Ameen Qudir
Published:2017-02-15 14:48:22 BdST
ভালবাসা দিবস নিয়ে এক পুলিশ কর্মকর্তার অনবদ্য নিরপেক্ষ লেখা
মডেল ছবি।
ডাক্তার প্রতিদিন
____________________________
ইফতেখায়রুল ইসলাম । একজন সদা কর্মতৎপর তরুণ পুলিশ কর্মকর্তা। জনসেবী । লোকসেবাই তার ব্রত। ভালবাসা দিবস নিয়ে তিনি নিরপেক্ষভাবে চমৎকার তার বক্তব্য তুলে ধরেছেন। পাঠকদের দরবারে তা পেশ করা হল।
ইফতেখায়রুল ইসলাম __________________________
আজ "বিশ্ব ভালবাসা দিবস"।
ইংরেজিতে " Happy Valentine's Day" মজার বিষয় হচ্ছে, যে ভ্যালেন্টাইনকে নিয়ে এ দিবস তাকে নিয়ে এখন পর্যন্ত সুস্পষ্ট কোন ধারণা নেই!!!
অর্থাৎ তিনি আসলে কে? সেটিই পরিস্কার নয়!!
ক্যাথলিক এনসাইক্লোপিডিয়া অনুসারে ৩ জন ভ্যালেন্টাইন এর অস্তিত্ব লক্ষ্য করা যায় ১ম জন: একজন প্রিস্ট
২য় জন: একজন বিশপ এবং ৩য় জন: একজন শহীদ, যদিও তাকেও সেইন্ট বলা হচ্ছে!!
আসা যাক পটভূমিতে :
তৃতীয় শতাব্দীতে রোম সম্রাট ক্লডিয়াস(II) তার সেনাবাহিনীতে সম্পর্কহীন যুবকদের অংশগ্রহন চাচ্ছিলেন, কিন্তু সফল হচ্ছিলেননা, কেননা প্রত্যেকে যুবকই কোন না কোন সম্পর্কে আবদ্ধ ছিল!! এতে তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে একটি ডিক্রি জারি করেন যে যুবকেরা কেউ বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হতে পারবেনা!!
ক্লডিয়াস এমনিতেই নির্দয় ছিলেন, তার এ সিদ্ধান্ত কেহই মন থেকে মেনে নেননি!! এই কালো নির্দেশনার বিরুদ্ধে মৌন প্রতিবাদ জানিয়ে ভ্যালেন্টাইন অথবা ভ্যালেন্টিনাস গোপনে যুবক যুবতীদের বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ করাতেন, যেটি জানাজানি হয়ে গেলে ভ্যালেন্টাইনকে জেলে প্রেরন করা হয়!!
এই অংশেও মতদ্বৈততা রয়েছে!!!! (কী অদ্ভূত) প্রাচীন কেউ কেউ বলে থাকেন, রোমানরা যখন খ্রিস্টানদের উপর নির্মম অত্যাচার করছিল, ভ্যালেন্টাইন তখন খ্রিস্টানদের পালাতে সাহায্য করেছিল, যার জন্য তাকে জেলে প্রেরন করা হয়!!
জেলে এসে ভ্যালেন্টাইন জেলরের তরুনী মেয়ের প্রেমে পড়েন! তাকে যখন মৃত্যুদন্ডাদেশ দেয়া হয়, তা কার্যকর হওয়ার পূর্বে তিনি তার প্রিয় তরুনীকে সর্বশেষ নোটটি লিখে যান, যার শেষাংশ ছিল "ফ্রম ইউর ভ্যালেন্টাইন"
এখানে আবার আরেকটি সমস্যা দেখা দেয়, মৃত্যুদন্ড কার্যকর হওয়ার সময়টি উৎসবের রুপ কীভাবে পেল তবে?! প্রাচীন সময়ে একটি উৎসব উদযাপিত হতো "লুপারক্যালিয়া" নামে "যা সকল শয়তানী অথবা কুমন্ত্রণা থেকে জনসাধারনকে রক্ষা করতো এবং সমৃদ্ধি আনতো কৃষি ক্ষেত্রে" বলে ধারণা করা হতো!! এই উৎসব উদযাপিত হতো ফেব্রুয়ারি মাসের ১১-১৪ তারিখ পর্যন্ত। সবচেয়ে শক্তিশালী ধারণা হিসেবে প্রতীয়মান হয় যে এই উৎসবের সাথে মিল রেখেই ভ্যালেন্টাইন'স ডে ১৪ তারিখ নির্ধারণ করা হয়!! :)
দিবসটি পালনের স্বপক্ষে যুক্তি :) ::
একটি দিন যা অজস্র মতদ্বৈততার সমন্বয়ে গঠিত, ইউরোপ, এ্যামেরিকার ব্যবসার দ্বারকে করেছে সমুজ্জ্বল!! যাই হোকনা কেন, যদি পাশ্চাত্য ঢংয়ে পালন না করে, নিজস্ব সংস্কৃতির আদলে শালীনতার মিশেলে পালন করা যায়, তাহলে দোষের কিছু দেখছিনা! সাংস্কৃতিক অভিযোজনতো প্রতিনিয়তই ঘটছে :)! একটি দিন সকলের জন্য ভালবাসার দিনই নয়তো হলো! খুব সমস্যা কী হয়ে যাবে!! আড়ালে ভিন্ন কোনো দিনে অসংগতিপূর্ণ ঘটনাও কিন্তু ঘটছে।!!! :)
:) দিবস পালনে বিপক্ষে যুক্তি::
একটি দিবসের আগে পেছনে এত অসংগতি, কী লাভ পালন করে:)?!
নিরপেক্ষ মতামত:)::
আপনার ইচ্ছা পালন করুন অথবা না করুন!! কোনটা করতেই আপনি বাধ্য নন!! তবে পালন করলে নিজ সংস্কৃতিকে মাথায় রেখে করুন!! আমাদের ছোট বড় ব্যবসায়ীরা কিছুটা লাভবানও কিন্তু হচ্ছেন :)!! আর পালন না করলে বলবো জ্ঞান বিতরণে যাবেননা প্লিজ, আপনার জ্ঞান খুব বেশি কেউ গ্রহণ করবেনা বলে মনে হয়, সময়টা মুক্তবাজার অর্থনীতির রে ভাই!!! আমি কোন মতের সেটি নাইবা জানলেন ।
__________________________
ইফতেখায়রুল ইসলাম । সুলেখক। তরুণ জনসেবী পুলিশ কর্মকর্তা। এএসপি । এক হারিয়ে যাওয়া শিশুকে তার মায়ের ফিরিয়ে দেয়ার মুহূর্তে তোলা ছবি।
আপনার মতামত দিন: