SAHA ANTAR
Published:2021-11-30 22:55:44 BdST
২৩ বছর ধরে বিদ্যার্থী কল্যাণী সেতু নিজের হাত দিয়ে পরিষ্কার করে চলেছেন এই হেড মাস্টার
মানবিক প্রতিবেদন
___________________
ছবি তিনটি ভালো করে দেখুন।
ছবিতে থাকা ব্যাক্তিটির নাম রাজকুমার পাল, ৮৪ বছর বয়সী এই মানুষটি পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার এক অবসরপ্রাপ্ত প্রধানশিক্ষক।
ইনি গত ২৩ বছর ধরে যুগল কিশোর সেতু নিজের হাত দিয়ে পরিষ্কার করে চলেছেন। এই সেতুর অপর নাম বিদ্যার্থী সেতু। সে এক অমর ইতিহাস।
রাজকুমার পালের কথায় "এই ব্রীজটার খুব দরকার ছিল"। এই ব্রিজ তৈরি হওয়ার আগে ছাত্র ছাত্রীরা মাঝে মাঝে স্কুল কামাই করতো কারণ তারা চূর্ণী নদী পার করতে পারতো না!
তাই উনি স্থানীয় এবং জেলার আধিকারিক দের কাছে, এমনকি তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ব্রিজ তৈরির আবেদন জানান। কিন্তু তারা সবাই ফান্ডিং এর সমস্যা দেখিয়ে হাটগুটিয়ে নেয় এবং জ্যোতি বসু তার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে। কিন্তু রাজকুমার পাল, এতে হার না মেনে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীকে অনবরত চিঠি লিখতে থাকেন। তার এই অক্লান্ত চেষ্টায় প্রভাবিত হয়ে প্রধানমন্ত্রী ২.৩৩ কোটি টাকা ব্রিজ তৈরির জন্য বরাদ্দ করেন।
সুতরাং বুঝতেই পারছেন ওনার সাথে ব্রিজ এর এক গভীর সম্পর্ক থাকা স্বাভাবিক। সেটা আছেও। কিন্তু যেটা অবাক করার মত সেটা হল উনি প্রতিদিন স্নান করার পর পরিষ্কার জামা কাপড় পরে ব্রিজে চলে আসেন। তারপর উনি ব্রিজ, ব্রিজের ওপরের রাস্তা, এবং রেলিং পরিষ্কার করতে এখানে ৪ ঘণ্টা সময় কাটান। গত ২৩ বছর ধরে এটাই তাঁর রোজকার নিয়ম। আজ পর্যন্ত অন্যথা হয়নি।
কিন্তু উনি পরিচ্ছন্ন জামাকাপড়ে এবং খালি হতে ব্রিজ পরিষ্কার করেন?
উনি সব সময় বিদ্যা প্রতিমার উপস্থিতি অনুভব করেন এই ব্রিজে। এই সেতুর জন্য কত উপকার হয়েছে বিদ্যার্থীদের।
সেই জন্য উনি ঝাঁটা ব্যাবহার না করে পরিষ্কার জামাকাপড় এবং খালি হাতে এই কাজ গত ২৩ বছর ধরে রোজ করে আসছেন।
ওনাদের সম্পর্ক হয়তো অনেকটা বাবা - ছেলের মত হয়ে গিয়েছে। তাই বৃদ্ধ বাবা যে তার ছেলের যত্ন এখনও নিয়ে চলেছেন।
সত্যিই বলতে এই মহান ভারতবর্ষে এইরকম মহান মানুষ, মহান শিক্ষকের আরও প্রয়োজন।
আপনার মতামত দিন: