Ameen Qudir

Published:
2020-03-04 23:37:48 BdST

নীপাহ আক্রান্ত মানুষের ৫০ ভাগ মারা যায়:এর চিকিৎসা নাই :কাঁচা খেজুরের রস থেকে সাবধান


ডা. রুমি আহমেদ
প্রখ্যাত চিকিৎসক, লেখক , মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
_______________________
যারা কাঁচা খেজুরের রস সন্ধানে ঢাকার বাইরে পাড়ি জমাচ্ছেন অথবা খেজুরের রস উৎসবে গিয়ে কাঁচা রস খুঁজছেন - নিপাহ ভাইরাস সম্বন্ধে সচেতন হোন
নীপাহ আক্রান্ত মানুষের ৫০ % মারা যায় - এর কোন চিকিৎসা নাই | কাঁচা খেজুরের রস থেকে এটা হতে পারে | এই ভাইরাস টা আসে বাদুড়ের লালা থেকে - রাতে বাদুড় মাটির হাড়ি থেকে রস খাবার সময় পুরো হাড়ির রস গুলোকে নিপাহ ভাইরাস দিয়ে কন্টামিনেট করে দিতে পারে | এলাকায় বাদুড় থাকলে রস জাল না দিয়ে খাবেন না!
Nipah is Asias Ebola. 50% dies. In winter Bangladesh people love raw juice of date palm, but know that it can KILL!

এ নিয়ে গার্ডিয়ান পত্রিকার লেখার লিঙ্ক : https://www.theguardian.com/world/2017/jan/18/nipah-fearsome-virus-that-caught-the-medical-and-scientific-world-off-guard?CMP=share_btn_fb&fbclid=IwAR04x_Z57hJED-LyKAyB7ejLk6ihNbS7SXBmB8Sy1CNdLfp8f9Ab5pgq5ag 


২.
ইগ্নরেন্স ইজ ব্লিজ! কোরোনাভাইরাস

দেশে আসলো কিনা তা না জানাই ভালো!

আমার কোন সন্দেহ নাই যে বাংলাদেশে নুতন কোরোনাভাইরাস এর সংক্রমণ হয়েছে! না হবার তো কোনো কারণ নাই! ডায়াগনস্টিক লিমিটেশনের কারণে আমরা এটার সঠিক এক্সটেন্ট টা জানতে পারছি না |

এবং না জানাটাই আমার জন্য সুখকর- ইগনোরেন্স ইজ ব্লিজ! কারণ কোরোনাভাইরাস সংক্রমণ জেনে তা কন্টেইন করার জন্য দেশে আমদের হাতে তেমন অপশন নাই! আমাদের ঢাল নেই তলোয়ার নেই নিধিরাম সর্দারের মতো অবস্থা! গুটিকয়েক কেবিন ছাড়া আমাদের হাসপাতাল গুলোতে রুগীরা থাকে গণ ওয়ার্ডে! আইসোলেশন সুবিধা একেবারে অপ্রতুল! এক রুগী আক্রান্ত হলে সারা হাসপাতালে সবাইকে আক্রান্ত করে দেবে |

এবং কোরোনাভাইরাস প্রতিরোধে আমরা কি করবো? এদেশে আমাদের কি জানা আছে প্রতি সিজনে ফ্লুর কোন স্ট্রেইনটা মহামারী হয়? এবং সেই অনুযায়ী প্রতিবছর কি দেশের আইপিএইচ কি ফ্লু ভ্যাকসিন ডেভেলপ করে? দেশের কয়জন লোক প্রতিবছর এপ্রোপ্রিয়েট ফ্লু ভ্যাকসিন পায়? ৬৫ এর উর্ধে কতজন লোক নিউমোনিয়া ভ্যাকসিন পায়? এই যে ফ্লু ভ্যাকসিনেশন আর নিয়মনিয়া ভ্যাকসিনেশন - এগুলা তো একেবারে বেসিক হেলথকেয়ার যেকোন উন্নত দেশের পার্সপেক্টিভ এ!

SARS-CoV 2 নামের যেই করোনা ভাইরাসটা এবার মহামারী করছে - তার মধ্যে অনেক জেনেটিক ভেরিয়েশন আছে! একেক অঞ্চলে একেক ধরণের জেনেটিক সিকুয়েন্স পাওয়া যাচ্ছ! করোনা ভাইরাস যদি বাংলাদেশে ছড়িয়ে পরে - তাহলে কি আমরা আশা করতে পারি বাংলাদেশের আইপিএইচ সঠিক জেনেটিক সিকুয়েন্স অনুযায়ী একটা ভ্যাকসিন বানিয়ে দেশের সবাইকে ভ্যাকসিনেট করে দেবে?

উপরের কথা গুলো অলীক স্বপ্ন মনে হলেও অসম্ভব না - প্ল্যান বা ইচ্ছা থাকলে! শিশুদের টীকাদানে আমরা খুব সফল , কিন্তু এডাল্ট দের টীকাদানের ব্যাপারে আমাদের এতো অবহেলা কেন তা আমার জানা নাই!

কোরোনাভাইরাস ছড়ানোর মেকানিজম টা যদি আমরা বুঝতে পারি - তাহলে জানবো যে এই কোরোনাভাইরাস ছড়ানোর জন্য বাংলাদেশ হচ্ছে হেভেন! বাংলাদেশের মানুষজন সারাক্ষন রাস্তা ঘটে থুথু কফ ফেলছে, নাক ঝাড়ছে, তারপর জামা কাপড়ে চেয়ার টেবিলের হাতলে হাত মুছছে! ভারতের ব্যাপার জানি না - তবে পৃথিবীর আর কোনো অঞ্চলের মানুষকে এভাবে পাবলিকলি কফ কাঁশি ফেলতে দেখি নাই! করোনাভাইরাস আমাদের নাকে গলায় ফুসফুসে বসত বাড়ী বানায় | তার পর নাক ঝাড়া বা কফ কাশির সাথে ভাইরাস বের হয়ে আসে - এবং যেখানে কফ কাশি ফেলা হলো সেখানে দুদিন এর মতো বেঁচে থাকে এবং অন্যকে ইনফেক্ট করো! যেমন ধরুন এক কোরোনাভাইরাস রুগী নাক ঝেড়ে রাস্তায় নাকের সিকনি ফেললো এবং তারপর সাবান দিয়ে হাত না ধুয়ে কোনো এক রেস্টুরেন্টের চেয়ার এর হাতলে এ হাত মুছে খেতে বসলো| এখন ওই চেয়ার আগামী দুদিন যে টাচ করবে সেই কোরোনাভাইরাস এ ইনফেক্টেড হয়ে যাবে! ধরুন রেস্টুরেন্টের কোনো ওয়েইটার ওই ভাইরাস টাচ করলো তার পর সাবান দিয়ে হাত না ধুয়ে সারাদিন ধরে শত মানুষকে খাবার সার্ভ করলো! সে সবাইকে ওই ভাইরাসে ইফেক্ট করে দিলো!

রাস্তায় যেখানে সে কফ থুথু বা নাকের সিকনি ফেললো - ওখানে কোরোনাভাইরাসএর একটা থিন লেয়ার সৃষ্টি হলো! সেখান দিয়ে কেউ হেটে গেলো জুতা পায়ে এবং বাড়ি গিয়ে জুতা খোলার সময় ভাইরাস টা তার হাতে চলে এলো| এখন সে সাবান দিয়ে হাত না ধুয়ে হাত দিয়ে নিজের নাক বা মুখ টাচ করে নিজে ইনফেক্টেড হয়ে গেলো! এবং এই হাত দিয়ে যাকেই সে টাচ করবে তাকেই সে ইফেক্ট করবে |

সেজন্যেই বারবার সাবান দিয়ে হাত ধোয়া আর ফিনাইল দিয়ে নিজের বাড়ির/ ব্যবসার চত্বর / ফার্নিচার বার বার পরিষ্কারের কোনো বিকল্প নাই! এটাই হবে কোরোনাভাইরাস প্রতিরোধে বাংলাদেশের মানুষের একমাত্র অস্ত্র!

আর কারো যদি সিরিয়াস কোরোনাভাইরাস নিউমোনিয়া হয়েই যায় - তাহলে ভেন্টিলেটর আর আইসিইউ লাগবে! এর জন্য বাংলাদেশ কি তৈরী? পাবলিক হাসপাতাল গুলোতে আইসিইউ বেড কখনো খালি থাকে না, কর্পোরেট হাসপাতাল গুলোতে প্রতিরাতে এক লক্ষ টাকা বেড ভাড়া! কজন এফোর্ড করতে পারবে এটা ?

তাও না হয় দিনপ্রতি এক লক্ষ টাকা দিলেন! কিন্তু আপনি কি জানেন কজন মানুষ বাংলাদেশের আইসিইউ গুলো থেকে ভেন্টিলেটর মুক্ত হয়ে জীবিত বাড়ি ফিরতে পারে? এন্টিবায়োটিক অপব্যবহার করে আমরা ভয়াবহ একটা পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছি! হাসপাতাল গুলো / আইসিইউ গুলো মাল্টিড্রাগ রেজিস্টেন্ট ভয়ঙ্কর সব ব্যাকটেরিয়াতে ভর্তি! আইসিইউতে নেবার সাথে সাথে একের পর নসকমিয়াল ইনফেকশন আক্রমণ করবে রুগীকে! আমার হাতে কোনো ডাটা বা রিসার্চ নেই, তবে আমার নিজের এনেকডট হচ্ছে - গত কয়েক বছরে আমার পরিচিত মানুষ যাঁরাই আইসিইউ তে ভেন্টিলেটরে ছিলেন - তাদের মধ্যে কেউই ইনফেকশনের সাথে ফাইট করে উইন করতে পারেন নি - তাদের কারুরই বেঁচে বের হবার সোভাগ্য হয় নি!

তাই বলি - ইগ্নরেন্স ইজ ব্লিজ! কোরোনাভাইরাস দেশে আসলো কিনা তা না জানাই ভালো!

আপনার মতামত দিন:


মানুষের জন্য এর জনপ্রিয়