Ameen Qudir
Published:2019-10-18 20:23:23 BdST
জীবিত নারীর শরীরে সদ্যমৃতার জরায়ু প্রতিস্থাপন: যুগান্তকারী সেই কাহিনি
শ্যামল চট্টোপাধ্যায়
___________________________
বন্ধ্যা বা বাঁজা মেয়েছেলে।
কথাটা আমাদের সবার জানা। যে বিবাহিত নারী সন্তান জন্ম দিতে পারেন না, তাকে এই অপবাদে ভূষিত করা হয়। কিন্তু একথাও আমরা জানি যে সন্তান জন্ম নেওয়ার ক্ষেত্রে নারী ও পুরুষের যেমন সমান ভূমিকা থাকে। আবার সন্তান জন্ম না হওয়ার ক্ষেত্রেও নারী বা পুরুষের কোন একজনের অক্ষমতা থাকতে পারে। কেবলমাত্র নারী নয়।
যাইহোক, আজ এমন একজন বন্ধ্যা নারীর কথা বলবো, যাকে আমরা বাজা বলি।
এই নারী একদিন সত্যিই সন্তান জন্ম দিলেন। না কোন অলৌকিক উপায়ে? না। তাহলে কীভাবে?
আসলে এই মহিলার কোন জরায়ুই ছিল না।
টানা ১০ ঘণ্টা অপারেশনের পর ব্রাজিলের সাও পাওলোতে ২০১৬ সালে ওই জরায়ুটি প্রতিস্থাপিত হয়।
যে নারীর জরায়ু প্রতিস্থাপন করা হয়েছে তিনি ৪০ বছর বয়সে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণে মারা যান। তার তিনটি সন্তান রয়েছে। আর যে নারীর শরীরে জরায়ু স্থাপন করা হয়, তার যৌনাঙ্গ ও গর্ভাশয় ঠিকভাবে গঠিত হয়নি। তবে তার ডিম্বাশয় ঠিক ছিল। বিশ্বে প্রতি ৪৫০০ জনের মধ্যে একজন নারী এই সমস্যায় ভুগছেন।
চিকিৎসকরা সেখান থেকে ডিম্বাণু নিয়ে সম্ভাব্য পিতার ভ্রূণের সঙ্গে নিষিক্ত করে এবং সেটি হিমায়িত করে রাখে। সেই নারীকে এমন ওষুধ দেয়া হয় যা তার শরীরের রোগ ক্ষমতাকে দুর্বল করে ফেলে, যাতে জরায়ু প্রতিস্থাপনে কোনো বাধা তৈরি না হয়। এর দেড় মাস পর থেকে তার ঋতুস্রাব হতে শুরু করে।
প্রায় সাত মাস পর নিষিক্ত ডিম্বাণুটি ৩২ বছর বয়সী ওই নারীর জরায়ুতে স্থাপন করা হয়। সবমিলিয়ে স্বাভাবিক গর্ভধারণের পর ২০১৭ সালের ১৫ ডিসেম্বর সিজারিয়ান অপারেশনের পর তিনি আড়াই কেজি ওজনের একটি শিশুর মা হন।
সাও পাওলোর ক্লিনিক্স হাসপাতালের চিকিৎসক ড. ডানি ইযেনবার্গ বলেছেন, জীবিত নারীদের শরীর থেকে জরায়ু প্রতিস্থাপন ছিল চিকিৎসা বিজ্ঞানের জন্য একটি যুগান্তকারী ব্যাপার, যার ফলে অনেক নারী মা হওয়ার সুযোগ পেয়েছেন।
আপনার মতামত দিন: