Ameen Qudir

Published:
2020-02-06 00:38:35 BdST

ঢাকা বিমানবন্দরে করোনা প্রতিরোধে অক্লান্ত কাজ করছেন ডাক্তাররা , শুনুন ডাক্তারের মুখেই


 

ডেস্ক
_________________

ঢাকা বিমানবন্দরে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে অক্লান্ত কাজ করছেন ডাক্তাররা। ঘুম নেই । ক্লান্তি নেই। কাজ আর কাজ। হাসিমুখেই কাজ করছেন তারা। এ ব্যপারে ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের সহকারী বিমান বন্দর স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আবীর শাকরান মাহমুদ ফেসবুকে এক লেখায় বিস্তারিত জানান।
দৈনিক প্রথম আলোয় বিমান বন্দরের করোনা সতর্কতা নিয়ে এক সচিত্র লেখা প্রকাশের প্রেক্ষাপটে তিনি এই লেখাটি লেখেন। পাঠকদের জন্য লেখাটি প্রকাশ হল।


ডা. আবীর শাকরান মাহমুদ লিখেছেন,

দৈনিক 'প্রথম আলো'র কভার পেজে নামের নিচে আজ এ ছবিটি ছাপানো হয়েছে। প্রটেক্টিভ গিয়ার, মাস্ক, পিপিই গাউন পরার কারণে চেহারা সুরত কিছুই বুঝা যাচ্ছেনা, তাও ব্যক্তিটি আমিই। পত্রিকাগুলো যদিও স্বভাবতই ডাক্তারদের ছিদ্রান্বেষণে ব্যস্ত থাকে, এর মাঝেও দেশের ক্রান্তিকালে দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় পজিটিভ নিউজ করতে দেখে ভাল লাগল। আমরা বিমানবন্দর, হজ্জ ক্যাম্প, বিভিন্ন স্থলবন্দর সহ এন্ট্রি পয়েন্টে রাত দিন ২৪ ঘন্টা সকল ডাক্তার, নার্স, অক্সিলিয়ারি স্টাফসহ স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় হতে শুরু করে সরকারের বিভিন্ন সেক্টরের বিভিন্ন মন্ত্রনালয়ের সকল কর্মচারী- কর্মকর্তাবৃন্দ অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছি একটানা।

Let me clarify one thing, আমার হাতে ধরা যন্ত্রটি ইনফ্রারেড থার্মোমিটার। আর পিছনে মেটাল ডিটেক্টর আর্চওয়ের মত যেটা দেখা যাচ্ছে, সেখানে থার্মাল স্ক্যানার ও লাগানো আছে। যেহেতু, ভাইরাস আক্রান্ত হলে জ্বর হবে এবং দেহের তাপমাত্রা বাড়বে, ওদিক দিয়ে এন্ট্রি নেয়ার সময়েই অটোভাবে চেক হয়ে যাবে কারো দেহের তাপমাত্রা বেশি কিনা। এগুলো ২৪/৭ কন্ট্রোল রুম আর ডেস্কে কন্সট্যান্ট মনিটরিং করা হচ্ছে। যদি তাপমাত্রা বেশি থাকে, তবে ঢুকার সময়েই মুখের কালার চেঞ্জ হয়ে যায় মনিটরে আর স্বয়ংক্রিয়ভাবে অ্যালার্ম বেজে উঠে। তখন মেডিকেল টিমের কেউ গিয়ে ইনফ্রারেড থার্মোমিটার দিয়ে তাপমাত্রা পরিমাপ করে ইন কেস, তা ফলস অ্যালার্ম কিনা। তাপমাত্রা বেশি পেলে DG হেলথ, IEDCR, CDC সবাইকে নোটিফাই করার প্রটোকল আছে। পরে তাদের আইসোলেশন রুমে নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। প্রয়োজনে ব্লাড স্যাম্পল কালেক্ট করে পিসিআর এবং অন্য পরীক্ষার জন্য প্রেরণ করা হয়। এরপরও প্রত্যেক চীন ফেরত যাত্রীকে একটা তথ্যবহুল ফর্ম দুই কপি করে ফিলাপ করতে হচ্ছে। এক কপি নিজেরা প্রিজার্ভ করে রাখছি, যাতে পরবর্তীতে কোন সিম্পটম ডেভেলপ করে যাতে তাদের খুঁজে পাওয়া যায়। আরেক কপি তাদের ইমিগ্রেশন পয়েন্টে পুলিশ চেক করছে। এ ফর্মগুলো ছাড়া তাদের ইমিগ্রেশন পয়েন্টে ঢুকতেই দেয়া হচ্ছে না। সেজন্য, দেখাই যাচ্ছে, মোটামুটি তাদের নিজেদের অজান্তেই বেশ ভাল প্রক্রিয়ায়ই চেক করে ঢুকানো হচ্ছে আগত দেশি-বিদেশিদের। নিজেরাও বুঝতে পারছে না, তারা কোন প্রক্রিয়ায় চেক হচ্ছে।

আশার কথা হল, এ লেখার আগ পর্যন্ত জানা সংবাদ অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে এন্ট্রি নেয়া কারো দেহে ভাইরাসটি নেই বা কেউ দেশে এ ভাইরাসটি ছড়ায়নি বলেই ধরে নেয়া হচ্ছে। এজন্য, কাউকে গুজব না ছড়ানোর জন্য অনুরোধ করা হল। ম্যাস হিস্টিরিয়া বা প্যানিক ছড়িয়ে পড়া কারোরই কাম্য নয়।

- ডা. আবীর শাকরান মাহমুদ,
সহকারী বিমান বন্দর স্বাস্থ্য কর্মকর্তা
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর, ঢাকা।

আপনার মতামত দিন:


মানুষের জন্য এর জনপ্রিয়