Ameen Qudir

Published:
2018-05-07 00:13:39 BdST

"সিএমইউ বা ডিএমইউর নামে অপবানিজ্য : ঘুমন্ত বিএমডিসি এগুলো দেখে না"


সিএমইউ বা ডিএমইউর নামে অপবানিজ্য: প্রতিকী ছবি। অপব্যবসায়ীরা ব্যবহার করছে নানা কম্পানির লোগো।

 

 

ডা. কামরুল হাসান সোহেল
__________________________________

মেডিক্যাল সায়েন্স মানে মানুষের জীবনের ইতিবৃত্ত জানার বিজ্ঞান। মানব জীবনের শুরু থেকে প্রতিটি ধাপে ধাপে কি কি পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে মানব জীবনের পরিপূর্ণ বিকাশ ঘটে তা জানার বিজ্ঞান হল মেডিক্যাল সায়েন্স।মানব দেহের নানা অংগ-প্রতংগের জটিল গঠন এবং তার কার্যাবলী জানার বিজ্ঞান হল মেডিক্যাল সায়েন্স। প্রতিটি বিষয়ে সঠিক জ্ঞান না থাকলে সঠিক রোগ নির্ণয় করা এবং সঠিক চিকিৎসা দেয়া প্রায় অসম্ভব।মানব জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত প্রতিটি ধাপ কি কি পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যায় তা জানার বিজ্ঞান হল মেডিক্যাল সায়েন্স।

বিশ্বে একমাত্র আমাদের দেশেই মেডিক্যাল সায়েন্স সম্পর্কে একদম জ্ঞানহীন লোক ও নিজেকে ডাক্তার পরিচয় দিয়ে ডাক্তার সেজে প্রতারণা করছে সাধারণ জনগণের সাথে,তাদের ভুলভাল চিকিৎসায় মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে,মারা যাচ্ছে। আর কিছু আছে অল্পস্বল্প জ্ঞান নিয়েই নিজেকে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার পরিচয় দিয়ে সাধারণ জনগণকে প্রতারিত করে আর তাদের এই প্রতারণা করার সুযোগ করে দিচ্ছে মেডিক্যাল সায়েন্স নিয়ে বাণিজ্য করা কিছু অসাধু ব্যবসায়ী। এই ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন মেয়াদী এলএমএফ/আরএমপি/প্যারামেডিকস কোর্স এ যেকোন বিভাগ থেকে এসএসসি পাস করা লোকদের ভর্তি করিয়ে তাদের নামের আগে ডাক্তার লিখার সার্টিফিকেট দিয়ে দেয়। কেউ কেউ মেডিক্যাল ইইনস্টিটিউট খুলে তিন বছর মেয়াদী ডিপ্লোমা কোর্স করিয়ে ডাক্তার লিখার সার্টিফিকেট দেয়। মেডিক্যাল সায়েন্সকে এতোটা সস্তা আর সহজলভ্য বানিয়ে দিয়েছে এই ব্যবসায়ীরা!!! এই ব্যবসায়ীদেরই কেউ কেউ মেডিক্যাল সায়েন্স নিয়ে নিত্য নতুন ব্যবসার শাখা খুলে বসছেন তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রসার পেয়েছে বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ বাণিজ্য। এই বাণিজ্যের সুফল এবং কুফল দুটোই আছে, সুফল হচ্ছে দেশে এমবিবিএস মেডিক্যাল গ্র‍্যাজুয়েটের সংখ্যা বাড়ছে, আর কুফল হচ্ছে দিন দিন বেকারত্ব সমস্যা বাড়ছে। তবে ব্যবসায়ীদের মূল লক্ষ্য কোটি কোটি টাকার বাণিজ্য ঠিকই হচ্ছে এবং প্রতিবছরই তাদের বাণিজ্য বাড়ছে।
মেডিক্যাল সায়েন্স নিয়ে বাণিজ্য করার ছোট একটি খাত হচ্ছে আল্ট্রাসনোগ্রাম ট্রেনিং, তারা ৩ মাস মেয়াদী সিএমইউ আর ১ বছর মেয়াদী ডিএমইউ কোর্স করায় আর এই কোর্স করতে পারে যে কেউ। এমবিবিএস, আরএমপি, ইউনানি,প্যারামেডিকস। তাদের দরকার টাকার আর এই টাকার জন্য তারা যেকোন কিছু করতে পারে তার প্রমাণ এই কোর্সে যে কাউকে সুযোগ করে দেয়া। আল্ট্রাসনোগ্রাফী অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।একজন সনোলজিস্টের আল্ট্রাসনো রিপোর্ট এর উপর ভিত্তিতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকরা এবং চিকিৎসা দিয়ে থাকেন।যার মেডিক্যাল সায়েন্স সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান নেই সে শুধু সিএমইউ বা ডিএমইউ করে কিভাবে নির্ভুল আল্ট্রাসনো রিপোর্ট দিবে? তার ভুল রিপোর্ট এর ভিত্তিতে যদি একজন রোগীও ক্ষতিগ্রস্ত হয় তার দায়ভার কে নিবে? এইসব দেখার এবং নিয়ন্ত্রণ করার যেন কেউ নেই, বিএমডিসি যেন একটি ঘুমন্ত সংস্থা,তারা এগুলো দেখেনা।

___________________________________

ডা. কামরুল হাসান সোহেল


আজীবন সদস্য, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ , কুমিল্লা জেলা।
কার্যকরী সদস্য স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ
আজীবন সদস্য,বিএমএ কুমিল্লা।
সেন্ট্রাল কাউন্সিলর, বিএমএ কুমিল্লা

আপনার মতামত দিন:


মেডিক্যাল ক্যাম্প এর জনপ্রিয়