Ameen Qudir
Published:2019-02-26 00:07:37 BdST
MMCHনিজের জীবনকে বিপন্ন করে পরিবার থেকে দূরে থেকে রোগীদের সেবায় অতন্দ্র প্রহরী এই ডাক্তার
ডা. স্বীকৃতি সাহা
_____________________
কথায় কথায় আমরা নানা দেশের ডাক্তারদের , স্বাস্থ্যসেবা কর্তাদের প্রশংসায় গা ভাসাই। নিজেরাও আপ্লুত হই। আহা উহুতে কান পাতা দায়। কোন রাজ্যের প্রশাসন কর্মকর্তা রোগীদের খোঁজখবর করছেন , সে ছবি দিলেলোইক আর শেয়ারের বন্যা বয়ে যায়। এই পাঠক প্রিয় ডাক্তার প্রতিদিনেও দেখেছি , কর্তৃপক্ষ অন্য কোন রাষ্ট্র বা রাজ্যের কোন জনসেবীর স্টোরি দিলে হাজার হাজার শেয়ার।
অথচ বাংলাদেশেই কত মেডিকেল ব্যাক্তিত্ব আছেন , যারা সততার প্রতীক। দিবারাত খেটে যাচ্ছেন রোগীর সেবায়। তাদের বেলায় ডাক্তার কসাই বলে মন্তব্য করেই চুপ। এই ছবিই দেখুন প্রমাণ করছে , দেশের মেডিকেল পরিচালক , চিকিৎসকরা কিভাবে নিজেদের হাসপাতালের রোগীর সেবায় বিলিয়ে দেন নিজেকে। ছুটে যান রসুই খানায়। রোগীর কাছে যাতে বাসী , অস্বাস্থ্যকর খাবার পৌছাতে না পারে তা নিশ্চিত করেন। এ ছবি একটি মেডিকেল হাসপাতালের নয়। বেশীর ভাগ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের। কিন্তু সেজন্য ডাক্তাররা কি প্রশংসা পেয়েছেন। ছবির এই ব্যাক্তি হলেন , ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. নাসির উদ্দিন আহমেদ। বয়স ৫৭ বছরের ঘরে। ডায়াবেটিস ও হাইপারটেনশনে এ ২০ বছর ভুগছেন। ইদানীং চোখে ছানি পড়েছে। পরিবার থেকে ৩ বছর ৪ মাস বিচ্ছিন্ন। একা অফিসার মেসে থাকেন। বৃদ্ধা মা ও দুই মেয়ের ডাক্তারি পড়ার কারনে স্ত্রী আসতে পারে না। তার সংসার কেবল ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের রোগীদের নিয়ে। তাদের সেবায়ই নিবেদিত তার জীবন।
মজিবুর রহমান শেখ মিন্টু
লিখেছেন,
খবরের পেছনে খবর !
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
এখন দেশের সেরা হাসপাতাল।
কিন্তু যে ছবিটি দেখছেন, এইরকম কিছু ছবির কর্মকান্ডের কারণেই আজ এই হাসপাতালটি দেশের সেরা।
পরিচালক ব্রিগেডিয়ার ডা. নাসির উদ্দিন আহমেদ অক্লান্ত পরিশ্রম ও লাগাতার যুদ্ধ করে জীবনকে প্রায় বিপন্ন করে এই হাসপাতালকে আজকের অবস্থানে এনেছেন।
কিন্তু এই বীরযোদ্ধা মানুষটি এত লড়াই, সংগ্রাম, যুদ্ধ করে, জীবন শেষ করে কি পেলেন ?
আমার নিবেদন শিরনামে ডা. নাসির উদ্দীন আহমেদ এক রোজনামচায় জানাচ্ছেন কিছু অব্যাক্ত কথা।
#আমার_নিবেদন
আমি আপনাদের এ শহরে ৩ বছর ৪ মাস কাটাচ্ছি। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক হিসেবে কাজ করতে গিয়ে জীবনের কঠিনতম কষ্ট ও যন্ত্রনা সহ্য করেছি।একা একজন একটা ভোগবাদী ব্যবস্থা কে পরিবর্তন করতে পারে না।
ব্যাক্তিগত জীবনে আমি প্রচার বিমুখ। আত্মসন্মান বোধ প্রখর।দিন যত যাচ্ছে মানুষের আচরণ আমাকে কষ্ট দিচ্ছে। এ মানুষগুলো আমার ক্যাম্পাসের মানুষ। এরা প্রতিদিনই কোন না কোন ভাবে আমাকে মানসিক ভাবে উৎপীড়ন করছে।
আমি ৫৭ বছরের ঘরে। ডায়াবেটিস ও হাইপারটেনশনে এ ২০ বছর ভুগছি। ইদানীং চোখে ছানি পরেছে। পরিবার থেকে ৩ বছর ৪ মাস বিচ্ছিন্ন। একা সেনাবাহিনীর অফিসার মেসে থাকি। বৃদ্ধা মা ও দুই মেয়ের ডাক্তারি পরার কারনে স্ত্রী আসতে পারে না।
এটা সঠিক জীবন পদ্ধতি নয়। কিন্তু এটা আমার নিয়ন্ত্রণ এ নেই। আল্লাহর হক আদায় করি নি জীবনে। যতটুক হায়াত আছে ততটুকু আল্লাহর কাজে ব্যায় করতে চাই। দীর্ঘ ৩০ বছর চাকুরী জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে পরন্ত বেলায় উপলব্ধি করছি
নীতি আদর্শ নিয়ে বাংলাদেশ এ টিকে থাকা প্রায় অসম্ভব।
আমি এখন ক্লান্ত। জীবিকার প্রয়োজনে চাকুরী করছি। আমি ময়মনসিংহ বিভাগের অসাধারণ সাধারণ মানুষের ভালবাসার জন্য আন্তরিক ভাবে কৃতজ্ঞ। এটাই আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ সময়।
কারো সাথে বিতর্কে জড়াতে চাই না। তাই নিভৃতে আল্লাহর সাথে সম্পর্ক নিবিড় করতে চাই। ফেইসবুক এ আমি জনপ্রিয় বা স্টান্টবাজি করতে আসি নি। বিনোদনের ও কমিটমেন্ট এর জন্য থেকেছি।আপনাদের দোয়ায় আমার মত পাপী কে হয়তো আল্লাহ ক্ষমা করে দিবেন।
বিনীত
নাসির উদ্দীন আহমেদ
আপনার মতামত দিন: