Saha Suravi

Published:
2024-11-23 13:15:01 BdST

স্বাস্থ্যসেবা খাতের উন্নয়নের জন্য কিছু পরামর্শ 



ডা. আজাদ হাসান
স্বাস্থ্য প্রশাসন বিশেষজ্ঞ
_____________________________

দ্বিতীয় পর্ব

জেলা সদর হাসপাতাল (সেকেন্ডারী হেলথ কেয়ার সেন্টার) সমূহকে চিকিৎসার প্রাণ কেন্দ্রে পরিণত করতে হবে।
স্বাস্থ্যসেবা জনগণের একটি মৌলিক অধিকার। কিন্তু আমাদের দেশের সরকারি হাসপাতাল সমূহে দীর্ঘদিন যাবৎ অপরিকল্পিত ব্যবস্থাপনার কারণে রোগীরা পদে পদে হয়রানীর শিকার হচ্ছেন।
আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষের বসবাস গ্রামে এবং জেলা শহরে। তাই প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে মান সম্মত স্বাস্থ্য সেবা দেয়ার জন্য"জেলা সদর হাসপাতাল" সমূহের মান উন্নয়ন করতে হবে এবং কিউরেটিভ হেলথ কেয়ার অর্থাৎ "'চিকিৎসার প্রাণ কেন্দ্রে পরিণত করতে হবে"।
জেলা হাসপাতালে অপর্যাপ্ত শয্যা, অপর্যাপ্ত ল্যাব. ও ইনভেস্টিগশন ফ্যাসিলিটিজ, অপর্যাপ্ত ঔষধ সরবরাহ, রোগীদের জন্য মান সম্মত খাদ্য সরবরাহের অভাব, রোগীর তুলনায় চিকিৎসক এবং নার্সের অপ্রতুলতা, হাসপাতাল সমূহে পরিচ্ছন্ন পরিবেশের অভাব সব মিলিয়ে স্বাস্থ্যসেবা ইস্পিত লক্ষ্য অর্জন করতে পারছে না। মান সম্মত চিকিৎসা সেবা পেতে প্রতিটি জেলা হাসপাতালকে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে উন্নীত করতে হবে। সে জন্য প্রয়োজনঃ
১) জনবল বৃদ্ধি করণ ও মানব সম্পদ উন্নয়ন।
২) ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন।
৩) লজিস্টিক সাপ্লাই বৃদ্ধি করণ।
৪) মেইটেইনেন্স এবং রিপেয়ার ওয়ার্ক দ্রুত করণ।
৫) জেলা হাসপাতালের জন্য বাজেট বৃদ্ধি করণ।
তাই প্রয়োজন প্রশাসনিক পুনর্গঠন, গতিশীল প্রশাসন এবং জেলা হাসপাতাল সমূহের জন্য তথা স্বাস্থ্য খাতে বাজেট বরাদ্দ বৃদ্ধি করণ। আর এর লক্ষ্য প্রশাসনিক কাঠামো পুনর্গঠনে আমি কিছু প্রস্তাব উপস্থাপন করছি।
*প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনাঃ*
জেলা সদর হাসপাতাল সমূহের প্রশাসনিক প্রধান হবেন একজন হাসপাতাল পরিচালক (ডাইরেক্টর) বা তত্বাবধায়ক।
একজন হাসপাতাল পরিচালক এর অধীনে একজন ডেপুটি ডাইরেক্ট এবং তিনজন এসিস্ট্যান্ট ডাইরেক্ট।
দায়িত্ব বন্টনঃ
১) ডিডিঃ ফাইনেন্স এন্ড প্রকিউরমেন্ট ও একোমডেশন (হাসপাতাল স্টাফদের জন্য বাসা বরাদ্দ)-এর জন্য রেস্পন্সিবল হবেন।
২) এডি - (ট্যাকনিক্যাল)ঃ ক্লিনিক্যাল স্টাফদের ডিউটি রোস্টার, ছুটি, ক্লিনিনেস, গার্ডেনিং, ট্রান্সপোর্ট এর জন্য রেস্পন্সিবল হবেন। ।
৩) এডি - (জেনারেল)ঃ নন-ক্লিনিক্যাল স্টাফদের ডিউটি রোস্টার, ছুটি, স্টোর, মেইটেইনেন্স (রিপেয়ার ওয়ার্ক, বায়োমেডিক্যাল ওয়ার্ক) এর জন্য রেস্পন্সিবল হবেন।
৪) এডি - রোগী কল্যাণ ও সমাজ সেবা ( Patients care & Social welfare). রোগীদের ইন্সুইরেন্স সার্ভিস, এম্বুলেন্স সার্ভিস, আর্থিক ভাবে দূর্বল রোগীদের সব ধরনের চিকিৎসা ব্যয় নির্বাহ করার বিষয় গুলো দেখ ভাল করবেন।
৫) মেট্রোনঃ স্টাফ নার্সদের রুটিন কাজগুলো তদারকি করবেন এবং তাদের ছুটি এবং অন্যান্য সুবিধাদি দেখাশোনা করবেন। তিনি এডি (টেকনিক্যাল)-এর নিকট জবাবদিহির আওয়াতায় থাকবেন।
৬) ওয়ার্ড মাস্টারঃ আয়া, ওয়ার্ড বয়, পরিচ্ছন্ন কর্মীদের ছুটি, ডিউটি রোস্টার তদারকি করবেন এবং এডি (জেনারেল) - এর নিকট দায়বদ্ধ থাকবেন।
*ক্লিনিক্যাল সার্ভিসঃ*
একটি হাসপাতালে মান সম্মত চিকিৎসা সেবা দেওয়া একটি টীম ওয়ার্ক। আর প্রতিটি টীমে চিকিৎসকবৃন্দ স্ব স্ব পদে নিজ দায়িত্ব পালনের সাথে সাথে এক একজন টীম লিডার কিংবা টীম কো-অর্ডিনেটর এর দায়িত্ব পালন করে থাকেন। নার্স এবং প্যারামেডিক্যাল স্টাফরা এক একজন টীম মেম্বারের মতো। সুতরাং মান সম্মত চিকিৎসা সেবা ডেলিভারি দিতে হলো প্রয়োজন ~ সকল টীম মেম্বারদের মাঝে Good co-ordination এবং Good service দেয়ার মনমানসিকতা।
এখানে আমি একটি সদর হাসপাতালে কি ধরনের চিকিৎসক ম্যান পাওয়ার থাকা উচিৎ সে সম্পর্কে বলার চেষ্টা করবো।
মান সম্মত চিকিৎসা সেবা পেতে নার্সিং স্টাফসহ অন্যান্য ক্লিনিক্যাল স্টাফ সমূহের পদ আনুপাতিক হারে বৃদ্ধি করতে হবে।
জেলা হাসপাতাল সমূহ মূলত তিন ধরণের ক্লিনিক্যাল সার্ভিস এবং সেই সাথে মেডিকো-লিগ্যাল কেস সমূহ পরিচালনা করবেন।
জেলা হাসপাতালে রোগীরা মূলত তিন ভাবে ক্লিনিক্যাল স্বাস্থ্যসেবা পাবেন এবং এছাড়াও নন-ক্লিনিক্যাল বা মেডিকো-লিগ্যাল সার্ভিস পাবেন। জেলা হাসপাতালের সার্ভিস সমূহঃ
১) জরুরী বিভাগ।
২) আউটডোর সার্ভিস।
৩) ইনডোর সার্ভিস।
৪) মেডিকো-লিগ্যাল সার্ভিস।
প্রসংগতঃ উল্লেখ্য, জরুরী বিভাগ, ইনডোর এবং আউটডোর সার্ভিসের মাঝে সমন্বয় থাকতে হবে।
জেলা হাসপাতালের বহিঃবিভাগে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হতে প্রেরিত সকল রেফার্ড রোগীর চিকিৎসা দিবে। রেফার্ড রোগী ছাড়া ওপিডিতে সরাসরি কোন রোগী দেখবেন না। তাছাড়া হাসপাতালে ভর্তিকৃত রোগী ডিসচার্জ হওয়ার পর এপয়েন্টমেন্ট সাপেক্ষে ফলোআপ চিকিৎসার জন্যও বহিঃবিভাগে চিকিৎসা পাবেন।
১) *জরুরী বিভাগঃ*
জরুরী বিভাগ ২৪ ঘন্টা খোলা থাকবে। ৩ শিফটে ইমার্জেন্সী বিভাগ পরিচালনা করা হবে। এজন্য প্রতিটি জেলা হাসপাতালে ৫-৬ জন ইমার্জেন্সী মেডিক্যাল অফিসারের (ইএমও) পদ সৃষ্টি করতে হবে। ইএমও-দের নেতৃত্বে নার্স এবং প্যারামেডিক স্টাফদের সমন্বয় গঠিত টীম সার্বক্ষনিক ইমার্জেন্সী রোগীদের স্বাস্থ্যসেবা দিবেন। এবং তাদের কাজে সহযোগিতা করার জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগের অন কল বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সার্বক্ষনিক সহযোগিতা করবেন এবং প্রয়োজনে ইমার্জেন্সিতে আসবেন।
উপজেলা হতে রেফার্ডকৃত রোগীরা সরাসরি জেলা হাসপাতালের জরুরী বিভাগে চিকিৎসার জন্য আগত এবং জরুরী বিভাগে সরাসরি আগত অন্যান্য ইমারজেন্সি কেস (রোগী) আসলে
ইএমও উক্ত রোগীর ~
ক) প্রাথমিক চিকিৎসা দিবেন, অথবা
খ) সংশ্লিষ্ট স্পেশালিষ্টকে কল করবেন অথবা
গ) সংশ্লিষ্ট স্পেশালিষ্টের অনুমোদন সাপেক্ষে উক্ত রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করে দিবেন। অথবা
ঘ) অন কলে থাকা সংশ্লিষ্ট স্পেশালিষ্ট যদি রোগীকে হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন মনে করেন তা হলে হাসপাতালের আন্তঃবিভাগে ভর্তি করে নিবেন।
তবে যদি উন্নত চিকিৎসার জন্য অধিকতর চিকিৎসা সুবিধা সম্বলিত হায়ার সেন্টার বা টারশিয়ারি হেলথ কেয়ার সেন্টার বা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করতে হয় সেক্ষেত্রে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট বিভাগের স্পেশালিষ্ট চিকিৎসক উক্ত রোগী এটেন্ড করে টারশিয়ারি কেয়ার হাসপাতালের বিশেষজ্ঞদের সাথে যোগাযোগ করে রেফার্ড করবেন ।
তাছাড়া হাসপাতালের অফিস আওয়ার শেষে ইনডোর এবং ইমার্জেন্সি ডিপার্টমেন্টের কাজ নির্বিঘ্ন করে পরিচালনার জন্য একজন এডি (টেকনিক্যাল / জেনারেল) সার্বক্ষণিক ভাবে ডিউটিতে থাকবেন।
*জেলা সদর হাসপাতালে অন্যান্য যে সব সেবা বা বিভাগের সার্ভিস থাকবে* তা হলোঃ
১) মেডিসিন।
২) সার্জারি
৩) অবস্ এন্ড গাইনী।
৪) শিশুস্বাস্থ্য এবং নিওন্যাটোললজি
৫) অর্থোপেডিক্স
৬) কার্ডিওলজি
৭) আই (চক্ষু বিভাগ)
৮) ইএনটি (নাক-কান-গলা)
উপরের বিভাগ সমূহে অন্তঃবিভাগ এবং বহিঃবিভাগ সার্ভিস চালু থাকবে।
৯) এনেস্থিসিয়া (রুটিন এবং ইমার্জেন্সি সার্ভিস )
১০) রেডিওলজি এন্ড ইমেজিং। (রুটিন এবং ইমার্জেন্সি সার্ভিস )
১১) প্যাথলজি এবং বায়ক্যামিস্ট্রি। (রুটিন এবং ইমার্জেন্সি সার্ভিস )
১২) সাইক্রিয়েট্রি
১৩) অনকলজি বা ক্যান্সার।
১৪) স্কিন এন্ড ভেনারেল ডিজিজ।
১৫) ফিজিওথেরাপি।
১৬) রিহ্যাবিলিটেশন এন্ড অকুপেশনাল হেলথ।
১৭) জেরিয়েট্রিক্স এবং হোম কেয়ার সার্ভিস।
১৮) ডেন্টাল ক্লিনিক।
১৯) ফরেনসিক এবং মেডিকো-লিগ্যাল উইংস্।
*ওপিডি সার্ভিস কেমন হওয়া প্রয়োজন।*
❇️❇️❇️
প্রসংগত উল্লেখ্য, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হতে রেফার্ডকৃত রোগীরা এপয়েন্টমেন্ট নিয়ে আউটডোর-এ চিকিৎসা নিবেন।
এবং পূর্বে উক্ত হাসপাতালে চিকিৎসা প্রাপ্ত রোগীরাই কেবল এপয়েন্টমেন্ট সাপেক্ষে জেলা সদর হাসপাতালের বহিঃবিভাগ হতে চিকিৎসা পাবেন।
পূর্ব এপয়েন্টমেন্ট ছাড়া বহিঃবিভাগে কোন রোগীকে চিকিৎসকরা চিকিৎসা দিবেন না।
আউটডোর সার্ভিস সম্পূর্ণভাবে কম্পিউটার বেইজড্ করতে হবে।
মেডিক্যাল ওপিডিতে কেমন সার্ভিস হতে হবেঃ
❇️❇️❇️❇️❇️❇️
মেডিসিন এর রোগীদের জন্য আলাদা রেজিষ্ট্রেশন কাউন্টারের প্রভিশন থাকতে হবে। যে কোন রোগী *রেজিষ্ট্রেশনের* সময় তিনটি তথ্য অবশ্যই রেকর্ড করতে হবে।
অ) নাম এবং বয়স।
আ) এনআইডি নম্বর (অথবা পাসপোর্ট নম্বর অথবা জন্মনিবন্ধন নম্বর)।
ই) মোবাইল নম্বর।।
এই তথ্যগুলো কম্পিউটারে সংরক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।।
*ওপিডি সার্ভিস*ঃ
মেডিক্যাল ওপিডিতে আগত মেডিসিন-এর রোগীদের জন্য আলাদা ভাইটাল স্ট্যাটিসটিকস রেকর্ড সেন্টার বা ট্রায়াজ থাকতে হবে।
মেডিসিন-এর রোগীরা রেজিষ্ট্রেশন করার পর
➡️ভাইটাল স্ট্যাটিসটিকস রেকর্ড করবেন এবং এরপর
➡️ সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের কাছে যাবেন। ভাইটাল স্ট্যাটিসটিকস রেকর্ড করা ছাড়া চিকিৎসকগণ আউটডোরে কোন রোগীর চিকিৎসা দিবেন না।
১) মেডিসিন ওপিডিঃ
ক) সিনিয়র মেডিক্যাল অফিসার (এসএমও)
পদ সংখ্যা নূন্যতম ৩ জন।
১ জন পুরুষ রোগীদের জন্য।
১ জন মহিলা রোগীদের জন্য।
১ জন ক্রনিক ডিজিজ এবং জেরিয়াট্রিক রোগী এবং ইনফেকশাস রোগী (টিবি, লেপ্রোসী)-দের জন্য।
খ) রেসিডেন্ট মেডিক্যাল অফিসারঃ (আরএমও)।
পদসংখ্যাঃ ১ জন। উনার দায়িত্ব হবে ২ ধরনের~
অ) ক্লিনিক্যাল এবং
আ) এডমিনিস্ট্রেটিভ।
অ) ক্লিনিক্যাল দায়িত্বঃ
★ এসএমও কর্তৃক রেফার্ডকৃত রোগীদের চিকিৎসা দেয়া।
★এসএমও কর্তৃক রেফার্ডকৃত রোগীদের চিকিৎসাদের মধ্য হতে প্রয়োজন সাপেক্ষে রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি করা।
★মেডিসিন স্পেশালিষ্ট কর্তৃক যে সব রোগীকে ভর্তির জন্য প্রেরণ করবেন তাদের ভর্তি করবেন।
আ) এডমিনিস্ট্রেটিভ দায়িত্বঃ
★হাসপাতালে ভর্তিকৃত এবং ডিসচার্জকৃত রোগীদের হিসাব রাখা।
★ইনডোর মেডিক্যাল অফিসার (আইএমও) এবং আউটডোর মেডিক্যাল অফিসার (এসএমও), ওনাদের ডিউটি রোস্টার, ছুটি প্রভৃতি বিষয় কো-অর্ডিনেট করা।
★নার্সদের ছুটি এবং ডিউটি রোস্টার তদারকি করা।
★মেডিক্যাল ইনডোর এবং আউটডোরে কর্মরত সকল তৃতীয় এবং চতূর্থ শ্রেণীর কর্মচারী (আয়া, ওয়ার্ডবয়, ক্লিনার)-১দের ডিউটি তদারকি করা, ডিউটি রোস্টার তদারকি করা, ছুটি এপ্রুভ এবং মনিটর করা।
গ) মেডিক্যাল স্পেশালিষ্টঃ
পদবিন্যাসঃ
❇️সিনিয়র কনসালটেন্ট
- পদ সংখ্যা ১ জন।
❇️ এসোসিয়েট কনসালটেন্ট
- ৩/৪ জন।
ঘ) কার্ডিওলজি ওপিডিঃ
কার্ডিওলজিস্ট - এসএমও, আরএমও (মেডিক্যাল) অথবা মেডিসিন স্পেশালিষ্ট কর্তৃক রেফার্ডকৃত রোগীদের সপ্তাহে নির্দিষ্ট দিনে রোগী দেখবেন।
গ) ★মেডিসিন স্পেশালিষ্টগণ বাই রোটেশন ওয়ার্ডে, আউটডোরে রোগী দেখবেন এবং একজন ইমার্জেন্সি অনকল থাকবেন।
★মেডিসিন স্পেশালিষ্টগণ বাই রোটেশন প্রতিদিন একজন ওপিডিতে অফিস টাইমে রোগীদের চিকিৎসা দিবেন,
★একজন মেডিসিন স্পেশালিষ্ট ইনডোরের ওয়ার্ড রাউন্ড দিবেন এবং ভর্তিকৃত রোগীদের চিকিৎসা দিবেন।
★একজন মেডিসিন স্পেশালিষ্ট ২৪ ঘন্টা অন কল্ থাকবেন।
★আর একজন মেডিসিন স্পেশালিষ্ট "ডে অফ" থাকবেন।
ওপিডিতে মেডিসিন স্পেশালিষ্টকে ওনার কাজে সহযোগিতার জন্যে আলাদা ভাবে একজন নার্স থাকবেন। নার্সের কাজ হবে রোগীদের সিরিয়াল মেইনটেইন করা, মেডিসিন স্পেশালিষ্ট-এর পরামর্শ অনুযায়ী রোগীদের পরবর্তী চিকিৎসার জন্য এপয়েন্টমেন্ট দেয়া।
কোন রোগী হায়ার সেন্টারে রেফার্ড করতে হলে মেডিসিন স্পেশালিষ্ট এর অনুমোদন লাগবে, মেডিসিন স্পেশালিষ্ট এর অনুমোদন ছাড়া কোন রোগী রেফার্ড করা যাবে না।
*সার্জিক্যাল ওপিডি সার্ভিস কেমন হওয়া প্রয়োজন* ।
❇️❇️❇️❇️❇️❇️
প্রসংগত উল্লেখ্য, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হতে সার্জারীর ওপিডিতে রেফার্ডকৃত এবং পূর্বে উক্ত হাসপাতালের সার্জারী বিভাগে চিকিৎসা প্রাপ্ত রোগীরাই কেবল এপয়েন্টমেন্ট সাপেক্ষে জেলা সদর হাসপাতালের সার্জারী বহিঃবিভাগ হতে চিকিৎসা পাবেন।
পূর্ব এপয়েন্টমেন্ট ছাড়া সার্জারী বহিঃবিভাগে কোন রোগীকে চিকিৎসকরা চিকিৎসা দিবেন না।
সার্জারী আউটডোর সার্ভিস সম্পূর্ণভাবে কম্পিউটার বেইজড্ করতে হবে।
*সার্জিক্যাল ওপিডির কেমন সার্ভিস হতে হবেঃ*
জেনারেল সার্জারী/ অর্থোপেডিক্স সার্জারী এবং আই ও ইএনটি বিভাগের রোগীদের জন্য আলাদা "রেজিষ্ট্রেশন কাউন্টারের" প্রভিশন থাকতে হবে।
যে কোন রোগী রেজিষ্ট্রেশনের সময় তিনটি তথ্য অবশ্যই রেকর্ড করতে হবে।
অ) নাম, বয়স এবং সেক্স।
আ) এনআইডি নম্বর (এনআইডি না থাকলে জন্মনিবন্ধন নম্বর অথবা পাসপোর্ট নম্বর)
ই) মোবাইল নম্বর।।
এই তথ্যগুলো কম্পিউটারে সংরক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।।
সার্জিক্যাল ওপিডিঃ
 
সার্জিক্যাল ওপিডিতে আগত রোগীদের (সার্জারী/অর্থোপেডিক্স/ আই/ ইএনটি-র) জন্য আলাদাভাবে একটি ভাইটাল স্ট্যাটিসটিকস রেকর্ড সেন্টার বা ট্রায়াজ থাকতে হবে।
সার্জারী/অর্থপেডিক্স/আই/ইএনটি-র রোগীরা রেজিষ্ট্রেশন করার পর
➡️ভাইটাল স্ট্যাটিসটিকস রেকর্ড করবেন এবং
এরপর
➡️ সংশ্লিষ্ট বিভাগের চিকিৎসকের কাছে যাবেন।
ভাইটাল স্ট্যাটিসটিকস রেকর্ড করা ছাড়া বহিঃবিভাগে কর্তব্যরত কোন চিকিৎসক আউটডোরে কোন রোগীর চিকিৎসা দিবেন না।
১) জেনারেল সার্জারি / অর্থপেডিক / আই/ ইনএনটি ওপিডিঃ প্রতিটি বিভাগের জন্য আলাদা আলাদা ওপিডি৷ থাকবে।
প্রতিটি বিভাগের ওপিডির অর্গানোগ্রাম ও কার্যক্রম মোটামুটি ভাবে একই রকম হবে বিধায় এক সাথে আলোচনা করছি। নিম্নে তা বর্ণিত হলো:
ক) সিনিয়র মেডিক্যাল অফিসার (এসএমও) (সার্জারি/ অর্থপেডিক্স / আই/ ইএনটি)
পদ সংখ্যা নূন্যতম ২ জন।
১ জন পুরুষ রোগীদের জন্য।
১ জন মহিলা রোগীদের জন্য।
খ) রেসিডেন্ট মেডিক্যাল অফিসারঃ (আরএমও)। (সার্জারি/ অর্থপেডিক্স / আই/ ইএনটি)
পদসংখ্যাঃ ১ জন।
উনার দায়িত্ব হবে ২ ধরনের~অ) ক্লিনিক্যাল এবং
আ) এডমিনিস্ট্রেটিভ।
অ) ক্লিনিক্যাল দায়িত্বঃ
★ এসএমও কর্তৃক রেফার্ডকৃত রোগীদের চিকিৎসা দেয়া।
★এসএমও কর্তৃক রেফার্ডকৃত রোগীদের চিকিৎসাদের মধ্য হতে প্রয়োজন সাপেক্ষে রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি করা।
★সার্জারি/অর্থোপেডিক্স / আই/ইএনটি স্পেশালিষ্ট কর্তৃক যে সব রোগীকে ভর্তির জন্য প্রেরণ করবেন তাদের ভর্তি করবেন।
★জরুরী বিভাগের সার্জিক্যাল অপারেশন করা।
আ) এডমিনিস্ট্রেটিভ দায়িত্বঃ
★হাসপাতালে ভর্তিকৃত এবং ডিসচার্জকৃত রোগীদের হিসাব রাখা।
★ইনডোর মেডিক্যাল অফিসার (আইএমও) এবং আউটডোর মেডিক্যাল অফিসার (এসএমও), ওনাদের ডিউটি রোস্টার, ছুটি প্রভৃতি বিষয় কো-অর্ডিনেট করা।
★সার্জারি/ অর্থপেডিক্স / আই/ ইএনটি বিভাগে কর্মরত নার্সদের ছুটি এবং ডিউটি রোস্টার তদারকি করা।
★সার্জারি/ অর্থপেডিক্স / আই/ ইএনটি ইনডোর এবং আউটডোরে কর্মরত সকল তৃতীয় এবং চতূর্থ শ্রেণীর কর্মচারী (আয়া, ওয়ার্ডবয়, ক্লিনার)-১দের ডিউটি তদারকি করা, ডিউটি রোস্টার তদারকি করা, ছুটি এপ্রুভ এবং মনিটর করা।
গ) সার্জারি/ অর্থপেডিক্স / আই/ ইএনটি স্পেশালিষ্টঃ
পদবিন্যাসঃ
❇️সিনিয়র কনসালটেন্ট
- পদ সংখ্যা ১ জন।
❇️ এসোসিয়েট কনসালটেন্ট
- ৩/৪ জন।
সার্জারি/ অর্থপেডিক্স / আই/ ইএনটি স্পেশালিষ্টগণ বাই রোটেশন ওয়ার্ডে, আউটডোরে রোগী দেখবেন এবং একজন ইমার্জেন্সি অনকল থাকবেন।
সার্জারি/ অর্থপেডিক্স / আই/ ইএনটি স্পেশালিষ্টগণ বাই রোটেশন
★প্রতিদিন একজন ওপিডিতে অফিস টাইমে রোগীদের চিকিৎসা দিবেন, ★একজন ইনডোরের ভর্তিকৃত রোগীদের চিকিৎসা দিবেন।
★একজন ২৪ ঘন্টা অন কল্ থাকবেন।
★ সপ্তাহে একদিন ওটি করবেন।
★আর একজন ডে অফ থাকবেন।
সার্জারি/ অর্থপেডিক্স / আই/ ইএনটি স্পেশালিষ্টকে ওনার কাজে সহযোগিতার জন্যে আলাদা ভাবে একজন নার্স থাকবেন। ওনার (সংশ্লিষ্ট নার্সের) দায়িত্ব হবে রোগীদের সিরিয়াল মেইনটেইন করা, সার্জারি/ অর্থপেডিক্স / আই/ ইএনটি
স্পেশালিষ্ট-এর পরামর্শ অনুযায়ী রোগীদের পরবর্তী চিকিৎসার জন্য এপয়েন্টমেন্ট দেয়া।
কোন রোগী রেফার্ড করতে হলে সংশ্লিষ্ট সার্জারি/ অর্থপেডিক্স / আই/ ইএনটি স্পেশালিষ্ট এর অনুমোদন লাগবে, সার্জারি/ অর্থপেডিক্স / আই/ ইএনটি
স্পেশালিষ্ট এর অনুমোদন ছাড়া কোন রোগীকে টারশিয়ারি কেয়ার সেন্টার বা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা যাবে না।

*অবস্ এন্ড গাইনী অন্তঃবিভাগঃ*
 
প্রতিটি জেলা সদর হাসপাতালে বা সেকেন্ডারী কেয়ার হাসপাতালে অবস্ এন্ড গাইনী বিভাগ একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং সংবেদনশীল বিভাগ। এই বিভাগে প্রতি নিয়ত বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে রোগীরা জরুরী বিভাগে এসে থাকেন। এবং তাৎক্ষণিক ভাবে রোগীকে চিকিৎসা দিতে হয়। একটুখানি বিলম্ব কিংবা দায়িত্বে অবহেলা হলে সেটা হতে পারে একটা পরিবারের সারা জীবনের কান্নার কারণ থবা অকালে ঝরে যেতে পারে একজন মা কিংবা একটি শিশুর জীবন। তাই এই বিভাগটিকে সচেতন ভাবে সাজাতে হবে।
অবস্ এন্ড গাইনী বিভাগের রোগীদের জরুরী সেবা ২৪ ঘন্টা নিশ্চিত করতে সার্বক্ষণিক ভাবে একজন আইএমও বাই রোটেশন অবস্ ইমার্জেন্সিতে ডিউটতে থাকবেন। তবে মর্নিং শিফটে ২-৩ জন আইএমও ডিটিতে থাকবেন। অবস জরুরী বিভাগের প্রয়োজনে আইএমও অন কলে থাকা গাইনী স্পেশালিষ্টকে কল্ করবেন বা তাঁর সাথে কনসাল্ট করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিবেন।
*অবস্ এন্ড গাইনী বহিঃবিভাগ* ।
 
অবস্ এন্ড গাইনী ওপিডি সার্ভিস কেমন হওয়া প্রয়োজন।
প্রসংগত উল্লেখ্য, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হতে অবস্ এন্ড গাইনী ওপিডিতে রেফার্ডকৃত এবং পূর্বে উক্ত হাসপাতালের অবস্ এন্ড গাইনী বিভাগে চিকিৎসা প্রাপ্ত রোগীরাই কেবল এপয়েন্টমেন্ট সাপেক্ষে জেলা সদর হাসপাতালের অবস্ এন্ড গাইনী
বহিঃবিভাগ হতে চিকিৎসা পাবেন।
পূর্ব এপয়েন্টমেন্ট ছাড়া অবস্ এন্ড গাইনী বহিঃবিভাগে কোন রোগীকে চিকিৎসকরা চিকিৎসা দিবেন না।
অবস্ এন্ড গাইনী আউটডোর সার্ভিস সম্পূর্ণভাবে কম্পিউটার বেইজড্ করতে হবে।
অবস্ এন্ড গাইনী ওপিডির কেমন সার্ভিস হতে হবেঃ
রেজিষ্ট্রেশন কাউন্টারের":
অবস্ এন্ড গাইনী বিভাগের রোগীদের জন্য আলাদা "রেজিষ্ট্রেশন কাউন্টারের" প্রভিশন থাকতে হবে।
যে কোন রোগী রেজিষ্ট্রেশনের সময় তিনটি তথ্য অবশ্যই রেকর্ড করতে হবে।
অ) নাম, বয়স এবং সেক্স। আ) এনআইডি নম্বর (এনআইডি না থাকলে জন্মনিবন্ধন নম্বর অথবা পাসপোর্ট নম্বর) ই) মোবাইল নম্বর।।
এই তথ্যগুলো কম্পিউটারে সংরক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।।
অবস্ এন্ড গাইনী ওপিডিতে আগত রোগীদের জন্য আলাদাভাবে একটি ভাইটাল স্ট্যাটিসটিকস রেকর্ড সেন্টার বা ট্রায়াজ থাকতে হবে।
অবস্ এন্ড গাইনী রোগীরা রেজিষ্ট্রেশন করার পর
➡️ভাইটাল স্ট্যাটিসটিকস রেকর্ড করবেন এবং
এরপর
➡️ সংশ্লিষ্ট বিভাগের চিকিৎসকের কাছে যাবেন।
ভাইটাল স্ট্যাটিসটিকস রেকর্ড করা ছাড়া বহিঃবিভাগে কর্তব্যরত কোন চিকিৎসক আউটডোরে কোন রোগীর চিকিৎসা দিবেন না।
১) অবস্ এবং গাইনী ওপিডিঃ প্রতিটি বিভাগের জন্য আলাদা আলাদা ওপিডি থাকবে।
প্রতিটি বিভাগের ওপিডি কিভাবে কাজ করবেন তা আলোচনা করছি। নিম্নে তা বর্ণিত হলো:
ক) সিনিয়র মেডিক্যাল অফিসার (এসএমও) (অবস্ এন্ড গাইনী)
পদ সংখ্যা নূন্যতম ২ জন।
১ জন অবস রোগীদের জন্য।
১ জন গাইনী রোগীদের জন্য।
খ) রেসিডেন্ট মেডিক্যাল অফিসারঃ (আরএমও)। (অবস এন্ড গাইনী )
পদসংখ্যাঃ ১ জন।
উনার দায়িত্ব হবে ২ ধরনের~অ) ক্লিনিক্যাল এবং
আ) এডমিনিস্ট্রেটিভ।
অ) ক্লিনিক্যাল দায়িত্বঃ
★ এসএমও কর্তৃক রেফার্ডকৃত রোগীদের চিকিৎসা দেয়া।
★এসএমও কর্তৃক রেফার্ডকৃত রোগীদের চিকিৎসাদের মধ্য হতে প্রয়োজন সাপেক্ষে রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি করা।
★অবস্ এন্ড গাইনী স্পেশালিষ্ট কর্তৃক যে সব রোগীকে ভর্তির জন্য প্রেরণ করবেন তাদের ভর্তি করবেন।
★অবস্ জরুরী বিভাগের সার্জিক্যাল অপারেশন করা।
আ) এডমিনিস্ট্রেটিভ দায়িত্বঃ
★হাসপাতালে ভর্তিকৃত এবং ডিসচার্জকৃত রোগীদের হিসাব রাখা।
★ইনডোর মেডিক্যাল অফিসার (আইএমও) এবং আউটডোর মেডিক্যাল অফিসার (এসএমও), ওনাদের ডিউটি রোস্টার, ছুটি প্রভৃতি বিষয় কো-অর্ডিনেট করা।
★অবস্ এন্ড গাইনী বিভাগে কর্মরত নার্সদের ছুটি এবং ডিউটি রোস্টার তদারকি করা।
★অবস্ এন্ড গাইনী বিভাগের ইনডোর এবং আউটডোরে কর্মরত সকল তৃতীয় এবং চতূর্থ শ্রেণীর কর্মচারী (আয়া, ওয়ার্ডবয়, ক্লিনার)-১দের ডিউটি তদারকি করা, ডিউটি রোস্টার তদারকি করা, ছুটি এপ্রুভ এবং মনিটর করা।
গ) অবস্ এন্ড গাইনী বিভাগে
পদবিন্যাসঃ
 সিনিয়র কনসালটেন্ট
- পদ সংখ্যা ১ জন।
  এসোসিয়েট কনসালটেন্ট
- ৩/৪ জন।
অবস্ এন্ড গাইনী বিভাগে
স্পেশালিষ্টগণ বাই রোটেশন ওয়ার্ডে, আউটডোরে রোগী দেখবেন এবং একজন ইমার্জেন্সি অনকল থাকবেন।
অবস্ এন্ড গাইনী বিভাগের স্পেশালিষ্টগণ বাই রোটেশন
★প্রতিদিন একজন ওপিডিতে অফিস টাইমে রোগীদের চিকিৎসা দিবেন,
★একজন ইনডোরের ভর্তিকৃত রোগীদের চিকিৎসা দিবেন।
★একজন ২৪ ঘন্টা অন কল্ থাকবেন।
★ সপ্তাহে একদিন ওটি করবেন।
★আর একজন ডে অফ থাকবেন।
অবস্ এন্ড গাইনী বিভাগে স্পেশালিষ্টকে ওনার বহিঃ - বিভাগে কাজে সহযোগিতার জন্যে আলাদা ভাবে একজন নার্স থাকবেন। ওনার (সংশ্লিষ্ট নার্সের) দায়িত্ব হবে রোগীদের সিরিয়াল মেইনটেইন করা, সংশ্লিষ্ট অবস্ এন্ড গাইনী বিভাগে স্পেশালিষ্ট-এর পরামর্শ অনুযায়ী রোগীদের পরবর্তী চিকিৎসার জন্য এপয়েন্টমেন্ট দেয়া।
যে কোন রোগী হায়ার সেন্টারে রেফার্ড করতে হলে সংশ্লিষ্ট অবস্ এন্ড গাইনী বিভাগে স্পেশালিষ্ট এর অনুমোদন লাগবে, অবস্ এন্ড গাইনী বিভাগের
স্পেশালিষ্ট এর অনুমোদন ছাড়া কোন রোগীকে টারশিয়ারি কেয়ার সেন্টার বা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা যাবে না।
*শিশুস্বাস্থ্য বিভাগঃ*
----------------------------
শিশু বিভাগে মূলতঃ চারটি ক্লিনিক থাকবে। বিভাগ গুলো হলোঃ
১) নিউন্যাটাল এন্ড আন্ডার ফাইভ ক্লিনিক।
২) ভ্যাক্সিনেশন এবং স্কুল হেলথ ক্লিনিক।
৩) ৫ বছরের বেশী বয়সের শিশুদের জন্য ক্লিনিক।
৪) চাইল্ড উইথ স্পেশাল নিড ক্লিনিক।
শিশু বিভাগের বাচ্চাদের ভাইটাল চেক করার জন্য আলাদা ট্রায়েজ সেন্টার থাকবে।
ভাইটাল স্ট্যাটিসটিকস রেকর্ড করা হলে রোগীকে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের কাছে পাঠাতে হবে।
শিশুস্বাস্থ্য বিভাগের পদ বিন্যাসঃ
১) কনসাল্টেন্টঃ ১ জন। এবং
২) এসোসিয়েট কনসালটেন্ট বা শিশুস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞঃ ৩-৪ জন।
৩) আরএমও (শিশুস্বাস্থ্য): ১ জন।
৪) এসএমও (শিশুস্বাস্থ্য): ৩-৪ জন।
শিশুস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকগণ বাই রোটেশন প্রতিদিন একজন ওয়ার্ড রাউন্ড দিবেন,
২ জন ওপিডিতে শিশু রোগীদের চিকিৎসা দিবেন, একজন ২৪ ঘন্টা অনকল থাকবেন এবং
একজন ডে-অফ পাবেন।
*সাইক্রিয়েট্রিক, স্কিন ডিজিজ-এর আউটডোর সার্ভিস এবং পদ বিন্যাশঃ*
--------------------------
সাইক্রিয়েট্রিক, স্কিন এবং ভেনারেল ডিজিজ-এর রোগীরা মেডিসিন বিভাগের ট্রায়েজ কর্নারে ভাইটালস্ চেক করে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের রুমে প্রবেশ করবেন।
প্রতিটি বিভাগে~
১) কনসালটেন্ট - ১ জন।
২) এসোসিয়েট কনসালটেন্ট - ১ জন।
৩) এসএমও (সাইক্রিয়েট্রি/স্কিন ডিজিজ)।
উনারা মূলত আউটডোর সার্ভিস দিবেন। তবে প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে এই বিভাগের রোগীদের চিকিৎসার জন্য মেডিসিন ওয়ার্ডে ২-৩ টি শয্যা সংরক্ষিত থাকবে।
*চক্ষু বিভাগ এবং নাক-কান বিভাগঃ*
চক্ষু বিভাগ এবং নাক-কান বিভাগে আগত রোগীরা সার্জারী বিভাগের ট্রায়েজ কর্নারে ভাইটালস্ চেক করে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের রুমে প্রবেশ করবেন।
পদ বিন্যাসঃ
চক্ষুএবং ইএনটি বিভাগ সমূহের প্রতিটিতে ~
১) কনসালটেন্টঃ ১ জন।
২) এসোসিয়েট কনসালটেন্টঃ ২ জন।
৩) এসএমও (চক্ষু/ইএনটি) - ২ জন করে নিয়োগ দিতে হবে।
চক্ষু/ইএনটি বিভাগের স্পেশালিষ্টগণ বাই রোটেশন একজন ওয়ার্ড রাউন্ড দিবেন, একজন ওপিডি-তে রোগী দেখবেন এবং একজন ইমার্জেন্সি অন কল থাকবেন এবং একজন ডে-অফ পাবেন। প্রতি সপ্তাহে অন্ততঃ দুইদিন চোখের/ নাক-কান-গলার রোগীদের রুটিন অপারেশন পরিচালনা করবেন। চোখের/নাক-কান-গলার রোগীদের মধ্য হতে কমপ্লিকেটেড কেস এবং একাডেমিক কেস সমূহ টারশিয়ারি কেয়ার হাসপাতালে রেফার্ড করবেন।
*ওটি ব্যবস্থাপনাঃ*
----------------------------
সুষ্ঠু ভাবে চিকিৎসা নিশ্চিত করতে মান সম্মত এবং পর্যাপ্ত অপারেশন থিয়েটরের সুবিধা থাকা বাঞ্ছনীয়।
জেনারেল সার্জারী, অর্থপেডিক সার্জারী এবং গাইনী এন্ড অবস্ বিভাগের জন্য আলাদা আলাদা ওটির ব্যবস্থা করতে হবে। সে জন্য ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন করতে হবে, প্রয়োজনীয় লজিস্টিক সাপ্লাই নিশ্চিত করতে হবে এবং পর্যাপ্ত স্টাফ পদ সৃষ্টি করে পদায়ন করতে হবে ও পর্যাপ্ত স্টাফ পদায়ন করতে হবে।
আই এবং ইএনটি বিভাগের জন্য আলাদা একটি ওটির ব্যবস্থা করতে হবে সেজন্য প্রয়োজনীয় লজিস্টিক সাপ্লাইয়ের ব্যবস্থা করতে হবে ও লোকবল নিয়োগ করতে হবে।
একটি ওটি ব্যবহার করে আই এবং ইএনটির রোগীদের জন্য একদিন পরপর রুটিন অপারেশন এর ব্যবস্থা করতে হবে।
*অনকলজি বা ক্যান্সারের চিকিৎসাঃ*
পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে সাম্প্রতিক সময়ে আমাদের দেশে ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীদের সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। অথচ কোন রোগীর ক্যান্সার যদি প্রাথমিক পর্যায়ে যদি রোগ সনাক্ত করা সম্ভব হয় তা হলে আমরা মরবিডিটি এবং মর্টালিটির রেট হ্রাস পাবে। আমরা যদি ক্যান্সার রোগীকে আর্লি ডিটেক্ট করতে পারি তাহলে~ ১) রোগীর চিকিৎসা ব্যয় কমাতে পারবো,
২) ক্যানসার আক্রান্ত রোগীদের রোগের জটিলতা বা কমপ্লিকেশন কমাতে পারি।
৩) ক্যানসার আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য বিদেশগামীতা কমাতে পারি। আর এভাবে বিদেশি মুদ্রা সাশ্রয় করতে পারি।
পদ বিন্যাসঃ
১) কনসালটেন্টঃ ১ জন।
২) এসোসিয়েট কনসালটেন্টঃ ১ জন।
৩) এসএমওঃ ১ জন।
জেলা পর্যায়ে যে সব ক্যান্সার রোগী স্ক্রিনিং করা সম্ভব তা হলোঃ
১) ব্রেস্ট ক্যান্সার।
২) কলোন ক্যান্সার। (FIT Test)
৩) প্রস্টেট ক্যান্সার।
*রেডিওলজি এন্ড ইমেজিং:*
-------------------------------------
সঠিকভাবে রোগ নির্নয়ের ক্ষেত্রে রেডিওলজি এন্ড ইমেজিং বিভাগের গুরুত্ব অপরিসীম। তাই এই বিভাগকে ঢেলে সাজাতে হবে।
পর্যাপ্ত সংখ্যক রেডিওলজিস্ট এবং সনোলজিস্ট-এর পদ সৃষ্টি করতে হবে এবং আনুপাতিক হারে রেডিওগ্রাফারের পদও বৃদ্ধি করতে হবে।
পদবিন্যাসঃ
কনসালটেন্টঃ ২ জন।
এসোসিয়েট কনসালটেন্টঃ ৩-৫ জন।
দায়িত্ব ভারঃ
রেডিওলজিঃ প্রতিটি জেলা হাসপাতালে আধুনিক সুবিধা সম্বলিত ডায়াগনস্টিক টুলস্ সুবিধা বৃদ্ধি করতে হবে। প্রতিটি জেলা হাসপাতালে ~
১) এক্সরে মেশিনের পাশাপাশি
২) সিটি স্ক্যান মেশিন এবং
৩) এমআরআই মেশিন নিশ্চিত করতে হবে।
রুটিন টেস্টের পাশাপাশি ইমার্জেন্সী ক্ষেত্রেও রোগীরা যেনো এই সার্ভিস পায় সেই ব্যবস্থা করতে হবে।
*আল্ট্রাসনোগ্রাফিঃ*
আউটডোর এর সময় মেডিসিন, সার্জারী, অবস্ এন্ড গাইনী বিভাগের রোগীদের জন্য রুটিন আল্ট্রাসাউন্ড পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। উল্লেখ্য, আল্টাসনোগ্রাফি করার জন্য রোগীরা এপয়েন্টমেন্ট নিয়ে ক্লিনিকে আসবপন। লক্ষ্য রাখতে হবে, এপয়েন্টমেন্ট এর কারণে রোগীরা যেনো অযথা হয়রানীর শিকার না হন।
সেই সাথে ২৪ ঘন্টা ইমার্জেন্সী রোগীদের চিকিৎসার ক্ষেত্রে আল্ট্রসনোগ্রাফী করার ব্যবস্থা করতে হবে।
*প্যাথলজি এন্ড মাইক্রোবায়লজিঃ*
প্রতিটি জেলা হাসপাতালে আধুনিক সুবিধা সম্বলিত ডায়াগনস্টিক সেন্টার স্থাপন করতে হবে। ক্লিনিক্যাল প্যাথলজির পাশাপাশি বায়োকেমিস্ট্রি এবং মাইক্রোবালজি টেস্ট এর আধুনিক সুবিধাদি থাকতে হবে।
পদ বিন্যাসঃ
১) এসএমও (ক্লিনিক্যাল প্যাথলজি)
২) এসএমও (বায়োকেমিস্ট্রি)
স্পেশালিষ্টঃ
১) কনসাল্টেন্ট - প্যাথলজি- ১ জন।
২) কনসালট্যান্ট - মাইক্রোবায়লজি - ১ জন।
৩) এসোসিয়েট কনসাল্টেন্ট - (প্যাথলজি) - ১ জন।
৪) এসোসিয়েট কনসালট্যান্ট - (মাইক্রোবায়লজি) - ১ জন।
আউটডোর সার্ভিসের সময় রুটিন ইনভেস্টিগেশন এর পাশাপাশি ২৪ ঘন্টার জন্য সিলেকটিভ কিছু টেস্ট ইমার্জেন্সি রোগীদের জন্য করার ব্যবস্থা থাকতে হবে। যেমনঃ সাসপেক্টেড এপেন্ডিসাইটিস এর রোগীর জন্য সিবিসি, হাই ফিভারের রোগীর জন্য ব্লাড ফর এমপি, চেস্ট পেইন এর রোগীদের জন্য ট্রপোনিন টেস্ট ইত্যাদি।
*ব্লাড ব্যাংকঃ*
প্রতিটি জেলা হাসপাতালে আধুনিক সুবিধা সম্বলিত একটি স্বতন্ত্র এবং স্বয়ং সম্পূর্ণভাবে পরিচালিত ব্লাড ব্যাংক থাকতে হবে।
পদ বিন্যাসঃ
কনসালটেন্টঃ ১ জন।
এসোসিয়েট কনসালটেন্টঃ ১জন।
এসএমওঃ ১ জন।
ব্লাড ব্যাংক ২৪ ঘন্টা চালু / খোলা থাকবে এবং সেই লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সংখ্যক অন্যান্য স্টাফ পদায়ন করতে হবে এবং লজিস্টিক সাপ্লাই নিশ্চিত করতে হবে।
*মেডিকো-লিগ্যাল উইং এবং মেরিজ কাউন্সিলিং*
★এসল্ট বা মারামারির কেস, পয়জনিং, রেপ, আত্মহত্যা, অস্বাভাবিক মৃত্যু, পোস্ট মর্টেম প্রভৃতি ইস্যুজ গুলোই মেডিকো-লিগ্যাল ইস্যুজ।
★মেরিজ কাউন্সিলিং:
★ পোস্ট মোর্টেমঃ
প্রতিটি জেলা হাসপাতালে সুদীর্ঘ সময় হতে চিকিৎসক গণ আন-ন্যাচারাল ডেথ বা আন-নোন ডেড বডি কিংবা পুলিশ কেস এর ক্ষেত্রে পোস্ট মর্টেম বা সুরত হাল রিপোর্ট করে আসছেন। মেডিকো-লিগ্যাল ইস্যুর ক্ষেত্রে চিকিৎসকের এই রিপোর্টটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় এ বিষয়টি পেশাগত ভাবে আজও তেমন গুরুত্ব সহ বিবেচিত হয় নি। সদর হাসপাতালের আরএমও অথবা সদর হাসপাতালের ইএমওগণ সাধারণত নিজ দায়িত্বের অতিরিক্ত এই দায়িত্বটি পালন করে থাকেন। তবে বিষয়টির গুরুত্ব বিবেচনা করে এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ অথবা এ বিষয়ে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চিকিৎসকদের নিয়োগ দিয়ে আলাদা একটি *ফরেনসিক বিভাগ* খোলা আবশ্যক বলে চিকিৎসকগণ মনে করেন।
*প্রি-মেরিটাল কাউন্সলিংঃ*
হিমোগ্লোবিনোপ্যাথি এবং এইচআইভি হতে কমপ্লিকেশন পরিহার করার জন্য থসালাসিমিয়া, সিকেল-সেল এনিমিয়া ক্যারিয়ার অথবা এইচআইভি পজিটিভ রোগীদের বিবাহের পূর্বে প্রি-ম্যারিটাল কাউন্সিলিং এর জন্যও ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদেরকে দায়িত্ব দেয়া যেতে পারে।
*রিহ্যাবিলিটেশন এবং অকুপেশনাল হেলথঃ এ বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে।
*মর্নিং সেশনঃ*
প্রতিদিন সকাল ৮:০৫ মিঃ হতে ৮:২৫ মিঃ এ হাসপাতালের সেবার মান উন্নত করতে, পারস্পরিক কমিউনিকেশন বৃদ্ধি এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে প্রতিদিন সকালে হাসপাতালের মিটিং কক্ষে একটি *মর্নিং সেশন* করতে হবে। যাতে করে লাস্ট ২৪ ঘন্টায় কতজন রোগী ভর্তি হয়েছে, কতজন রোগী রেফার্ড করা হয়েছে এবং যদি কোন রোগীর মৃত্যু হয়ে তা হলে তার হিসাব তুলে ধরবেন। উক্ত পরিসংখ্যান সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় প্রধান উপস্থাপন করবেন।
উক্ত রিভিও মিটিং এ হাসপাতাল ডাইরেক্টরসহ সকল স্পেশালিষ্ট, ইএমও, আইএমও এবং এমও (ওপিডি) অর্থাৎ সর্ব স্তরের চিকিৎসকগণ উপস্থিত থাকবেন। মিটিংটি ১৫ থেকে ২০ মিনিটের মধ্যে শেষ করতে হবে।এভাবে স্বাস্থ্য খাতকে ঢেলে সাজালে জনগণ ইস্পিত সেবা পাবে #

আপনার মতামত দিন:


মানুষের জন্য এর জনপ্রিয়