Ameen Qudir

Published:
2017-02-04 20:19:16 BdST

সৃজনক্ষমতাহীণ প্রশ্ন ও আমাদের সৃজনশীলতা


 

 


ডা. হেলাল উদ্দিন আহমেদ
______________________________


এসএসসি ২০১৭ এর বাংলা ১ম পত্রের প্রশ্নটির প্রথম পাতা দেখার সৌভাগ্য হলো ফেসবুকের দৌলতে। এটি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে কারণ এখানে চিকিৎসকদের হেয় করা হয়েছে-- চিকিৎসকরা একযোগে প্রতিবাদ করছেন যা অত্যন্ত যৌক্তিক। এই চিকিৎসক হেয় করার ইস্যুতে পুরো প্রশ্নের অর্ধেক পাতা দেখে বুঝতে বকি রইলো না আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার হাল কী। কেবল কোটি কোটি বই বিতরণই যে শিক্ষা না , লক্ষ লক্ষ জিপিএ ৫ তৈরির কারখানা যে শিক্ষা না ---শিক্ষার যে আরো কিছু অনুষঙ্গ আছে তা আমাদের শিক্ষা বিষয়ক নীতিনির্ধারকরা বেমালুম ভুলে গেছেন।


রবীন্দ্রনাথের শিক্ষার হেরফের প্রবন্ধটি শ্রদ্ধেয় নীতিনির্ধারকদের আবারো পড়ে দেখার জন্য আমন্ত্রণ জানাচ্ছি – সেখানে একজায়গায় বলেছেন “অতএব ছেলে যদি মানুষ করিতে চাই, তবে ছেলেবেলা হইতেই তাহাকে মানুষ করিতে আরম্ভ করিতে হইবে, নতুবা সে ছেলেই থাকিবে, মানুষ হইবে না” । এখন প্রশ্ন হচ্ছে আমরা মানুষ চাই কিনা- যদি মানুষ চাই তবে এই ধরণের শিক্ষা পদ্ধতি হতে বের হয়ে আসতেই হবে। যা হোক আবার বাংলা প্রশ্নপত্রে ফিরে যাই।


৫টি কারণে আমি এই প্রশ্নপত্রটির বিরোধীতা করছি--
১. এখানে “জাহেদ সাহেব একজন লোভী ডাক্তার...” ইত্যাদির মাধ্যমে আমার পেশাকে হেয় করা হযেছে। যেকোনো পেশায় ভালো মন্দ আছে। কিন্তু ঢালাওভাবে একটি পেশাকে এভাবে হেয় করা অন্যায়, অশালীন এবং অভব্য আচরণ। একজন চিকিৎসক হিসেবে আমি এই অভব্য প্রশ্নপত্রের বিরোধীতা করছি।

 

২. শিশু মানসিক স্বাস্থ্যে কর্মরত আছি বলে আমি মনে করি এই প্রশ্নটির মাধ্যমে শিশুদের মানসিক বিকাশকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করা হয়েছে-- কেবল একটি পেশাকে হেয় করে নয় বরং ‘লোভী’ শব্দটির দ্যোতনা আর ‘ডাক্তার’ এর সাথে যুক্তকরণ এখানে শিশুমনে একধরনের ‘কগনিটিভ’ পরিবর্তন ঘটাবে যা পরবর্তীতে পরিণত বয়সে সে লোভের সাথে ডাক্তারকে কন্ডিশনিং করে ফেলবে। শুধু তাই নয়- এই বয়সের একজন শিশুর মনোজগতে এই প্রশ্নটি সামাজিক কাঠামো সম্পর্কে বিরূপ ধারণা দিতে পারে- পেশা নির্ধারণে প্রভাব বিস্তার করতে পারে এবং ব্যক্তিত্বের সমস্যায় আক্রান্ত হতে পারে। আমি আমার পেশাগত দায়িত্ব নিয়ে-একাডেমিক জায়গা থেকে এই শিশু বিকাশের পরিপন্থী প্রশ্নটির বিরোধীতা করছি।

 

৩. পেশাগত পরিচয়ের বাইরে আমি একজন সাধারণ নাগরিক। নিজেকে সভ্য বলে দাবিও করি। তাই সভ্য সমাজের পাবলিক পরীক্ষায় যেকোনো পেশাকে কটাক্ষ করে প্রশ্ন দেয়াটা আমি অসভ্যতা মনে করি। এখানে যদি “জাহেদ সাহেব একজন লোভী ডাক্তার...” না লিখে “জাহেদ সাহেব একজন লোভী পুলিশ...” বা “জাহেদ সাহেব একজন লোভী বিচারক...” বা “জাহেদ সাহেব একজন লোভী আমলা...” বা “জাহেদ সাহেব একজন লোভী সাংবাদিক...” বা “জাহেদ সাহেব একজন লোভী শিক্ষক... লিখতেন আমার প্রতিক্রিয়া একই হতো বলে আমি বিশ্বাস করি। আমি এই অসভ্য প্রশ্নের বিরোধীতা করছি।

 

৪. পদ, পরিচয়, পেশা, নাগরিক, সব কিছুর উর্দ্ধে আমি একজন বাবা। আমার এক সন্তান বছর দুয়েক পরে এসএসসি পরীক্ষা দিবে। তারা কাদের কাছে পড়ছে- কী পড়ছে ? কী শিখছে এই নিয়ে বাবা হিসেবে আমি শংকিত। একজন বাবা হিসেবে আমি এই প্রতিক্রিয়াশীলতায় ভরপুর-গুনগতমানে তৃতীয় শ্রেণীর প্রশ্নপত্রটির বিরোধীতা করছি।

 

৫. ‘বাংলা’ প্রশ্নপত্র যারা করবেন তারা বাংলারই শিক্ষক। আমি আমার প্রিয় ঢাকা গবর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি স্কুলে পড়াকালীন সময়ে বাংলার যে শিক্ষকবৃন্দকে পেযেছিলাম তাদের বদৌলতেই আমি বাংলায় দু এক লাইন লিখতে পারি, দুএক কথা মানুষজনের সামনে বলতে পারি। শ্রদ্ধেয় কাজী মোজাম্মেল হক স্যার, প্রয়াত লেখক আনিস সিদ্দীকি স্যার, মুক্তিযোদ্ধা রাজ্জাকুল হায়দার স্যার, মরহুম কাজী ফজলুল আবেদীন স্যারের কাছে শেখা বাংলা ভাষা আমার সর্বদা পাথেয়। স্কুল জীবনের পর বাংলা শিখিনি- সেই শিক্ষা থেকে প্রশ্নপত্রে দুটি ভুল বানান আমি খুজেঁ পাই। শ্রদ্ধেয় লেখক চিকিৎসক ডা. Pinaki Bhattacharya দা আরো অনেক গুলো ভুল খুজেঁ বের করেছেন।


এযাবৎ প্রাপ্ত ভুলগুলো হচ্ছে–
ক) “কক্ সবাজার” বানানটি সরকারীভাবে স্বীকৃত নয় , এটির সঠিক বানান হবে “কক্সবাজার” [সূত্র : কক্সবাজার জেলা বাতায়ন, সরকারী ওয়েবসাইট]
খ) ‘লোলচর্মা’ শব্দটি ভুল- এটি হবে “লোলচর্ম”
গ) "লেফাফাদুরস্তি" শব্দটি ভুল, এটি হবে “ লেফাফাদুরস্ত”
ঘ) "অভাব ও দারিদ্র বিমোচন করতে গিয়ে" এই বাক্যটা ভুল। এটা হবে "অভাব ও দারিদ্র থেকে বিমোচিত হতে গিয়ে"


ঙ) “লেফাফাদুরস্তি’ (ভুল বানানে) যে অর্থে এই প্রশ্নপত্রে ব্যবহৃত করেছেন সেটাও ভুল। এর প্রকৃত অর্থ হচ্ছে আদবকায়দায়, পোশাকে আশাকে চোস্ত কিন্তু আসল কাজে ফাঁকিবাজ-অকর্মন্য। কিন্তু এখানে দেখাতে চেয়েছেন ‘অর্থের পেছনে ছুটে গাড়ি বাড়ির মালিক হওয়াটাই লেফাফাদূরস্ত” । প্রকৃত অর্থই প্রশ্নকর্তা বোঝেননি।


চ) “উদ্দীপকের জাহেদ সাহেবের মাঝে শিক্ষার প্রয়োজনীয় দিকটি উপস্থিত”—কী বোঝাতে চেযেছেন প্রশ্নকর্তা তা কোমলমতি শিশু তো দূরের কথা অভিজ্ঞজনদেরও বোঝা কঠিন “শিক্ষার প্রয়োজনীয় দিকটি উপস্থিত- না অনুপস্থিত “ নাকি “ শিক্ষার উপযোগিতা” – কী বোঝাতে চেয়েছেন তা বোঝা কঠিন।


ছ) ১ নম্বর প্রশ্নে ‘যুবতী’ শব্দটি বাদ দিয়ে তরুণী দিলে অধিকতর সমৃদ্ধ হতো। এবং “মাইনুল উপলব্ধি করলো যে , কাজের ক্ষেত্রে আদিবাসী নারী-পুরুষের মাঝে তেমন কোনো ভেদাভেদ নেই” এই বাক্যটি যথেষ্ট দুর্বল –এটি হতে পারতো “মাইনুল দেখতে পেল যে কাজের ক্ষেত্রে আদিবাসী নারী-পুরুষ তেমন কোনো ভেদাভেদ নেই” ।

“নারী-পুরুষ” এর মাঝখানে হাইফেন দিলে “নারী-পুরুষের মাঝে” বলার প্রয়োজন পড়ে না। আর কেবল একটি দৃশ্য দেখে “উপলব্ধি” করাটা যথেষ্ট নয় এক্ষেত্রে “দেখতে পাওয়া” ব্যবহার করাটা ভালো। আমি একজন সাধারণ বাংলাভাষী মানুষ হিসেবে এই অতি নিম্নমানের বাংলা প্রশ্নপত্রের বিরোধীতা করছি।


এরপর আসি সৃজনশীলতা বিষয়ে-
সৃজনশীল প্রশ্নের জনক হিসেবে মার্কিন এডুকেশনাল সাইকোলজিস্ট বেঞ্জামিন স্যামুয়েল ব্লুম কে চিহ্নিত করা হয়। ১৯৫৬ সালে তিনি সর্বপ্রথম এর ধারনা দেন। সৃজনশীল প্রশ্নপদ্ধতির উদ্ভাবনের বা এর প্রচলনের প্রধান কারন মুখস্থনির্ভরতা থেকে ছাত্রছাত্রীদের মুক্তি দেওয়া। সৃজনশীল পদ্ধতি ব্যক্তিকে সমস্যার গভীর পর্যন্ত যেতে উৎসাহিত করে কিন্ত প্রচলিত পদ্ধতি কেবল প্রয়োজনীয় উত্তর এর মধ্যে সীমাবদ্ধ। ফলে শিক্ষাক্ষেত্রে ঘাটতি থেকে যায়। এ পদ্ধতিতে শিক্ষক সর্বপ্রথম কোনো একটি অধ্যায়ের পাঠের আলোকে একটি মৌলিক উদ্দীপক তৈরি করেন। উদ্দীপক তৈরির পর শিক্ষক চার স্তরের চারটি প্রশ্ন করেন। তবে উদ্দীপকে কোনো প্রশ্নের উত্তর থাকে না বরং উদ্দীপকটি শিক্ষার্থীকে উত্তর প্রদানে সাহায্য করে। অর্থাৎ উদ্দীপকটি শুধু শিক্ষার্থীর উদ্দীপনা জাগায়, শিক্ষার্থীকে ভাবতে শেখায়। আমাদের আলোচ্য প্রশ্নটি কোনোভাবেই সৃজনশীলতা তৈরি করেনা- উদ্দীপকের মধ্যে নগ্নভাবে প্রশ্নের উত্তর দিয়ে “জাহেদ সাহেবকে” লোভী বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। ফলে উদ্দীপকের মধ্যে সরাসরি উত্তর দেয়া আছে- সবসময় অর্থের পেছনে ছোটা বা গাড়ি বাড়ির মালিক হওয়াটাই গৌণ হয়ে গেছে। পরীক্ষার্থীরা “লোভী” শব্দটিকে উপজীব্য করে প্রশ্নের উত্তর দেবে- জাহিদ সাহেবের অপরাপর আচরণগুলো ব্যাখা করবেনা।


উপরন্তু “লেফাফাদূরস্তি” বলতে একটি ভুল বিষয়কে ব্যাখা করার চেষ্টা করা হয়েছে- যা সৃজনশীলতার পরিপন্থি। সৃজনশীল পদ্ধতিতে খুব বেশি লেখার সুযোগ থাকেনা। উদ্দীপক পড়ে এবং বুঝে উত্তর দিতে হয়। উত্তরপত্র মূল্যায়নকারীদের নিজস্ব বিবেচনা বোধের উপর নির্ভর করে নম্বর দিতে হয়। তারা কতটুকু বিবেচনাবোধের অধিকারী তা নিশ্চয়ই আমাদের বোঝা হয়ে গেছে।
আমাদের এই অবিবেচক, প্রতিহিংসাপরায়ণ, নেতিবাচক দ্যোতনা সৃষ্টিকারী, অসভ্য প্রশ্নপ্রত্র প্রণয়ণকারী, ততোধিক অবিবেচক আকাট মুর্খ মডারেটর এবং আত্মম্ভরিতায় পরিপূর্ণ নীতিনির্ধারকগণ আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন ? অসংখ্যবার বলা হয়েছে পিএসসি-জেএসসি বাতিল করা প্রয়োজন-সৃজনশীলতার নামে শিশু-নিপীড়ক প্রশ্ন বাতিল করা প্রয়োজন করতে হবে- জিপিএ ৫ জেনারেশন এর বদলে আনন্দমুখর জেনারেশন তৈরি করা প্রয়োজন।


