Ameen Qudir
Published:2019-01-14 23:14:13 BdST
শিক্ষাবয়োবৃদ্ধ পিতাকে বাসায় নিজ হাতেই খাইয়ে দেন বাংলাদেশের মন্ত্রী
পরম শ্রদ্ধেয় বৃদ্ধ বাবাকে নিজ হাতে খাবার খাইয়ে দিচ্ছেন গৃহায়ন ও গনপূর্ত মন্ত্রী এডভোকেট শ ম রেজাউল করিমএম পি
ডা. সুলতানা আলগিন
মনোবিদ, ওসিডি কনসালটেন্ট
সহযোগী অধ্যাপক
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়
___________________________
নতুন সরকার ক্ষমতা গ্রহনের পর নবীন সহ নতুন মন্ত্রীদের নানা কর্মমুখর উদ্দীপনাময় ছবিতে অনলাইন ফেসবুক সহ মিডিয়া ভরপুর । অনেকে নানা কর্ম প্রত্যয়ে ও প্রতিশ্রুতিতে জনগনকে জাগানোর চেষ্টা করছেন। কেউ মটর সাইকেলে চড়ে বা হেঁটে অফিস করছেন। কেউ সকল জীর্ণ পুরাতনকে বিদায় দিয়ে নতুন দিনের জয় পতাকা উড়ানোর প্রতিজ্ঞা করছেন।
এসব ছবি ও প্রত্যয় নিয়ে পক্ষে বিপক্ষে নানারকম প্রতিক্রিয়া ও মিঠে কড়া মন্তব্য চলছে । ট্রলিংও চলছে।
আমি সেসব তর্কিত বিষয়ের মধ্যে যাচ্ছি না। শুধু বলব, নতুন গৃহায়ন ও গনপূর্ত মন্ত্রী এডভোকেট শ ম রেজাউল করিমের এই ছবিটি আমাকে গভীর ভাবে আপ্লুত করেছে। মর্মস্পর্শী মন ছুঁয়ে যাওয়া ছবি।
এ যেন প্রাণের ছবি। নিষ্কলুষ ছবি। যতদূর জেনেছি , এডভোকেট শ ম রেজাউল করিমের বাড়ি এবং আমার বাড়ি একই উপজেলায়; স্বরূপকাঠিতে। যদিও তাঁর সঙ্গে আমার ব্যাক্তিগত পরিচয়ের সুযোগ ঘটে নি।
কিন্তু এই ছবি যেন প্রাণের বন্ধনে আমাদের সবাইকে বেধেঁছে।
বিশ্বাস করি, এ ছবি কোন স্ট্যান্ট নয়। বিশ্বাস করবোই না কেন , শুনেছি স্বরূপকাঠিতে আমার দাদা সাহেব তার পিতাকে এভাবেই খাইয়ে দিতেন। সেটাই ছিল রেওয়াজ। সেটাই ছিল অবিভক্ত ভারতে বাঙালিয়ানা। তাই এ ছবি মনুষ্যত্ব বোধের ছবি। নিজের আত্মাকে জাগানোর ছবি। অন্যের অন্তরাত্মাকেও জাগানোর ছবি।
আপনি আচরি কর্ম অন্যকে উদ্বুদ্ধ করার ছবি।
মন্ত্রী সাহেবকে ধন্যবাদ দিতে চাই। তিনি সৌভাগ্যবান সন্তান। যিনি নিজের পিতাকে এভাবে ভালবাসা ও শ্রদ্ধা এবং সেবার সুযোগ পেয়েছেন।
এ ছবি পারিবারিক শিক্ষারও । যে পরিবারে পরস্পর সপ্রেম সম্পর্ক ; পিতা মাতা সন্তান ভাই বোনসহ সকল নিকটাত্মীয়সহ সকলের মধ্যে শ্রদ্ধা স্নেহ ভালবাসা অনুরাগ দায়িত্ব বোধ কর্তব্য বোধের সম্পর্ক আছে ; সে পরিবারের সন্তানই এরকম অনিন্দ্যমধুর ছবি ও কর্মের জন্ম দিতে পারেন। আমি বিশ্বাস করি , এ ছবি একদিনের নয়। সব সময়ের।
এটা আমরা সকলেই জানি, আজ আমি বৃদ্ধ পিতা মাতার সেবা করলে কাল বার্ধ্যকে সন্তানও আমার সেবা করবে । এই দেয়া নেয়ার সহজ সরল স্বাভাবিক রীতি প্রাকৃতিক এবং চিরকালের। এই কথাটি বলার জন্যই আমি মন্ত্রী মহোদয়ের ছবিটি বেছে নিয়েছি।
স্কুল পাঠে পিতা মাতার প্রতি সন্তানের কর্তব্য ; একই ভাবে সন্তানের প্রতি পিতা মাতার দায়িত্ব কর্তব্য আমরা পড়েছি। রচনা লিখেছিও।
গীতা বাইবেল তোরা, ত্রিপিটক , জেন্দাবেস্তা ও কোরানেও এই দায়িত্ব বোধের কথাগুলো লেখা ছিল। কিন্তু সেসব আমরা ব্যাক্তিজীবনে পালন করি ক'জন।
কিন্তু পালন করাটা দরকার। নিজের স্বার্থেই দরকার।
জীবন তো বহতা নদী। বইবেই। আজ যে শিশু । কাল সে পিতা। পড়শু সে বৃদ্ধ। জীবনের সরল চক্র।
জীবনের সকল পরিক্রমায় যদি সুস্থ সাবলীল থাকতে চাই। তবে আজকের যথা কর্তব্য পালন করা দরকার।
সেটা যদি পালন করি, তবে আগামী দিনে তার সুফল পাব।
মন্ত্রী মহোদয়ের পিতা একজন দায়িত্ব পিতা এবং সন্তান ছিলেন। তিনি নিশ্চয় পিতার প্রতি সঠিক দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তার সেই সেই পারিবারিক শিক্ষায় সু শিক্ষিত সন্তান এডভোকেট শ ম রেজাউল করিম আজ পিতার সেবা করছেন।
মনোভাবনায় কখনও চোখ ঝাপসা হয়ে আসে। একটা সময় ছিল , মন্ত্রীর এই ছবিটি ঘরে ঘরে দেখা যেত। এ ছবি বাঙালির চিরন্তন পারিবারিক ছবির ফ্রেম। আজ কি এই মনোরম দৃশ্য বিরল হয়ে পড়েছে। যদি পড়ে, আমাদের কারণ খুঁজতে হবে।
এবং নিজের স্বার্থের বাঙালির এই চিরন্তন ছবিটি ঘরে ঘরে প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
ভাল থাকুন সকলে। শুভকামনা নিরন্তর।
_____________________________
ডা. সুলতানা আলগিন, সম্পাদক , ডাক্তার প্রতিদিন
আপনার মতামত দিন: