Ameen Qudir

Published:
2020-02-22 06:35:04 BdST

বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রসম্মান অর্জন করলেন দুই জীবন্ত কিংবদন্তি চিকিৎসক


ডেস্ক
___________________________

বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রসম্মান স্বাধীনতা পদকে ভূষিত হওয়ার গৌরব অর্জন করলেন দুই জীবন্ত কিংবদন্তি চিকিৎসক:বিশিষ্ট চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. উবায়দুল কবীর চৌধুরী এবং চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. এ কে এম এ মুক্‌তাদির।
লোক সেবা, রাষ্ট্রসেবা, চিকিৎসাবিদ্যায় গৌরবোজ্জল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের জন্য তারা স্বাধীনতা পুরস্কার ২০২০’ পাচ্ছেন ।

২০ ফেব্রুয়ারি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দুই চিকিৎসকসহ মোট ৮ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি ও একটি প্রতিষ্ঠানের নাম স্বাধীনতা পদকের জন্য ঘোষণা করা হয়।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (কমিটি ও অর্থনৈতিক) মোসাম্মৎ নাসিমা বেগম স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৫ মার্চ রাজধানীর রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনাতয়নে ২০২০ সালের স্বাধীনতা পুরস্কার দেবেন।

খ্যাতিমান এই দুই চিকিৎসক ছাড়াও পুরস্কারের জন্য মনোনীত বাকিরা হলেন- স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের জন্য বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক, মরহুম কমান্ডার (অব.) আবদুর রউফ, মরহুম মুহম্মদ আনোয়ার পাশা ও আজিজুর রহমান; সাহিত্যে মুক্তিযোদ্ধা এস এম রইজ উদ্দিন আহম্মদ এবং সংস্কৃতিতে কালীপদ দাস ও ফেরদৌসী মজুমদার। এ ছাড়া শিক্ষায় অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের ভারতেশ্বরী হোমস্‌ এবার স্বাধীনতা পুরস্কার পাচ্ছে।

স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্তদের পাঁচ লাখ টাকা, ১৮ ক্যারেট মানের ৫০ গ্রাম স্বর্ণের পদক, পদকের একটি রেপ্লিকা, ও একটি সম্মাননাপত্র দেয়া হবে। যদিও পূর্বে অর্থের পরিমাণ ছিল ৩ লাখ টাকা। এবার থেকে অর্থের পরিমাণ ২ লাখ টাকা বাড়ানো হয়েছে।

অধ্যাপক ডা. উবায়দুল কবীর চৌধুরী:

১৯৭৪ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস ডিগ্রি লাভ করেন অধ্যাপক ডা. উবায়দুল কবীর চৌধুরী। পরবর্তীতে ঢাকা মেডিকেল কলেজে শিক্ষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। তিনি ১৯৮৫ সালে ভিয়েনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দুর্দান্ত গ্রেড এবং তালিকার শীর্ষে চর্মবিজ্ঞান এবং ভেনেরোলজি বিষয়ে বিশেষত্ব অর্জন করেছেন। এরপরে তিনি ভিয়েনা ইউনিভার্সিটি হাসপাতাল থেকে পেডিয়াট্রিক ডার্মাটোলজি বিষয়ে, আমেরিকান একাডেমি অফ ডার্মাটোপাথোলজিস্ট থেকে স্কিন প্যাথলজি বিষয়ে, হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুল থেকে স্কিন লেজার সার্জারি বিষয়ে, কানাডার ইউনিভার্সিটি অব ব্রিটিশ কলম্বিয়া থেকে যৌন চিকিৎসার বিষয়ে এবং ভারতের অল ইন্ডিয়া মেডিকেল ইনস্টিটিউট থেকে স্কিন সার্জারি প্রশিক্ষণ অর্জন করেছিলেন।

সরকারি চাকরি থেকে অবসর গ্রহণের পর তিনি শমরিতা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ২০০৩ সাল থেকে হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ডার্মাটোলজি বিভাগের অধ্যাপক পদে কর্মরত আছেন। এছাড়াও ডা. উবায়দুল কবীর চৌধুরী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত চিকিৎসক হিসেবেও কর্মরত ছিলেন।

অধ্যাপক ডা. এ কে এম এ মুক্তাদির:

তিনি ১৯৭৫ সালে চিকিৎসক হওয়ার পর ১৯৭৭ সাল থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত গৌরীপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রতিবছরই সপ্তাহব্যাপী বিনামূল্যে চক্ষু শিবির করে নয় হাজার ৫৩৫জন রোগীর চোখের ছানি অপারেশন করেন। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চক্ষু বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. এ কে এম এ মুকতাদির তার সহধর্মীনি গাইনী বিশেষজ্ঞ ডা. মাহমুদা খাতুনের সহযোগিতায় ২০০৪ সালে ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার নিজ গ্রাম বোকাইনগর নয়াপাড়ায় পৈত্রিক পাঁচ একর জমিতে প্রতিষ্ঠা করেন ‘ডা. মুকতাদির চক্ষু হাসপাতাল’।

চারতলা ভবনে দু’টি অপারেশন থিয়েটার, ভিআইপি রোগীদের জন্য ৩টি এসি কেবিন, ৬টি নন এসি কেবিন, পুরুষ-মহিলাদের পৃথক নামাজখানা, বিশ্রামাগার, স্টাফ ক্যান্টিন, রোগীর স্বজনদের জন্য আলাদা ক্যান্টিন, প্রতিটি ফ্লোরে দর্শনার্থীদের জন্য রঙিন টিভি ও মনিটরের মাধ্যমে ছানি অপারেশন সরাসরি পর্যবেক্ষণের সুবিধাও রয়েছে।

প্রতি শুক্র ও শনিবার সার্জিকেল টিমের মাধ্যমে স্বল্পমূল্যে রোগীদের চোখে ল্যান্স সংযোজনসহ ছানি অপারেশন, নেত্রনালি অপারেশন, চোখের মাংস বৃদ্ধি অপারেশন, গ্লোকোমার অপারেশন, শিশুর নেত্রনালী অপারশেন, চোখে কৃত্রিম চোখ সংযোজন, চোখের গুটি অপারেশন, টিউমার অপারেশন, টেরা-বাঁকা চোখ অপারেশন ও চোখের ক্ষত অপসারণ করা হয়।

আপনার মতামত দিন:


মানুষের জন্য এর জনপ্রিয়