লক্ষ্য করে দেখবেন – যে প্রজন্ম সৃজনশীল পদ্ধতিতে পড়েনি তাদের সৃজনশীলতা বরং বেশি ছিল। এই তথাকথিত সৃজনশীলতায় ভরপুর প্রজন্ম কতটুকু সৃজনশীল? সৃজনশীলতার বিপ্রতীপে উদ্ভট “মাম্মা’ সংস্কৃতি, গ্যাং কালচার, ‘ডিজ্যুস’ বডি ল্যাংগুয়েজএর মাধ্যমে তারা এক সৃজণক্ষমতাহীণ সৃজনশীলতা প্রকাশ করে চলেছে।


রবীন্দ্রনাথ বলেছেন "আমাদের ছাত্রগণ যেন শুধুমাত্র বিদ্যা নহে , তাহারা যেন শ্রদ্ধা, যেন নিষ্ঠা, যেন শক্তি লাভ করে — তাহারা যেন অভয় প্রাপ্ত হয় , দ্বিধাবর্জিত হইয়া তাহারা যেন নিজেকে নিজে লাভ করিতে পারে।" বর্তমান শিক্ষাপদ্ধতি আমাদের ছাত্রদের এই অবস্থায় নিতে পারবে না তা এই প্রশ্নপত্র দেখেই বোঝা যায়। ‘শিক্ষার হেরফের’ প্রবন্ধে রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন “পৃথিবীর পুস্তক সাধারণকে পাঠ্যপুস্তক এবং অপাঠ্যপুস্তক, প্রধানত এই দুই ভাগে বিভক্ত করা যাইতে পারে। টেক্সট বুক কমিটি হইতে যে-সকল গ্রন্থ নির্বাচিত হয় তাহাকে শেষোক্ত শ্রেণী’তে গণ্য করিলে অন্যায় বিচার করা হয় না।“ তেমনি এই প্রশ্নপ্রণয়ণকারী ব্যক্তিটিও “অশিক্ষক”।


‘শিক্ষার সংস্কার’ প্রবন্ধে রবীন্দ্রনাথ তৎকালীন আইরিশ শিক্ষা-সংস্কার বিষয়ে বিশদ ব্যাখা জানিয়ে লিখেছিলেন “আইরিশদিগকে জোর করিয়া স্যাকসনের ছাঁচে ঢালা এবং ইংরেজ করিয়া তোলাই ন্যাশনাল ইস্কুল-প্রণালীর মতলব ছিল। ফলে এই চেষ্টার ব্যর্থতা প্রমাণ হইল।....ইহার ফল যেমন হওয়া উচিত, তাহাই হইল। মানসিক জড়তা সমস্ত দেশে ব্যাপ্ত হইয়া গেল। আইরিশ-ভাষী ছেলেরা বুদ্ধি এবং জিজ্ঞাসা লইয়া বিদ্যালয়ে প্রবেশ করিল আর বাহির হইল পঙ্গু মন এবং জ্ঞানের প্রতি বিতৃষ্ণা লইয়া।“ আমরা বোধ করি তেমনি তথাকথিত সৃজনশীল জিপিএ ৫ জেনারেশনের মাধ্যমে তেমনি একটি অবস্থায় এসে পৌঁছেছি।


এই ধরণের শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন “যে-কাঁচাবয়সে মন অজ্ঞাতসারে আপনার খাদ্য শোষণ করিতে পারে, তখনই সে জ্ঞান ও ভাবকে আপনার রক্তমাংসের সহিত পূর্ণভাবে মিশাইয়া নিজেকে সজীব সবল সক্ষম করিয়া তোলে। সেই সময়টাই আমাদের মাঠে মারা যায়। সে-মাঠ শস্যশূন্য অনুর্বর নীরস মাঠ।“
এই মাঠ পরিবর্তনের সময় এখনই । নাহলে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম একটি মনোবিকারগ্রস্থ জাতি হিসেবে পরিচিতি লাভ করবে। যারা “লোভী” চিনবে- “যুবতী” চিনবে কিন্তু মানুষ চিনতে পারবেন-এই শিক্ষা পদ্ধতি আর এই ধরণের প্রশ্নপত্রের মধ্য দিয়ে কখনোই সৃজণশীল হয়ে উঠবে না।

_____________________________

ডা. হেলাল উদ্দিন আহমেদ । দেশের জনপ্রিয় কলামিস্ট। কথাসাহিত্যিক ।
সহকারী অধ্যাপক, চাইল্ড এডলোসেন্ট এন্ড ফ্যামিলি সাইকিয়াট্রি
জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট, ঢাকা ।

আপনার মতামত দিন:


মানুষের জন্য এর জনপ্রিয়