Ameen Qudir

Published:
2017-08-10 18:16:57 BdST

কাঁটা চামচ


 

 

কাঁটা চামচ

রূপঙ্কর সরকার




__________________________


আমি যখন জন্মেছি, তখন সদ্য ভারত স্বাধীন হয়েছে। তাই তার বেশ কিছুদিন পর পর্যন্ত সাহেবসুবোরা এদেশে ছিল, ছিল তাদের শিখিয়ে যাওয়া আদব কায়দা। তারা চলে যাওয়ার আরও কিছু পরে অবধি ছিল হাফ-সাহেব অর্থাৎ অ্যাংলো ইন্ডিয়ানরা। তারা প্রধানত ছিল কলকাতা, বোম্বে আর ম্যাক্লাক্সিগঞ্জে। কত সুন্দর মানুষ ছিল তারা। তাদের সঙ্গে কত মিশেছি, লোকগুলো চলে গেল ভারত সরকারের অবহেলার ফলে। আমাদের মধ্য কলকাতার বিশাল একটা অঞ্চল কী সুন্দর ছিমছাম, শৃঙ্খলাবদ্ধ আর সুন্দর করে রেখেছিল তারা ভাবলেই চোখে জল এসে যায়। এখন যে কজনকে লোকে ‘অ্যাংলো’ বলে অভিহিত করে, তারা অধিকাংশই গোয়ান(‘গোয়ানিজ’ হয়না, অশুদ্ধ)আর কিছু মলয়ালি। আসল ‘অ্যাংলো’ ওই বো ব্যারাকে গোটা পাঁচ ছয় আর ব্যারি বা নীল ওব্রায়েন রা। বাকি সব দেশ ছেড়েছে কংগ্রেস সরকারের অবহেলার ফলে। অবশ্য বিজেপি থাকলে বোধহয় আরও খারাপ হত।

 

যাক রাজনীতি। যা বলছিলাম, আমার জন্মের বেশ কিছু পরে অবধি সাহেবরা ছিল। আমি স্বাধীন ভারতেই জন্মেছি একটা আমেরিকান মিলিটারি হাসপাতালে। তারপর বেশ বড় হয়ে যখন বাবার সঙ্গে লেকে সাঁতার কাটতে যেতাম, সকাল বেলা কোনও ব্যাপার নেই, কিন্তু বিকেল বেলা সময় ছিল চারটে থেকে পাঁচটা। পাঁচটা বাজলেই ইস্কুলের মত একটা পেতলের বিশাল ঘন্টা নিয়ে এসে সিআইটির এক দারওয়ান ঠংঠংঠংঠং করে বাজাতে থাকত। তার মানে কালো মানুষরা এবার উঠে পড়, সাদা মানুষরা নামবে। তাদের সময় পাঁচটা থেকে ছ’টা। অবোধ বালক আমি, তবু স্বাধীন ভারতের তো, বাবাকে প্রশ্ন করতাম, আচ্ছা আমাদের রঙ কি জলে গুলে যায়? যে ওদের গায়ে লাগবে? প্রশ্নটা অমূলক, কারণ আমাদের দুজনের রঙই তখন ওদের কাছাকাছি। সে রঙের কথা এখন বললে ‘ঘুরায় হাসব’। বাদ দেন। সেই গোলাপি সুইমস্যুট পরা গোলাপি পরির মতো মেম সাহেবকে এখনও ভুলতে পারিনা, যিনি ডাইভিং বোর্ডের ওপরে উঠতেন একেবারে তিনতলায়। তবে ডাইভ ফাইভ দিতেন না, একটা চাদর বিছিয়ে পেপারব্যাক পড়তেন।


আমি হাঁ করে দেখতাম বলে বাবা ধমক দিত। সে বয়সে যৌনচেতনা গজায়নি, শুধু মুগ্ধ হয়ে ফিগারটা দেখতাম। বাড়িতে বেশ ক’জন শিল্পী। ফিগার দেখা অভ্যাস ছিল জ্ঞান হওয়ার পর থেকেই।

 

তা সেই সময়েই বাবা সঙ্গে একটা কোন প্রোগ্রামে গেছি। অনুষ্ঠানের পর ডিনার ছিল। বিশাল এক হলঘরে বসেছি, তবে সেই আগেকার দিনের বিয়েবাড়ির মতো লাইন করা টেবিল চেয়ারে। আমাদের লাইনে কালো মানুষরা, উল্টোদিকে সাদারা। প্রথমে ক্রকারি দিয়ে গেল উর্দি পরা বেয়ারারা। তেমন বেয়ারা সে সময়ে কেউ পুষতে না পারলেও ভাড়া করা যেত উর্দি সমেত। ওয়াগা বর্ডারে সেরেমোনিয়াল প্যারেড করা সৈন্যদের মতো পাগড়ি, যার একদিকটা ময়ূরের পেখমের মতো অন্যদিকটা ঝোলে। তাদের ইউনিফর্মের ওপর দিকটা ফ্রক, নীচটা চাপা পায়জামা কোমরে আর কাঁধে সোনালি বর্ডার দেওয়া কাপড়ের বেল্ট। তারা সাহেবি আদব কায়দা জানে।

 

তারা ক্রকারি রেখে গেল। ডিসটা চিনি, কোয়ার্টার প্লেটও চিনি, কিন্তু ছোট বাটি মেজ বাটি, চৌকো বাটি আর সুপ বোল চিনতামনা। আর চিনতামনা অতগুলো বিভিন্ন দৈর্ঘের চামচ, কোনটা কী কাজে লাগায়। বাবাকে ফিসফিসিয়ে জেনে নিলাম। বেশ গর্ব হচ্ছিল আসে পাশের আমার বয়সি ‘অশিক্ষিত’রা জানেনা দেখে। তাদের হাব ভাব ও উসখুসেপনা দেখেই বোঝা গেল জানেনা। এর বেশ কিছুক্ষণ পর কাটলারি এল। কাঁটা চামচ দেখেছি বটে, মামাবাড়িতে থাকত। বিশিষ্ট অতিথি এলে খাওয়ার টেবিলে খেতে দেওয়া হত। আমরা অন্যদিন মাটিতে আসন পেড়েই খেতাম বাবু হয়ে বসে।

 

কিন্তু এখানে তো অনেক রকম কাটলারি। সবই রূপোর কিংবা রূপোর মত দেখতে। কোনটা দিয়ে কী করে? ‘অশিক্ষিত’রা অধৈর্য হয়ে উঠেছে, কারণ একটার পর একটা সাজ সরঞ্জাম আসছে কিন্তু খাবার আসছেনা। কয়েকটা ছেলে কাঁটা চামচের মধ্যে কিছু কিছু তুলে নিয়ে ক্রকারির ওপর ঠুন ঠিন আওয়াজ করতে লেগেছে। বাবা বলল ‘অসভ্য। আওয়াজ করা একদম বারণ’। আমি আবার ফিসফিস করলাম, বাবা কোন হাতে কোনটা ধরতে হয়? বাবা বলল, একটা জিনিষ শিখে রাখো। ভবিষ্যতেও সব জায়গায় কাজে লাগাবে। তা হল, ‘দেখে শেখ’। খাবার এলে তড়বড়িয়ে খেতে যেওনা। সেটা দেখতেও ভাল লাগেনা। আড়চোখে দেখে নেবে সাহেবরা কী করছে। তুমিও তাই করবে। প্রত্যেকটা জিনিষ আলাদা করে শেখাতে গেলে লোকে কী বলবে? আমি বললাম, আর ওরা? ডিসের ওপর চামচ দিয়ে বাজনা বাজাচ্ছে যে? বাবা বলল, ওরা অসভ্য মানুষ জেনে গেছে। তুমিও সে দলে নাম লেখাবে? আমি সাহেবদের দেখে মোটামুটি রপ্ত করে ফেললাম কাঁটা চামচে খাওয়া। একটু ভুল বলা হল। বলা উচিত ছিল ‘ছুরি কাঁটায় খাওয়া’। কেন তা পরে বলছি।

 

সে সময়ে কলকাতা শহরের পাতি রেস্তোরাঁগুলোতেও আর কিছু না হোক, খেতে বসলে ছুরি, কাঁটা আর চামচে দিয়ে যেত। আমাদের বাইরে খাওয়া খুব একটা উৎসাহ দেওয়া হতনা বাড়ি থেকে। তবে মাসিমণি একমাত্র হোটেলবাজ ছিল। প্রায়ই আমাকে এখানে ওখানে নিয়ে গিয়ে খাওয়াত। আইস্ক্রিম পারলারে তিনকোণা ওয়েফারটা কী কাজে লাগে তা মাসিমণিই বলে দিয়েছিল। আমি খুব দ্রুত শিখে গিয়েছিলাম ছুরি কাঁটার ব্যবহার খুব হাড়ওয়ালা মাংস বা কাঁটাওয়ালা মাছও আমি অনায়াসে কাঁটায় ব্যবচ্ছেদ করতে পারতাম, এখনও পারি। আমরা যৌবনে পা দেওয়ার সময় থেকেই কলকাতায় গ্রামের লোক বা মফঃস্বলের লোক ঢুকতে শুরু করল। তারা হাত দিয়েই খায় হোটেলে রেস্তোরাঁয়, আগে যা ভাবা যেতনা। প্রতিটি রেস্তোরাঁ থেকে ধীরে ধীরে ছুরি ব্যাপারটা তুলে দেওয়া হতে লাগল। তখন শুধু চামচ দিয়ে যায়, বললে ফর্ক এনে দেয়। ছুরি হাওয়া হয়ে গেল।
বেশ কিছুকাল কেটে গেছে। আমি চাকরি করি এবং বেশ বড় জায়গায় করি।


আমার উড়োজাহাজে চড়তে ভীষণ ভয়। এইজন্য দীপঙ্করদের অর্ধেক ট্রিপে আমি যাইনা। কোনও কোনও ক্ষেত্রে রাজধানীর টিকিটের প্রায় সমান প্লেনের টিকিট একটু আগে কাটলে। তাও যাইনা। এই ভয় কিন্তু আমার একার নয় বহু মানুষের, বিশেষত পুরুষ মানুষের থাকে। বিখ্যাত মানুষদের মধ্যে উত্তমকুমারের ছিল, নবাব অফ পতাউদি মনসুর আলি খাঁ এর ছিল, অত বীর বিক্রমী বক্সার মুহাম্মদ আলি, আগে যখন ক্যাসিয়াস ক্লে ছিলেন, তিনি এত ভয় পেতেন যে ওয়ার্ল্ড হেভিওয়েট টাইটল জেতার পরে প্রাইজ নিতে যাননি প্লেনে চড়ার ভয়ে।

 

