Ameen Qudir

Published:
2019-04-26 05:13:03 BdST

প্রেসক্রিপশন ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি বন্ধে কঠোর নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট


 

 

ডেস্ক
_________________

রেজিস্টার্ড চিকিৎসকদের প্রেসক্রিপশন ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। নির্দেশনা আগামী দুদিনের মধ্যে প্রজ্ঞাপন জারি করতে বলা হয়েছে। জেলা প্রশাসক ও সিভিল সার্জনকে এ নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।

একই সঙ্গে রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, জানতে রুলও জারি করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০১৯ এ সংক্রান্ত দায়ের করা একটি রিটের শুনানিতে এ নির্দেশ দেন আদালত। বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি রাজিক-আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

এ ব্যপারে ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন বলেন, রোগের চাহিদা ছাড়াও ফার্মেসিগুলোতে রোগীকে অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হয়। শরীরে অতিরিক্ত অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করার কারণে একপর্যায়ে এসব রোগীর শরীরে আর অ্যান্টিবায়োটিক কাজ করে না। সম্প্রতি অতিরিক্ত অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের কারণে ৪০০ জন লোক মারা গেছেন। একটি দৈনিকে এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এ কারণে রিট করা হয়েছে।

গত ২২ এপ্রিল ব্রিটিশ দৈনিক দ্য টেলিগ্রাফে ‘সুপারবাগস লিঙ্কড টু এইট আউট অব টেন ডেথস ইন বাংলাদেশ আইসিইউ'স’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ) ৮০ শতাংশ মৃত্যুর জন্য অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী সুপারবাগ দায়ী।

এরপরই রিটটি দায়ের করেন সায়েদুল হক সুমন। রিট আবেদনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গবেষণা প্রতিবেদন তুলে ধরে বলা হয়, অ্যান্টিবায়োটিকের প্রতি শরীর প্রতিরোধ গড়ে তুললে সে অবস্থাকে বলা হয় অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স। এসব কারণে প্রতিবছর বিশ্বে সাত লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। ২০৫০ সাল নাগাদ এ সংখ্যা গিয়ে দাঁড়াতে পারে এক কোটিতে।

সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন বলেন, অ্যান্টিবায়োটিক শুধু যে আমরা নিজেরা নিচ্ছি তা নয়, কৃষিজাত পণ্য, গরু, ছাগল ও মুরগিতেও অ্যান্টিবায়োটিক ব্যাবহার হচ্ছে। ফলে পরোক্ষভাবে আমাদের শরীরে অ্যান্টিবায়োটিক প্রবেশ করছে। যার কারণে একটা বয়সে আর অ্যান্টিবায়োটিক কাজ করে না। অ্যান্টিবায়োটিক একটা সময়ে আমাদের জন্য ছিলো বড় আবিষ্কার, কিন্তু বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এই সময়ে এটা আমাদের জন্য অভিশাপ হয়ে দাড়িয়েছে। এর একমাত্র কারণ হলো অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রির ক্ষেত্রে বাংলাদেশে কোন নিয়ম-কানুন মানা হয় না।

তিনি বলেন, আমরা চেয়েছি যে অ্যান্টিবায়োটিকটা যেন অন্তত স্পেশালাইজড ডাক্তারের প্রেসক্রিপশান ছাড়া এটা বিক্রি না হয়। কারণ, বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষই অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যপারটা বুঝছেন না। আমি মনে করি এ ব্যাপারটা নিয়ে আমাদের এখনি সচেতন হওয়া প্রয়োজন, নয়তো আমাদের পরবর্তী ১/২টা জেনারেশনে আর কোন ওষুধে কাজ করবে না।

রিটে আরও বলা হয়, অপ্রয়োজনীয় ব্যবহারের কারণে অ্যান্টিবায়োটিকের কার্যকারিতা যে নষ্ট হয় বা হুমকি তৈরি করে-সে বিষয়টি তুলে ধরতে জাতীয় ওষুধ নীতি ব্যর্থ হয়েছে। অ্যাটিবায়োটিকের অপ্রয়োজনীয় ব্যবহার মানুষের মৃত্যুর ফাঁদ তৈরি করছে। রাষ্ট্রের দায়িত্ব হচ্ছে এই ফাঁদ থেকে মানুষকে রক্ষা করা।

 

আপনার মতামত দিন:


মানুষের জন্য এর জনপ্রিয়