ রোহিঙ্গা অত্যাচারের কাহিনী ফেসবুকের দেয়াল ছেড়ে অন্দর মহলে ঢুকে পড়ছিল। একটু বিস্মিত হয়েছিলাম সম্পূর্ন অন্য কারনে। এমন অত্যাচার অসম্ভব নয়, শাসকের প্রয়োজনে সব কিছুই ঘটতে পারে। কিন্তু, রোহিঙ্গা নিয়ে যারা প্রতিবাদ করছেন আর যারা করছেন না তাদের মধ্যে স্পষ্ট সাম্প্রদায়িক বিভাজন দেখে হতাশ হয়েছি। আরো ভেবে অবাক হয়েছি যে প্রতিবাদীরা যেন রোহিঙ্গা শব্দটির চেয়ে তাদের ধর্মীয় পরিচয় নিয়ে বেশী উদগ্রীব। আমরা যারা স্বভাবজভাবে হিন্দু মুসলিম বিভাজনে বিশ্বাস করি না, তারা মানুষের রক্তপাতের বিরোধিতা করেছি নিজের মত করে। একটা কথা মনে রেখেছি যে, একটা হাজার হাজার বছরের পুরনো সভ্যতা কারো ৩ বা ৩০ বছরের শাসনে ধ্বংস হতে পারে না। তার্কিক ভারতবাসী রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে বিতর্ক করতে পারেন, কারন সব কিছু নিয়ে তর্ক করা আমাদের স্বভাব। কিন্তু বাংলাদেশের কিছু মানুষের উগ্র প্রতিবাদের ধরন ও অনেক লোকের একই ভাষায় প্রতিবাদ দেখে শঙ্কিত ছিলাম যে কিজানি কোন ভয়ানক উদ্দেশ্যে একদল পাজি লোক এসব করছে।
আজ বেনেপোল ও মিরপুরে বৌদ্ধদের উপর আক্রমণে তাদের উদ্দেশ্য পরিষ্কার হল। মনে রাখতে হবে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমণের বিরোধিতা আমরা তেমন ভাবে করি নি। চট্টগ্রামে আদিবাসী ও বৌদ্ধদের উপর আক্রমণের বিরোধিতাই বা কখন করলাম।
রোহিঙ্গা, চাটগেঁয়ে বা অন্য যেকোন মানুষই আক্রান্ত হোক, আক্রমণকারীর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে কিন্তু তার জন্য চাই বিজ্ঞানমনস্কতা ও যুক্তিবাদী চেতনা। মুসলমানের রক্তপাতে তথাগতের মহিমা যেমন বাড়ে না, তেমনি হিন্দু আর বৌদ্ধদের রক্তপাতে আল্লাহর মহিমাও বাড়ে না। মানুষ আগে ধর্ম পিছে এই সত্যটা আত্মস্থ করতে না পারলে পছন্দমাফিক সংবেদনশীলতা দিয়ে মানবতার অবমাননার শুধু হবে, মহত্তর কোন লক্ষ্যে পৌঁছনো যাবে না।
__________________________________
ডা. রেজাউল করীম , কলকাতার প্রখ্যাত চিকিৎসক, কলামনিস্ট।
আপনার মতামত দিন: