Ameen Qudir

Published:
2019-09-27 22:27:16 BdST

তথাকথিত অসংক্রামক লাইফ স্টাইল ঘটিত অসুখগুলি সবই একই সূত্রে বাঁধা


ডা. সিদ্ধার্থ মুখোপাধ্যায়

________________________

 

সম্প্রতি বিভিন্ন, তথাকথিত অসংক্রামক লাইফ স্টাইল ঘটিত অসুখ গুলি, যেমন হাইপারটেনশন, মায়োকার্ডিয়াল ইস্কিমিয়া
করোনারি আর্টারি ডিজিজ, সেরিব্রাল ইনফার্কশন, সেরিব্রোভাসকুলার ডিজিজ, ওবেসিটি, ডিসলিপিডিমিয়া, টাইপ টু ডায়বেটিস, ও তার জটিলতাগুলি, হাই ব্লাড ইউরিক অ্যাসিড এবং গাউট, অস্টিও আর্থরাইটিস, পলিসিস্টিক ওভারিয়ান ডিজিজ এমন কি অন্ত্রের কিছু ক্যানসার, ও ভয়ংকর আলঝাইমার্স ডিজিজ ( যার নাম আজকাল টাইপ থ্রি ডায়বেটিস)
এসব ই একই সূত্রে বাঁধা।
অথবা একই মালার বিভিন্ন অশিব পুষ্প।
শার্ল বোদল্যের এর লেখা লে ফ্ল্যর দু মাল
Charles Baudelaire - Les fleurs du mal. / The flowers of evil.
কার্য কারণ যে একই প্রায়।
রক্তে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে অধিক মাত্রায় ইনসুলিন নামের অতি প্রয়োজনীয় হরমোন টি।
কারণ অধিকাংশ কোষ এই ইনসুলিনের অভিঘাতেও নির্লিপ্ত, যার ভালো নাম ইনসুলিন রেজিস্টান্স।
এদিকে ইনসুলিনের মাত্রা বাড়ছে, বাড়ছে ইনসুলিন রেজিস্টান্স।
শরীর জুড়ে এক ধরণের অথবা বহু ধরণের ইনফ্লামেশন বা প্রদাহ শুরু হয়েছে।
ক্ষতি হতে শুরু হয়েছে অন্দর থেকে। নীরবে। লিভার ফ্যাট বা চর্বিতে পরিপূর্ণ, তার স্বাভাবিক দৈনন্দিন ৫০০ প্রায় কাজের অসুবিধে হচ্ছে বৈকি।
তবে এও নীরবে।
যাঁদের বা যাঁর হচ্ছে তিনি কিছুটি বুঝতে পারছেন না।
পরে কখনো দেখা যাবে ব্লাড প্রেসার বেশি আর অন্যান্য, যদি ডাক্তারবাবু রক্ত পরীক্ষা করতে বলেন আর রোগী / রোগিণী তা শোনেন।।
তবে তেমন অসুবিধে না হলে কেই বা ডাক্তারের কাছে যায় আর পরীক্ষা করায় বলুন।
ছুঁচ ফোটাতে লাগেনা বুঝি?
কত কষ্ট করে রক্ত তৈরী হয় ♥♥!!
তার চেয়ে সপরিবারে ওই টাকায় একদিন আইনক্সে সিনেমা আর ভালো জায়গায় খানাপিনা।
যে কটা দিন বাঁচা, রাজার বা রাণীর মতো বাঁচা।
একটাই যে জীবন।
সিদ্ধান্ত নিজের নিজের।।
একবার হাজার তিন বা চার, ডাক্তার - ওষুধ, পরীক্ষা ইত্যাদিতে খরচ না করে
বাঁচে বটে ;
তবে কিনা বড় অসুখ ক্যালেন্ডার দেখে আসেনা বলে যখন হটাৎ কিছু হবে তখন ছোটাছুটি, দৌড়, দুশ্চিন্তা আর জলের মতো অর্থব্যয়, লাখ খানেক টাকা তো কম করে খরচ হবেই, আরো অনেক বেশি ও হতে পারে বৈকি!!
জীবনের দাম ঠিক কত টাকা যেন!! ♦♦
২.
মানুষের এবং অন্যান্য অমানুষ প্রাণীর ও অভিযোজন, যার বাংলা ইভোলিউশন, একটি অতি ধীর প্রণালী।
ভারতে এবং সারা বিশ্বেই আমরা বৈদ্যুতিক ( কৃত্রিম) আলোতে অভ্যস্ত হয়েছি, একশ বছর কিংবা তার দু - তিন দশক বেশি। প্রজন্মের হিসেবে ধরলে তৃতীয় বা চতুর্থ প্রজন্ম। কিন্তু আমাদের স্বাভাবিক নিদ্রা র সময় আমরা একেবারে ওলট পালট করে ফেলেছি। তাতে আপাত সুবিধে হলেও মূল ঘুম বা নিদ্রার সময় একেবারে পরিবর্তিত হয়েছে, আমাদের অনেকেরই ঘুমের পরে যে তাজা ভাব টি বোধ হতো তা আজ আর তেমন বোধ হয় না।
মনে হয় আরেকটু ঘুম হলে ভাল হতো । এটি দেশীয় নয়, আন্তর্জাতিক। সর্বত্র।
আসলে আমাদের ঘুমের মধ্যে রাত ১১ টা থেকে রাত ১ টা, ( এই দুই ঘন্টা) গ্রোথ হরমোন ক্ষরিত হয়, অবশ্যই যদি আমরা সুষুপ্তি র কোলে থাকি তবেই। যদি কেউ রাত বারোটা য় ঘুমোন, তাহলে কিন্তু এই হরমোনের ক্ষরণ টি হবে না।
এটি ভীষণ উপকারী, শুধুমাত্র ১৮-২২ বছর বয়স পর্যন্ত তো বটেই, তার পরেও। তখন দৈনন্দিন ওয়্যার এ্যান্ড টেয়ার বা ক্ষয়ক্ষতি তো হতেই থাকে, তার মেরামত ও এই হরমোন টিই করে থাকে।
আমাদের ঘুমের সময়, সেইমত পালটে নেওয়াই বুদ্ধির কাজ। তদোপরি আমাদের প্রত্যেক 'অ্যাডাল্ট' দেরো সারাদিনের এক তৃতীয়াংশ ঘুম কিন্তু আবশ্যক। আট ঘন্টার কম লাগাতার ঘুম হলে স্লিপ ডেপ্রিভেশন জনিত ক্লান্তিবোধ এবং অন্যান্য উপসর্গ ও মাথা তুলবে, এটি স্মরণে রাখাই উচিত।।
___________________________

 

ডা. সিদ্ধার্থ মুখোপাধ্যায়
সুলেখক । কবি।
Diabetes & Endocrinology Consultant
M.D. at University of Madras । প্রাক্তন :
Calcutta National Medical College and Madras Medical College (MMC

 

আপনার মতামত দিন:


মানুষের জন্য এর জনপ্রিয়