Ameen Qudir
Published:2020-03-16 16:54:44 BdST
বিদেশ-ফেরতদের গৃহে কঠোর নজরদারিতে কোয়ারেন্টাইন:না হলে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন
ডা: শুভাগত চৌধুরী
বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবার শুভচিন্তক
___________________________
যেহেতু দেশ করোনাভাইরাসের উৎস স্থল নয় সেজন্য বিদেশ প্রত্যাগতদের কোয়ারেন্টাইন, সম্ভব হলে নিজ গৃহে সরকারের কঠোর নজরদারিতে আর তা না হলে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন করা উচিৎ। তাদের ভাইরাস সনাক্তকরণ পরীক্ষা করা, সমস্যা হলে চিকিৎসা করা, সরকারের আইইডিসিআর আর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশ মোতাবেক চলা না করা হলে দেশে মহামারী হওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়। ইতিমধ্যে বিদেশ প্রত্যাগত কয়েকজনের মধ্যে ভাইরাস সনাক্ত হয়েছে তাই স্বেচ্ছা প্রণোদিত হয়ে নিজের স্বার্থে, নিজের আত্মীয়-স্বজনের আর দেশের মানুষের স্বার্থে এটা করা উচিত। একে অমান্য করলে আইনি পদক্ষেপ আছে আর সরকার নিশ্চই কঠোর অবস্থান নেবেন। এখানে সমঝোতা, শিথিলতা করা যায় না। আর কেউ অমান্য করলে পরিনতি হতে পারে ভয়াবহ। আমাদের নাগরিক দায়িত্ব কম তাই কৌশল নির্ধারণ জরুরি।
হোমকোয়ারেন্টাইন একটি পদ্ধতি তবে আমাদের একটি প্রচলিত সংস্কৃতি বিদেশে গেলে ভদ্র, সভ্য, আইন মান্য করা আর দেশে এলে আইন অমান্য করা। একে অনেকে বাহাদুরি মনে করেন তাই এই পদ্ধতি সফল হচ্ছে কিনা তা তদারকি প্রয়োজন। কারন আমাদের সৌভাগ্য এখনও আমাদের দেশে জনগনের মধ্যে তা ছড়িয়ে পড়ার সংবাদ পাওয়া যায়নি। তাই এই পর্যায়ে রোগকে সম্বরন contain করতে পারলে বড় দুর্যোগ এড়ানো যাবে। তবে এটি সফল না হলে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন করা উচিত কঠোরভাবে দেশের স্বার্থে। যারা বিদেশ থেকে এসেছেন এরা স্বেচ্ছা প্রণোদিতভাবে নিজে অন্তরিন থাকবেন আর নিজেকে নিজের আত্মীয়দের আর দেশের সবার জন্য নিরাপদ রাখবেন। এখন সময় কঠোর হওয়ার সময় পেরিয়ে গেলে অতি কঠোর হলেও লাভ হবে না।
যারা বিদেশ থেকে আসবেন এদের প্রত্যকে মোবাইল অ্যাপস দিলে হোম কোয়ারেন্টাইন করলে তদারকি, গতিবিধি, বিধি মানা এসব মনিটর করা যাবে। আমাদের ডিজিটাল বিভাগ খুব শক্তিশালী এটা করা যায়। নিয়ম মাফিক কিছু বিদেশ প্রত্যাগতরা গৃহ অন্তরিন মানছেন না বাজারে চায়ের স্টলে আড্ডা দিচ্ছেন আত্মীয়দের নিয়ে ঘুরছেন এমন তথ্য আসছে সংবাদ মাধ্যমে। এর যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া উচিৎ।
আর ভবিষ্যতের জন্য আমাদের চিকিৎসক নার্সদের ব্যাপক প্রশিক্ষণ তাদের সুরক্ষা সরঞ্জাম দেশে ল্যাব সাপোর্ট সম্প্রসারণ (পি সি আর ল্যাব) অন্যন্য দেশে থেকে বিশেষজ্ঞ আর যন্ত্রপাতি বিনিময় খুব প্রয়োজন। সবচেয়ে বড় কথা ডাক্তার, নার্স ও সেবাদানকারীদের কথা কম ভাবলে চলবে না, তাদের সুরক্ষা জরুরি তা না হলে দেশে দুর্যোগ হলে সেবা দেয়ার লোক থাকবে না। আর এখন যেহেতু এ দেশের লোক যাদের অর্থ অনেক আছে তারা আর বিদেশ চিকিৎসা নিতে পারবে না সেজন্য সেবা দানকারীদের সুরক্ষা জরুরি সবার স্বার্থে। যে কোন পথে প্রবেশ বন্ধ করা ছাড়া উপায় নাই। কেউ বিশেষ কারনে আসতে হলে কেবল তাপমাত্রা নয় ভাইরাস সনাক্তকরণ পরীক্ষা উত্তীর্ণ হয়ে ঢুকতে হবে।
প্রাতিষ্ঠানিক অন্তরিন ব্যবস্থা হতে হবে কঠোর, পরিচ্ছন্ন, সুন্দর, স্বস্তিকর আর জনবান্ধব। এই পুরো কর্মকাণ্ড চালাতে কেবল স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ই নয়, আইন শৃঙ্খলা কর্তৃপক্ষসহ সব মন্ত্রণালয়কে একসাথে কাজ করতে হবে। জনগন সাথে থাকবেন। আমাদের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আর আইইডিসিআর কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছেন এখনও পর্যন্ত।
আমাদের আনন্দের বিষয় আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নিজে এটি তদারকি করছেন। এবং এর অগ্রগতি সম্বন্ধে সার্বক্ষণিক অবহিত আছেন।
আপনার মতামত দিন: