Ameen Qudir

Published:
2018-02-17 22:21:36 BdST

"একজন ভার্সিটি শিক্ষক কি করে ইন্টার্ন ডাক্তারকে বলেন,ফাকিং লেডী,ফাকিং গার্ল "


 


ডা. শিরিন সাবিহা তন্বী

____________________


নাহ!
নতুন কিছু ঘটেনি।
ডাক্তার হয়েছ কি,তুমি নারী হলেও ইভটিজিং,গালি,হাত কাটা,পা ভাঙ্গা - জনমত সবসময় তোমার বিপক্ষে।
একটি বিষয় নিয়ে আমি বার বার লিখেছি যে,ছয় জন সসস্ত্র কনষ্টেবল পরিবেষ্টিত হয়ে একজন ভ্রাম্যমান আদালতের কর্তা ব্যক্তি বড় বড় সব মাস্তানদের বা গড ফাদারদের প্রতিষ্ঠানে গিয়ে ও দন্ড দিয়ে আসে।আর সাথে টেবিলের তলার বানিজ্য ও সেরে আসে।
আর হাসপাতালে ডাক্তারের কর্মস্থলে এসে সাধারন সব নিরীহ চেহারার লোকজন ও বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের গায়ে হাত তোলে।


তাহলে আপনি যদি এতই জনপ্রিয় শিক্ষক হয়ে থাকেন।আপনি তো বিলেত থেকে টপ করে পরেন নাই।এই দেশে একজন নারীকে ফাকিং গার্ল,ফাক ইউ বলে সেই নারীর কর্মস্থল থেকে খুশি মনে চলে যাবেন।এটা কি করে হয়?

আপনি যখন ইভ টিজার বা ওভার স্মার্ট ইভটিজার - তখন আপনার ইভটিজার ছাত্রদের একটা গ্রুপে পরিবেষ্টিত হয়ে চলাচল করতে পারতেন।
বাংলাদেশে এই ঘটনা তো নতুন না।ক্ষমতায় থাকা রাজনৈতিক বৃন্দ - যাদের কাজ হচ্ছে জনসাধারনের জীবনে শান্তি ও স্বস্তি আনা।তারাই যখন সামনে পিছনে গাড়ীবহর নিয়ে দিনব্যাপী স্থবির করে দেয় জনজীবন।
আপনি তেমন সামনে পেছনে আপনার ছাত্র বহর নিয়ে চলবেন।

আর আপনি শিক্ষক।আপনার সম্মান,ছাত্রদের ইমোশন নিয়ে আমি কথা বলব না।
কিন্তু আপনার ছাত্র নামক যে সকল ইভটিজাররা আপনার ইভটিজিং এর শিকার নারী চিকিৎসকের ব্যক্তিগত প্রোফাইল ঘেটে এই মেয়েকে তাদের ও ইভটিজ করতে ইচ্ছে করছে বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নগ্নতা করছে সেখানে আমার কিছু বলার আছে।


এই শিক্ষা দিয়েছেন আপনার ছাত্রদের?
আর যারা লিখেছে যে 90% মেডিকেল ছাত্রী তাদের শিক্ষকদের বিছানায় গিয়ে ভাইভা পাস করে!তাদের শিক্ষক যখন আপনি - তখন মনে হচ্ছে আপনাকে কম ধোলাই দেয়া হয়েছে।এই একটা কথায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ল এর শিক্ষক,ছাত্র সবার লেভেল বোঝা হয়ে গেছে।
আমার প্রফেশন,দেশের সব নারী চিকিৎসক এবং আমাদের পরীক্ষক শিক্ষকদের কত নগ্নভাবে রিপ্রজেন্ট করছেন আপনারা?কত বড় মিথ্যাচার করছেন আপনারা?বিছানায় শুয়ে পাস করলে,এদেশে ষোল কোটি জনগনের এত চমৎকার চিকিৎসা সেবা জুটত না।আর মেডিকেল ছাত্ররা তো বিছানায় ও যায় না।তারা জীবনে পাস করত না!আপনি শিক্ষক বলে সম্মান আছে।আমার শিক্ষকদের সম্মান নাই?

আপনার ছাত্রীদের তো দেখলাম।ঐ ডাক্তারের থেকে কারো পোষাক ই আলাদা নয়।তাদেরকে আপনার ঐ ছাত্ররা সারাদিন ইভটিজ করে হয়ত।আর ঐ বিছানা ব্যাপারটাও হয়ত আপনাদের ডিপার্টমেন্টে হয়।
আমাদের স্যারগন,আমাদের ছাত্রীগন স্বেচ্ছায় তাদের যার যার জীবনে কি করেন,কত ঘন্টা বই য়ে মুখ গুজে থাকেন জানুন।তবে আপনাদের মত এমন কুৎসিৎ উপায়ে পাস করবার চিন্তা কখনোই করেন না।এ ব্যাপারে নিশ্চিত থাকুন।
আইন যখন পড়েন।এই সব অসভ্যতার কি শাস্তি হতে পারে জানুন।আই সি টি আইন টা জানুন।

ফালতু ইমোশন,মিথ্যাচার অনেক দেখছি।
একজন ডিপ্রেশনের পেসেন্ট কে সাইকোথেরাপী না দিয়ে গন আন্দোলনে দাঁড় করাইছে ইভটিজার সমর্থক ছাত্র ছাত্রী গন।

আর যে সকল ডাক্তাররা SKF এর পিরিতি ভুলতে পারেন নাই।অন্যরা লিখছে না বলে ডাবল সুবিধা নিচ্ছেন।
এই ঘটনায় দেশের সর্বোচ্চ প্রচারিত প্রিন্ট মিডিয়ার ভূমিকা টা দেখেন।তারপর ডিসিশন নেন।ফাকিং লেডী,ফাকিং গার্ল শোনার পর ও ইভটিজারকে শাস্তি দেবার অপরাধে যে পত্রিকা আপনাদের এতটা বিরুদ্ধাচরন করছে, SKF এর ঔষধ লিখে লিখে তাদের সচল রাখবেন না।
বরং প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়ে আজ এখুনি এই কোম্পানির ঔষধ প্রোডাকশন এবংমিডিয়া নোংরামি বন্ধ করুন।

______________________

 

Image may contain: 1 person, smiling, selfie, closeup and outdoor

 

ডা. শিরিন সাবিহা তন্বী । সুলেখক। বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।

আপনার মতামত দিন:


মেডিক্যাল ক্যাম্প এর জনপ্রিয়