আমি অফিসের কাজে বাইরে গেলে ট্রেনেই যেতাম। যখন ট্র্যাভেল এজেন্ট কে দিয়ে টিকিট কাটাতে হত, ততদিন পর্যন্ত তাদের বলে দিতাম, অফিসে বলবে প্লেনের টিকিট পাওয়া যায়নি। কিন্তু এর পরে এল সেই দিন যখন অফিস সোজা হাতে টিকিট ধরিয়ে দিতে লাগল। তার কারণ, এয়ারলাইন্সের সঙ্গে কীসব চুক্তি হয়েছিল, অনেক টিকিট একসঙ্গে কাটলে ওরা অফিসকে কি সব ডিসকাউন্ট দিত। তবে শুধু ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্স, জেটে নয় (তখন আর কোনও কোম্পানি ছিলনা, ‘দামানিয়া’ সবে বন্ধ হয়েছে)। আমি প্রথম যেবার প্লেনে উঠি, অনেকটা জটায়ুর প্লেনের অভিজ্ঞতার মত, যাঁরা ছবিটা দেখেছেন।
তবে ভয় পাওয়ার ব্যাপারটা আকাশললনারা বুঝতেই দিলেন না। প্রথমেই লবেঞ্চুস দিয়ে গেলেন, একটু পরেই ওশিবোরি, তার একটু পরেই ট্রেট্রা প্যাকে জুস, তারপর খাওয়া, তারপর চা এই ভাবে এনগেজ করে রাখলেন। খালি মাঝাখানে মিনিট কুড়ি ভয় কাটানোর জন্য সামনের সিটের ব্যাক ফ্ল্যাপে রাখা বইটা(ম্যাগাজিন) পড়তে লাগলাম। দেখলাম খুব ভাল ভাল আর্টিক্‌ল আর ছবিতে ভর্তি বইটা। খুব ইচ্ছে করছিল টুক করে গেঁড়িয়ে দিই। তারপর ভাবলাম কে কী বলবে, যা তা হবে, থাক।

 

একবার প্লেনে চাপা হয়ে গেছে, ভয় খানিক কেটে যাবার কথা, কিন্তু তা হয়নি। এর পর ঘন ঘন যেতে হতে লাগল। কোনও কোনও বার এক জায়গায় গিয়ে একটু পরেই আবার আর এক প্লেনে ওঠা। এবার খেয়াল করলাম, খাবারের সঙ্গে যে ছুরি কাঁটা চামচ দেয়া হচ্ছে, তা আর আগের মত ধাতুর নয়, সবই প্লাস্টিকের। কারণটা বোধহয় কয়েকটা প্লেন হাইজ্যাক হয়ে যাবার পরের সতর্কতা। তবে প্লেনের ভয়টা একটু কাটত সঙ্গে যদি কেউ পরিচিত থাকত। তেমন ফ্লাইট দুএকটা নিয়েছি। অতটা ভয় করেনি।
এর মধ্যে এক কাণ্ড। আমাদের পাড়ার একটা ছেলে প্রায়ই খেয়াল করে আমি মস্ত বড় ডাফ্‌ল ব্যাগ নিয়ে কোথায় যাচ্ছি। একদিন এসে বলে কিছু মনে করবেন না, এই যে আপনি মাঝে মাঝেই যান খুব জলদি ফিরে আসেন তো। কোনও কোনও বার সেই দিনই। তা প্লেনে যান নাকি? আমি বললাম, হ্যাঁ মানে অফিস থেকে জোর করে তো। সে বলল, তা দাদা আমার একটা বায়না আছে। ওই প্লেনে যে বইগুলো দেয়, আমার জন্য একটা নিয়ে আসবেন? আমি বললাম, ধুস, ওগুলো তো পড়ার জন্য, নিয়ে আসে যায় নাকি? সে বলল, ওই তো ওবাড়িতে আর্মির দিদি আছেন, ত্যিনি তো এনে দেন। আসলে আমি ওগুলো জমাই, আমার খুব ভাল লাগে, প্লীজ দাদা। আমি আমতা আমতা করে বললাম দেখব।

 

সে বার সঙ্গে আমার বস যাচ্ছেন, খুবই রসিক মানুষ। মজার মজার কথা বলেন, উনি সঙ্গে থাকলে ভয়টা অনেক কম হবে তাই প্রত্যয়। আমরা তো উঠেছি, লবেঞ্চুস, ওশিবোরি, এসব হয়ে গেছে। আমি ফ্ল্যাপ থেকে বইটা টেনে নিলাম। বেশ ভাল ভাল পড়ার জিনিষ, একটা দুঘন্টার ফ্লাইটে শেষ হবার নয়। তারপর পাতা উল্টে দেখি দারুণ ব্যাপার। মুম্বাই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির সেই সাইলেন্ট এরা থেকে আজ পর্যন্ত সমস্ত ফিল্মের খতিয়ান, প্রচুর ছবি আর রাশি রাশি তথ্য। বইটা নিয়ে ইতস্তত করছি। ব্যাটা বলল বই আনতে। আমার হ্যান্ড ব্যাগেজও মাথার ওপর। কিন্তু অত বড় একটা ম্যাগাজিন, ওটাকে ঢোকাতে গেলে তো সমস্যা। আমাকে উসখুস করতে দেখে বস বললেন, কী ব্যাপার, ম্যগাজিনটা খুব মন দিয়ে পড়ছেন দেখছি! আরে নিয়ে চলুন না রাত্রে তো কিছু করার নেই, তখন পড়বেন। আমি বললাম, না না, এটা নিয়ে যাব কী করে, ছোটখাট ব্যাগ তো নেই যে চট করে ঢুকিয়ে নেব। বস বললেন, আরে মশাই ঢুকিয়ে কী নেবেন, সবার সামনে দিয়ে গটমট করে নিয়ে যান, কে কী বলবে? ইট ইজ ইয়র পারসোনাল কপি। দেখুন পেছনে লেখা আছে। আমি তখনও ভাবছি উনি মজা করছেন। প্রায়ই খুব সিরিয়াস মুখ করে মজা করতেন। আমি বললাম না মানে, একজন খুব করে চাইল – উনি বললেন, তো নিয়ে যান। গিয়ে তাকে দিন, খুশি হবে। আমি বললাম কিন্তু ফিল্মের ওপর এই আর্টিকলটা এত ভাল লাগল – তখন উনি বললেন, তা আমারটাও নিন। আমি বললাম সব্বোনাশ! খুব ভারি হয়ে যাবে তো। তখন উনি বললেন, বেশ আমারটা আমিই নিচ্ছি। কলকাতায় গিয়ে মনে করে চেয়ে নেবেন। তখন বুঝলাম উনি মজা করছিলেন না, সিরিয়াস ছিলেন।

 

মাস দুয়েক পরে আবার যাচ্ছি দিল্লী। এবার ম্যাগাজিনটা খুলে দেখি জ্যাকপট। একটা দীর্ঘ আর্টিক্‌ল। তাতে লেখা আছে, ছুরি কাঁটা আর চামচ কেমন করে ব্যবহার করতে হয়। কেউ সাময়িক ভাবে উঠে যাচ্ছে, আবার এসে বসবে, কেমন ভাবে রাখবে ওই তিনটি। কেউ উঠেই যাচ্ছে, আর আসবেনা, সে কেমন ভাবে রাখবে। কেউ খাবার ফুরিয়ে ফেলেছে, আরও খাবে, তার কাটলারি কেমন ভাবে রাখবে। এই ভাবে ডিটেল আলোচনা ছবি দিয়ে। কোন হাতে কোন কাটলারি ধরতে হয় বিশেষ বিশেষ কোন ক্ষেত্রে। এমনি অনেক কিছু। আগের বার জেনে গেছি, আমার ‘পার্সোনাল’ কপি, তাই ওটা হাতে নিয়েই বীরদর্পে এরোব্রিজের দিকে এগোলাম। প্রস্থান পথে আকাশললনা ঝুঁকে বললেন, আপনার দিন শুভ হোক সার।
ভুলে গেছি বেশির ভাগ নির্দেশগুলোই। কোথাও তেমন ভাবে খাওয়া হয়না তো, কাজেও লাগেনা সে সব।


____________________________

রূপঙ্কর সরকার । জনপ্রিয় কথাশিল্পী।

আপনার মতামত দিন:


কলাম এর জনপ্রিয়