Ameen Qudir

Published:
2020-02-11 00:37:15 BdST

বোন সন্তান জন্ম দিতে মারা গেছে : খেলতে নামার আগে মাত্র জেনেছিলেন বিশ্বজয়ী আকবর


 

ডা. সুরাইয়া বেগম , রংপুর
______________________
স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিয়েছে আকবরের দল। কিন্তু তার নেপথ্যে আছে একরাশ কান্না। স্বজন হারানোর বেদনা বুকে চাপা দিয়ে লড়েছেন এই যুব টাইগার।
২২ জানুয়ারি টাইগার ক্যাপ্টেন আকবরের একমাত্র বোন খাদিজা খাতুন মারা যান। সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে তার মৃত্যু হয়। দুই দিন পরই পাকিস্তানের বিপক্ষে মাঠে নামেন আকবর আলী। এই খবর আকবরের কানে যাতে না যায়, সে অব্যক্ত যন্ত্রণায় ভেঙে পড়বে, মুখ থুবড়ে পড়তে পারে , বাংলাদেশের বিশ্বজয়ের স্বপ্ন। সেজন্য আকবরের আত্মীয়রাই ছিলেন সচেষ্ট। তারা কষ্ট চেপে রেখেছিলেন , আকবরকে জানাতে চানননি শোক। তারপরও শেষ অব্দি খেলতে নামার আগে তিনি জেনে যান।

বিশ্বকাপের মঞ্চে পাহাড় সমান দায়িত্ব তার কাঁধে। অন্য কোনো দিকে খেয়াল করার মতো সময় ছিল আকবর আলীর। একটাই স্বপ্ন বিশ্বকাপ জিততে হবে। এবার অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের আসর বসে দক্ষিণ আফ্রিকায়। গত ১৮ জানুয়ারি বাংলাদেশ টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে মাঠে নামে। ২১ জানুয়ারি স্কটল্যান্ডকে উড়িয়ে দেয় যুবারা। টানা দুটি ম্যাচ জয়ের পর দল যখন উৎফুল্ল। ঠিক তখন দেশ থেকে বড় দুঃসংবাদ উড়ে গেল আকবর আলীর জন্য।



প্রবল কষ্টকে বুকে চেপে তিনি ইতিহাস গড়েন। ফাইনাল ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে নায়কোচিত ইনিংস খেলে বাংলাদেশকে প্রথমবারের মতো আইসিসির কোনো বিশ্বকাপের ট্রফি এনে দেন তিনি।

কে এই আকবর!

আকবর আলীর বন্ধুরা যখন বই-খাতা নিয়ে স্কুলে যেতেন, তার ব্যাগে থাকতো ক্রিকেট বল। ছোট্ট আকবর যে ক্রিকেটে মজে গেছেন, সেটা বোঝা গিয়েছিলো তখনই। রংপুরের এক ক্রিকেট একাডেমিতে ভর্তি হওয়ার পর আকবর বুঝিয়ে দেন, ক্রিকেটটা তার মধ্যে ভালোভাবেই আছে। অঞ্জন সরকারের হাত ধরে রংপুর জেলা স্কুলের মাঠে তার ক্রিকেটের সত্যিকারের হাতেখড়িটাও হয়ে যায়।

২০১২ সালে দেশের সেরা ক্রীড়াশিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিকেএসপিতে ভর্তি হন । তারপর শুধুই তার এগিয়ে যাওয়ার গল্প। বিকেএসপির বয়সভিত্তিক দলে খেলে সুযোগ পেয়ে যান জাতীয় অনূর্ধ্ব-১৭ দলে। নেতৃত্ব দেওয়ার অভিজ্ঞতাও হতে থাকে সমানতালে।
শুধু ক্রিকেট নিয়েই অবশ্য পড়ে থাকেননি আকবর। পড়াশোনাটাও দারুণভাবে করেছেন তিনি। ২০১৬ সালে তার এসএসসি পরীক্ষার সময় চলছিলো প্রথম বিভাগ ক্রিকেট লিগ। তখন খেলা ও লেখাপড়া দুটিই সামলেছেন দারুণ মনোযোগে। এসএসসিতে জিপিএ-ফাইভ পান তিনি। এইচএসসিতে ৪.৪২।

আপনার মতামত দিন:


মানুষের জন্য এর জনপ্রিয়