আমিন কাদির / রাতুল সেন

Published:
2020-06-17 16:24:28 BdST

হাতুড়ে ক্লিনিক মালিকদের নোংরা ষড়যন্ত্রে মিথ্যা অভিযোগে জেলে লোকসেবী ডাক্তার



ডেস্ক
____________________

বাংলাদেশের একজন সজ্জন লোকসেবী চিকিৎসক ও জনপ্রিয় লেখক ডা. জোবায়ের আহমেদ এখন প্রত্যন্ত অঞ্চলে চিকিৎসা সেবা দিতে গিয়ে হাতুড়ে "ডাক্তার" ও ক্লিনিক মালিকদের নোংরা ষড়যন্ত্রে মিথ্যা অভিযোগে জেলে বন্দী। তার অনুপস্থিতে কাঁদছে মানবতা। কাঁদছে তার সেবা পাওয়া মানুষ। কাঁদছে বিচারের বাণী।

ডা. গুলজার হোসেন উজ্জ্বল জানান,
মিথ্যা অভিযোগে ডাঃ আহমেদ জোবায়ের কে জেলে ভরা হয়েছে। এদেশের একদল বদমায়েশ, সো কল্ড আমজনতা তাকে ফাঁসিয়েছে৷ এই কাজে ব্যাবহার করেছে ডাক্তার-রোগীর পবিত্র সম্পর্ককে। শ্লীলতাহানির অভিযোগ৷ আগেও জোবায়েরকে এই এলাকা থেকে উচ্ছেদের চেষ্টা করা হয়েছে।

ডাঃ জোবায়ের সিলেট মেডিকেল কলেজের প্রাক্তন ছাত্র৷ বিসিএস করেনি। চিকিৎসা শাস্ত্রের উচ্চতর ডিগ্রীও নেয়নি। সিলেটের একটা প্রত্যন্ত গ্রামে নিজে স্বাধীনভাবে প্র‍্যাক্টিস করে, গণমানুষের ডাক্তার হয়ে ভাল থাকতে চেয়েছিলো।

এলাকাটি ছিল পল্লী চিকিৎসকদের স্বর্গভূমি। অপচিকিৎসার রামরাজত্ব চলছিলো। জোবায়ের তাই এখানে একটা মূর্তিমান অস্বস্তি। ভাতের নলায় মাছের কাঁটা। সে একে তো একজন লোকসেবী চিকিৎসক। তার উপর ফেসবুকার। অনেক অপ্রিয় সত্য কথা লিখে ফেলে অবলীলায়। লেখায় থাকতো রোগীদের গল্প। তাদের প্রতারিত হবার করুন কাহিনীও।

জোবায়েরের সাথে যারা অনেকদিন ধরে ফেসবুকে যুক্ত তারা জানে কি ভয়ংকরভাবে তাকে আগেও একবার অপদস্ত করা হয়েছে। ফেসবুকে হুমকি, ভুয়া আইডি বানিয়ে সিলেটের নামে বিষোদগার করে এলাকাবাসীকে খেপিয়ে তোলা ইত্যাদি।

এবারের চালটা মোক্ষম। আগেরবারের থেকেও সুচারু। শ্লীলতাহানির অভিযোগ৷ কাজগুলি করেছে এদেশের তথাকথিত সরল গ্রামীন জনগোষ্ঠীর আমজনতা।

জোবায়ের জেল হাজতে আছে এই মুহুর্তে।
আমরা সবাই যার যার মত করে ভাল থাকার চেষ্টা করছি।

ডা. হাদীউজ্জামান পলক লিখেছেন,
ডা. আহমেদ জোবায়ের বনাম অকৃতজ্ঞ কিছু রক্তচোষা মানুষ
----------------------------------------------------------------
ডাক্তার সাহেব আমার ব্যাচমেট এবং ভালো বন্ধু বটে।
খুব বেশিদিনের আত্মার সম্পর্ক হয় নি যদিও, তবে অনেকদিনের পরিচয়।
করোনাকালে যখন সে তার নিজ এলাকায় লক ডাউনে পড়ে, তখন বিয়ানীবাজার এর চারখাই এ অবস্থিত তার মেডিকেয়ার সেন্টার এর আশেপাশের লোকজনকে সেবা দেওয়ার জন্য সাহায্য চেয়েছিলো ফেসবুকে। তখন আমাদেরই এক ব্যাচমেট একটি প্রাইভেট কার এর মাধ্যমে তাকে তার কর্মস্থলে পৌছে দিয়ে করোনার একজন সম্মুখযোদ্ধা হিসাবে কাজ করার সুযোগ দিয়েছিলো। তার অনেক সেবা নিয়ে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক এবং অনলাইন পোর্টালগুলো সময়ে সময়ে খবর প্রকাশ করেছে। তা ভাইরালও হয়েছে। সবাই তার সেবা নিয়ে প্রশংসা করেছে।
তার সমসাময়িক লেখা দেশের চিকিৎসা সিস্টেমকে সময়ে সময়ে প্রশ্নবিদ্ধ করে।
মাঝে মাঝে সরকারের বিরুদ্ধেও হয়তো গেছে।
এমনিতেই তার শত্রুর অভাব নেই। ২০১৮ সালে তাকে অন্যায়ভাবে ফাঁসানো হয়েছে। সেটা বিভিন্ন সময়ে বলেছে।
আজ তারাই আবার উঠে পড়ে লেগেছে তাকে নারী কেলেঙ্কারীতে ফাঁসানোর জন্য।
ব্রেস্ট এর সমস্যা নিয়ে ডাক্তারের কাছে গেছে একজন নারী। যেতেই পারে।
একজন এটেন্ডডেন্ট এর সামনে হয়তো তার পরীক্ষা করতে হয়েছে।
তার অপরাধ, সে একজন পুরুষ। এর বেশি কিছু নয়।
রোগী তাহলে ব্রেস্ট এর সমস্যা নিয়ে মহিলা ডাক্তার/গাইনী ডাক্তার এর কাছে যায় নি কেনো?
তার সেটা মাথায় ছিলো না যে তার সমস্যাটা দেখাতে হবে !
একজন ডাক্তার যখন চিকিৎসা দিতে চায়, তখন কি সে এই হিসাব করে যে একজন নারী তাকে ফাঁসাতে পারে ! একজন নারীর পক্ষে যে কোনো ভাবেই তা সহজ। আপনি যদি নারী রোগীর হাত স্পর্শ করে নাড়ী পরীক্ষা করেন, তাহলে ঐ নারীও আপনাকে "বাঁচাও" বলে ফাঁসিয়ে দিতে পারে। তাহলে দেশের সকল ডাক্তাররা কি নিরাপদ? সঠিক রোগী নির্ণয় করার কি কোনো যন্ত্র আছে? তা না হলে এখন থেকে রোগী দেখার সময় ৪ পাশে সিসি ক্যামেরা রাখতে হবে। তাতে প্রাইভেসি নষ্ট হলেও ডাক্তারের অসম্মান করার সুযোগ থাকবে না।
একটা মিথ্যা মামলায় তাকে ফাঁসানো হলো। আগের মামলায় তাকে অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। এবার তো সেনসিটিভ মামলা। এই মামলা থেকে রেহাই পাওয়া সত্যিই কঠিন।কিছু গৎবাঁধা শব্দ দিয়ে মনের মাধুরী মিশিয়ে তাকে উত্তম মধ্যম দিয়ে তাকে জেলে পঁচতে হবে। প্রমাণ করার প্রক্রিয়া অনেক দূরে। সেটা জামিনযোগ্য হবে কিনা সন্দেহ। কারণ যারা তাকে ফাঁসাতে চেয়েছে, তারা নারীকে নয়, নারীর পক্ষের আইনের হাতিয়ার হিসাবে অপব্যবহার করেছে। তারা হয়তো জয়ী হবে কিছুদিনের জন্য কিন্তু পরাজিত হবে ডাক্তারের ৬ মাসের অবুঝ সন্তান। যে সদ্য "বাবা" ডাকতে শুরু করেছে। সে হয়তো তার বাবাকে পাচ্ছে না। তার পরিবার অসম্মানিত হবে। বিভিন্ন ধরণের নিউজপোর্টালের রসাত্মক নিউজ বিভিন্ন ইনবক্সে ভেসে বেড়াচ্ছে।
এখন সেইসব ক্লিক নিউজপোর্টালগুলো জোবায়ের এর উপর অন্যায় করা হচ্ছে বলে খবর ছাপবে না। কারণ এখন যদি সেই নারীর পক্ষে অবস্থান নেয়, তাহলে তাদের নিউজ হিট হবে। নারীবাদীরা সেটাকে ভাইরাল করবে। গুগল এডসেন্স থেকে কিছু ডলার কামাই হবে। অথচ একজন ডাক্তারকে পঙ্গু বানানোর জন্য উঠেপড়ে লেগে গেছে একটা গোষ্ঠী। এখন সবাই ভুলে গেছে ডাক্তার জোবায়ের বিনা টাকায় অনেক দুস্থ মানুষের সেবা দিয়েছে। অনেক ভিক্ষিুককে চিকিৎসা এবং অর্থসেবা দিয়েছে। এরকম হাজারো মানুষের জন্য সেবা করা নিয়ে বিভিন্ন সময়ে পোস্ট দিয়েছে ডাক্তার নিজেই। সেটা শোঅফ এর জন্য নয়, সেটা মানুষকে উৎসাহ দেওয়ার জন্য। তার ফেসবুক ওয়াল থেকে ঘুরে আসলেই পাবেন। বেশিদূর যাওয়া লাগবে না।
যারা তার পাশে থাকতে চান, তারা দোআ করার পাশাপাশি সত্যিকার হাত বাড়িয়ে দিন। একজন ডাক্তার এর পাশে এই মহামারীর সময়ে থাকা উচিত, যেমন সে ছিলো আমাদের পাশে। আমরা চারখাই এর অকৃতজ্ঞ মানুষের মতো হতে চাই না। প্রশাসনের যারা আছেন, তারাও তার পাশে থাকুন। তার খবর নিন। সত্যটা জানতে চেষ্টা করুন। সে নিজেই থানায় বসে পোস্ট দিয়েছে। সেটা দেখুন।
সত্যের জয় হবেই। সে আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাকে যেনো অন্যায়ভাবে বিভিন্ন স্বীকারোক্তি জবানবন্দী রেকর্ড করে নতুন করে হয়রানি না করা হয়, সেই দিকে তৎপর থাকুন। সকল ডাক্তারকে অনুরোধ করবো, আপনারা তার পাশে দাঁড়ান। সত্যটা জানার চেষ্টা করুন। তার পরিবারের পাশে দাঁড়ান।
বন্ধু, সবাই আছি আমরা। ভয় করো না।
তুমি জিতবে। হেরে যাবে রক্তচোষা মানুষগুলো।
ভালো থেকো।

________________________________________

INFORMATION

আপনার মতামত দিন:


মানুষের জন্য এর জনপ্রিয়