Ameen Qudir

Published:
2017-02-16 16:12:51 BdST

দুই আইনি খসড়ার গোলক ধাঁধায় এখন চিকিৎসকরা


 

 

 


ডা. বাহারুল আলম
_____________________________

‘আইন কমিশন’ ও ‘স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়’ রাষ্ট্রের দুটি ভিন্ন পর্যায় থেকে রোগী ও চিকিৎসক সুরক্ষার নামে ‘চিকিৎসা সুরক্ষা আইন/ স্বাস্থ্য সেবা আইন’ নামে দু’টি খসড়া আইন ওয়েবসাইটে মতামতের জন্য আকাশের ঠিকানায় ঘুরে বেড়াচ্ছে।

এর পূর্বে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ‘বেসরকারি স্বাস্থ্য সেবা আইন’ নামে একটি খসড়া কেন্দ্রীয় বিএমএ-র হাত ধরে সকল শাখা বিএমএ-তে পৌঁছায়। সরকার এবার কিছু একটা করছে বলে ফলাও করে প্রচার মাধ্যমে প্রকাশিত হয়।

 

 

চিকিৎসকদের আপত্তির মুখে সেটি কোথায় যেন হারিয়ে গেল !আবারো মন্ত্রী/মন্ত্রণালয় বেসরকারি শব্দটি বাদ দিয়ে ‘চিকিৎসা সেবা আইন ২০১৬’ এর খসড়া চিকিৎসকদের বাজারে বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে ছেড়ে দেয়। বাজার ভীষণ মন্দা কেউ কিনতে চায় না , খেতেও চায় না।

চিকিৎসকদের ভীষণ গোস্বা , মন্ত্রী মহোদয় আমাদের এত ভালবাসেন, তবুও কে বা কারা তাকে দিয়ে এ খারাপ কাজটি করিয়ে নিল যে – খসড়া আইনের সবগুলো ধারাই চিকিৎসক নিবর্তনের জন্য প্রণীত।
এখন খসড়া আইনের মতামত দিতে গিয়ে আত্মরক্ষার আতংকে তারা বিভোর।

 

 

অপরদিকে ‘আইন কমিশন’ স্বপ্নে পাওয়া / যথাযথ কর্তৃপক্ষের আদেশে / স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে (কোনটি সত্য জানা নাই) আরেকটি ‘স্বাস্থ্য সেবা আইন ২০১৬’ ওয়েব সাইটের মাধ্যমে চিকিৎসক সহ গন-বাজারে ছেড়েছে । এ আইনের খসড়া বিএমডিসি-কে উপেক্ষা করে পাশ কাটিয়ে/ কবর দিয়ে প্রস্তুত করা হয়েছে। পড়লে মনে হবে, এ কোন যমদূতের আগমন ঘটলো?

 

 

রাষ্ট্রের খোদ স্বাস্থ্য বিষয়ক মন্ত্রী সেটি জানেন না। বিএমএ-র উপস্থিতিতে আইন কমিশনের বিষয়ে ‘খেদোক্তি’ উচ্চারণ করেছেন রাষ্ট্রের স্বাস্থ্য বিষয়ক মন্ত্রী। রাষ্ট্রের স্বাস্থ্য বিষয়ক আইন অথচ কি অবাক কাণ্ড আমাদের স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানেন না- আমরা কোন দেশে আছি!
রাষ্ট্রের কর্ণধার/ অভিভাবকদের প্রতি অনুরোধ , এ বিষয়ে দৃষ্টি না দিলে খসড়া আইনের সাংঘর্ষিক জট সৃষ্টি হয়ে যাবে। নীতির বিভ্রান্তে পড়ে যাবে রোগী ও চিকিৎসক।

 

 

কোনটি গ্রহণ করবে আর কোনটি পরিহার করবে - এ গোলক ধাঁধায় পড়েছে এখন চিকিৎসকরা।
আইন কমিশনের উদ্যোগের বিরুদ্ধে মন্ত্রী ও বিএমএ এক সুরে কথা বলছে।

তাহলে, আইন কমিশনের অভিভাবক কে বা কারা ? নাকি স্বয়ংক্রিয় ? যে-ই হন কেন – যে খসড়া প্রকাশ করেছেন তাতে সুরক্ষা , প্রতিরক্ষা এসবের অত্যাচারে চিকিৎসকরা এখন আত্মরক্ষায় মগ্ন। আর ভাল চায় না আপনাদের কাছ থেকে । কেবল নিরাপত্তা, অধিকার ও মর্যাদা নিয়ে বাঁচতে চায়। মনে রাখবেন চিকিৎসকদের পেশাগত সকল নিরাপত্তা , অধিকার কেবল রোগীদের জন্য , কোনটিই তাদের ব্যক্তি প্রয়োজনে নয়। চিকিৎসকরা ভাল থাকলেই রোগী ভাল থাকবে।

______________________________

ডা. বাহারুল আলম । প্রখ্যাত পেশাজীবী নেতা। সুবক্তা।সুলেখক । চিকিৎসক স্বার্থরক্ষায় সদাসক্রিয়।

আপনার মতামত দিন:


মানুষের জন্য এর জনপ্রিয়