Ameen Qudir
Published:2020-03-02 18:18:59 BdST
প্রতিবেশীর জলন্ত বাড়ি থেকে ৬ মুসলিমকে বাঁচিয়ে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছে স্বাস্থ্যসেবক প্রেমকান্ত
ডেস্ক
___________________
হিংসার আগুনে জ্বলছে ভারতবর্ষের রাজধানী দিল্লি। আগুনের লেলিহান শিখা কিছুটা নিভলেও মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এখনও পর্যন্ত দিল্লির রাজপথে হিংসার বলি ৩৭। বাড়তে পারে সেই সংখ্যাও। ভারতরাজধানীর সেই আগুনের তেজ যেন ছড়িয়ে পড়ছে নানা দিকে। আড়াআড়ি ভেঙে যাচ্ছে সম্পর্ক, বন্ধুত্ব, আত্মীয়তা। জেগে উঠছে বিদ্বেষ। কিন্তু তারই মাঝে প্রেমকান্ত বাঘেলের মতো মানুষ আছেন, যাঁরা এখনও জীবনের জয়গান গাইতে পারেন মৃত্যুমুখে দাঁড়িয়েও। জ্বলন্ত দিল্লিতে শান্তির এক পুজারি যেন এই প্রেমকান্ত। মুসলমান প্রতিবেশীদের বাঁচাতে গিয়ে তাঁর শরীরের ৭০% পুড়ে গিয়েছে। তাতেও আক্ষেপ নেই তাঁর। হাসপাতালে গোঙাতে-গোঙাতে বলছেন, '৬ জনকে বাঁচাতে তো পারলাম!'
পেশায় তিনি স্বাস্থ্যসেবক। কাজ করেন দিল্লি নগরপালিকায়। হয়তো আহামরি মস্ত মানুষ নন তিনি। কিন্তু মানবতায় সর্বকালের সর্ব সেরা মানুষদের তালিকায় নাম লেখালেন।
শিববিহারের বাসিন্দা প্রেমকান্ত। মঙ্গলবার যখন উত্তর-পূর্ব দিল্লি পুড়ছে, লাশ পড়ছে চটপট, তখনই প্রেমকান্ত বুঝতে পারেন পরিস্থিতি সুবিধার নয় আর। এরই মধ্যে খবর পান প্রতিবেশী মুসলমানদের বাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। আর ঘরে বসে থাকতে পারেননি প্রেমকান্ত। ছুটে গেছিলেন আগুন নেভাতে। পারেননি। এরপরই সিদ্ধান্ত নেন, বাঁচাতে হবে বাড়িতে আটকে পড়া মানুষগুলোকে।
জীবনের তোয়াক্কা না করেই এরপর ওই বাড়িতে ঢুকে পড়েন প্রেমকান্ত। একে-একে বার করে আনেন ৬ জনকে। যাঁদের মধ্যে ছিলেন একজন ৭০ বছরের বৃদ্ধাও। আর প্রতিবেশীদের বাঁচাতে গিয়ে নিজের শরীরের ৭০ শতাংশই পুড়ে গিয়েছে প্রেমকান্তর। কিন্তু সেই অবস্থাতেও প্রেমকান্তকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য কোনও গাড়ি পাওয়া যায়নি। অ্যাম্বুল্যান্সও ডাকা হয়েছিল, কিন্তু এসে পৌঁছয়নি। সারারাত পোড়া আর যন্ত্রণাবিদ্ধ শরীর নিয়ে পড়ে থাকার পরে সকালে জিটিবি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে তাঁকে।
সেই অবস্থাতেও অবশ্য নিজের বেঁচে থাকা নিয়ে চিন্তিত নন প্রেমকান্ত। তাঁর বারবার তার মুখে শোনা গিয়েছে, 'তিনি খুশি কারণ ৬ জনের প্রাণ বাঁচাতে পেরেছেন। এই তো ভারতবর্ষ। এই তো আমার-আপনার-সবার ভারতবর্ষ৷ প্রেমকান্ত বাঘেল সেই ভারতবর্ষেরই বীর সন্তান।
তথ্য : এই সময় কলকাতা। ও সংবাদ সংস্থা
আপনার মতামত দিন: