Ameen Qudir
Published:2019-03-26 07:11:45 BdST
অনন্য সেবার স্বীকৃতি : স্বাধীনতা পদক পেলেন দুই লোকসেবী চিকিৎসক
ডেস্ক
____________________
রোগী সেবা ও মুক্তিযুদ্ধে অনন্য ভূমিকার স্বীকৃতি হিসেবে এ বছর স্বাধীনতা পদক পুরস্কার পেয়েছেন দুইজন লোকসেবী চিকিৎসক। এরা হলেন, ডা. কাজী মেজবাহুন নাহার এবং ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডাক্তার নূরুন্নাহার ফাতেমা বেগম।
সোমবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত পদক প্রদান অনুষ্ঠানে দুই চিকিৎসকসহ একটি প্রতিষ্ঠান ও ১২ জন বিশিষ্ট ব্যক্তির হাতে পদক তুলে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের সভাপতিত্বে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম পদক প্রদান অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন।
ডাক্তার প্রতিদিন সম্পাদক ডা. সুলতানা এলগিন এবং তার টিম সদস্যরা মহতী চিকিৎসককে এক বিবৃতিতে অভিনন্দিত করেন।
ওদিকে স্বাধীনতা পুরস্কার-২০১৯-এ ভূষিত ব্যক্তিদের মধ্যে এ কে এম মোজাম্মেল হক, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, ডা. কাজী মিসবাহুন নাহার, চিকিৎসা বিজ্ঞানে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নুরুন্নাহার ফাতেমা বেগম, সমাজসেবায় ড. কাজী খলীকুজ্জামান আহমেদ, সংস্কৃতিতে মুর্তজা বশীর, সাহিত্যে হাসান আজিজুল হক, গবেষণা ও প্রশিক্ষণে অধ্যাপক ড. হাসিনা খান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে পদক গ্রহণ করেন।
স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বুদ্ধিজীবী মোফাজ্জ্বল হায়দার চৌধুরী (মরণোত্তর), শহীদ এ টি এম জাফর আলম (মরণোত্তর), আব্দুল খালেক (মরণোত্তর), অধ্যাপক মোহাম্মাদ খালেদ (মরণোত্তর) ও শওকত আলী খানের (মরণোত্তর) পক্ষে পরিবারের সদস্যরা পদক গ্রহণ করেন।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে অবদানের জন্য বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব এগ্রিকালচারের (বিআইএনএ) পক্ষে প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক পদক গ্রহণ করেন।
স্বাধীনতা পদকের ক্ষেত্রে পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে ১৮ ক্যারেট মানের পঞ্চাশ গ্রাম স্বর্ণের পদক, পদকের একটি রেপ্লিকা, তিন লাখ টাকা ও একটি সম্মাননাপত্র দেয়া হয়।
ডা. নুরুন্নাহার ফাতেমা
______________________
১৯ সেপ্টেম্বর ১৯৬২ সালে সিলেট নগরীর মিরাবাজার এলাকায় জন্মগ্রহন ডা. নুরুন্নাহার ফাতেমা। সিলেট কিশোরী মোহন উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও সিলেট সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন তিনি।
ফাতেমা নাহার সিলেট উসমানী মেডিকেল কলেজের ১৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থী হিসেবে এমবিবিএস পাস করেন। ১৯৮৭ সেনাবাহিনীর মেডিকেল কোরে যোগ দেন। সেনাবাহিনীতে যোগদান করে ১৯৯৫ সালে বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ানস অ্যান্ড সার্জনসের (বিসিপিএস) অধীনে পেডিয়াট্রিক্স এ এফসিপিএস (FCPS) পাস করেন।
১৯৯৬ সালে তিনি কিং সুলতান কার্ডিয়াকে শিশু কার্ডিওলজিতে দুই বছরের ট্রেনিং নিতে সৌদি আরব যান। তারপর এডিনবার্গ থেকে এফআরসিপি (FRCP),ইউএসএ তে এফএসিসি (FACC) এবং এফএসসিএআই (FSCAI) নামক উচ্চতর ডিগ্রি এবং ফেলোশিপ অর্জন করেন।
১৯৯৮ সালে দেশে ফিরে তিনি বাংলাদেশে প্রথম শিশু কার্ডিওলজি হিসেবে কাজ করা শুরু করেন। পরে শিশুদের বিনা অপারেশনে চিকিৎসা শুরু করেন তিনি। ২০০৯ সালে আমেরিকান কলেজ অব কার্ডিওলজি থেকে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করেন।
বিবাহিত জীবনে দুই কন্যা সন্তানের জননী সাহসী এ নারীর পথচলা কখনোই সহজ ছিল না। ১৫ বছর বয়সে বাবা-মা দুজনকেই হারান। তাঁর দ্বিতীয় কন্যার অকালপক্ব (Premature) জন্ম বিদেশে ট্রেনিং চলাকালীন সময়ে হয়।
এছাড়া নারী বিশেষজ্ঞ হিসাবে শিশু হৃদরোগে জায়গা করা ও কষ্টসাধ্য ছিল। পরিবার, ট্রেনিং, চাকুরী, উচ্চশিক্ষা, সামাজিক অবদান সব কিছু সামলানোর স্বীকৃতি হিসাবে এ বছর তিনি স্বাধীনতা পদক পুরষ্কার পেয়েছেন।
আপনার মতামত দিন: