Ameen Qudir
Published:2019-03-26 07:48:05 BdST
'৭১এর গনহত্যা: এক ডাক্তার পরিবারেরই ৮জন শহীদ
ডেস্ক
_______________________
মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানী হানাদার সেনাবাহিনীর গনহত্যায় এক ডাক্তার পরিবারেরই আটজন মারা গিয়েছিলেন। সেই পরম আত্মত্যাগী শহীদ পরিবার হল ডা. দীগেন্দ্র চন্দ্রের।
চুকনগরে এক ঘন্টার ১৫,০০০ মানুষকে মারা হয়েছিলো।
এক চট্রগ্রাম শহরে ১১৬টা চিহ্নিত বধ্যভূমি আছে।
সেই চট্রগ্রামের ১১৬ টা বধ্যভূমির একটা বধ্যভূমি নাম পাহাড়তলি বধ্যভূমি যার কেবল একটা গর্ত থেকে ১ হাজার ১০০ টা মাথার খুলি পাওয়া গিয়েছিলো, আর সেই একটা বধ্যভূমিতে এরকম প্রায় একশটি গর্ত ছিলো।
WCFC-র হিসাব অনুসারে সারাদেশে এখন পর্যন্ত বধ্যভূমি আবিস্কার হয়েছে ৯৪২টা। গণহত্যা নির্যাতন ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষণা কেন্দ্র সারা দেশের মাত্র ১৮টা জেলায় গণহত্যার স্পট, বধ্যভূমি, গণকবর ও নির্যাতন কেন্দ্রের খোঁজ পেয়েছে ৪৬০০টির বেশি।
তিরিশ লক্ষ শহিদের প্রমাণ আমরা রক্তে নিয়ে ঘুরি। এটা হাওয়ায় হাওয়ায় চেতনার কথা না, হাতে হাতে প্রমাণ দিয়ে দিচ্ছি। মুক্তিযুদ্ধের সময় আমাদের জনসংখ্যার যে ঘাটতি হয়েছিলো সেটা এখনো আমরা কাটিয়ে উঠতে পারি নাই...
UN এর পপুলেশান গ্রোথ রেটে মানে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার একটু দেখেনঃ
১৯৫০-১৯৫৫ সালে ১৪.৬,
১৯৫৫-১৯৬০ সালে ১৫.৩,
১৯৬০-১৯৬৫ সালে ১৫.৩,
১৯৬৫-১৯৭০ সালে ১৫.৭,
১৯৭০-১৯৭৫ সালে ৫.৩ *,
১৯৭৫-১৯৮০ সালে ১৪.২,
১৯৮০-১৯৮৫ সালে ১৪.৫,
১৯৮৫-১৯৯০ সালে ১৪.১
১৯৬৫-১৯৭০ সালে গ্রোথ-রেট ১৫ এর উপরে থাকা একটা দেশের পপুলেশান গ্রোথ রেট হঠাৎ ১৯৭০-১৯৭৫ সালে ৫.৩ হয়ে গেলো!! আরেকটু লক্ষ্য করলে দেখবেন ১৯৬৫ সালে আমাদের পপুলেশান গ্রোথ রেট যে ১৫.৭% ছিলো সেটা আমরা এখনো অর্জন করতে পারি নাই। অর্থাৎ এই যে তিরিশ লক্ষ শহিদ বেঁচে থাকলে তাদের যে বংশধরদের জন্ম হতো সেটা তিন প্রজন্ম পর হতো প্রায় এক কোটি এবং এই এক কোটি মানুষের ঘাটতি আমাদের পপুলেশান ডাটায় স্পষ্ট।
যদি আসলেই হিসেবটা করেন তাহলে দেখবেন স্বাভাবিক অবস্থার তুলনায় ৬৫ লক্ষ মানুষের হিসাব মিলছে না...
এবং সেই হিসাব আর কখনোই মেলেনি...
৭১ থেকে ৭৫ সালের ভেতরে আমাদের দেশ বেশ বড় বড় কয়েকটি দুর্যোগের ভেতর দিয়ে গিয়েছে...
১) সত্তরের ঘূর্ণিঝড়
২) চুয়াত্তরের দুর্ভিক্ষ
৩) যুদ্ধের পর ভারতে থেকে যাওয়া শরণার্থী
৪) রাজনৈতিক হত্যাকান্ড
৫) মুক্তিযুদ্ধ
চ্যালেঞ্জ করতে পারি ১ থেকে ৪ পর্যন্ত ঘটনাগুলোতে যে কোন উন্মুক্ত সোর্স থেকে সর্বোচ্চ দাবীকৃত হতাহতের সংখ্যা দিয়ে হিসেব করুণ দেখুন কোন ভাবে তিরিশ লাখের কম বানাতে পারেন কি না।
আমাদের প্রজন্মের মত নিমোখারাম জাতি সম্ভবত একটাও নাই। হে প্রজন্ম তোমাদের এত যখন সন্দেহ। যাও না দেখ না পৃথিবীর অন্যসব গনহত্যার খতিয়ান। এত যে শহিদের লিস্টি দাবী কর, দেখাও না এমন একটা যুদ্ধ যেখানে শহিদের লিস্ট করা হইসে...?এটা যুদ্ধ, কোন সার্কাস না। পৃথিবীর কোন যুদ্ধে কখনো শহিদের নামিয় তালিকা তৈরি করা যায় না।
কম্বোডিয়ার খেমারুজরা ২৬০ দিনে তাদের দেশের ২১% মানুষ মারসিল, রুয়ান্ডা ১০০ দিনে মোট জনসংখ্যার ২০% মারলো, চিনের নানকিং মাসাকারে এক মাসে ৩ লাখ মারলো, আর্মেনিয়ায় জনসংখ্যা ৪৩ লাখ এর ভিত্রেই ১৫ লাখ মাইরা ফেললো... নাইজেরিয়ার ৩৫,০০০ সৈনিক মিল্লা ৩০ লাখ মারসিলো
আর সাড়ে সাত কোটি জনগণের দেশে আর ৯২,০০০ পাকি সৈনিক আর দুই লাখ প্রশিক্ষিত রাজাকার নিয়া ৩০ লাখ ফিগার, মোট জনসংখ্যার মাত্র ৪% মানুষের মৃত্যু তোমার এত অসম্ভব মনে হয় কেন?
যে কোন হিসাবে... যে কোন যুক্তিতে... ১৯৭১ সালে শহিদের সংখ্যা তিরিশ লাখের বেশি... ।
লেখা সংগ্রহ সূত্র : ডা. সোলায়মান আহসান, দেবদুলাল গুহ, মেরী মেহজাবিন ।
আপনার মতামত দিন: