Ameen Qudir

Published:
2019-01-07 07:31:28 BdST

নতুন মন্ত্রিসভানতুন মন্ত্রীসভায় চিকিৎসকদের জয়জয়কার: শিক্ষা, ত্রাণ ও স্বাস্থ্য সহ গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রক পাচ্ছেন


 

 

ডা. স্বীকৃতি সাহা
_____________________


প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার নতুন মন্ত্রী সভায় চিকিৎসকদের জয়জয়কার। শিক্ষা , দুর্যোগ ও ত্রাণ ,স্বাস্থ্যসহ তিন মন্ত্রী হলেন ডাক্তার। একাদশ সংসদ নির্বাচনে চিকিৎসক পেশাজীবিদের রেকর্ড সংখ্যক জয়ে তেমনই আশা করা গিয়েছিল।  গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রক ডাক্তারদের দেয়া হোক, তেমন জোর দাবি উঠেছিল চিকিৎসক মহল থেকে।  শিক্ষামন্ত্রী হচ্ছেন ডা. দীপু মনি। দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রক পাচ্ছেন ডা. এনামুর রহমান  । স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রীও একজন ডাক্তার। তিনি হলেন ডা. মুরাদ হাসান । মিডিয়ার খবর হল,


বিদায়ী সরকারে থাকা প্রবীণ ও বয়োজ্যেষ্ঠ মন্ত্রীদের অধিকাংশেরই জায়গা হয়নি নতুন মন্ত্রিসভায়। গত দুইবার শরিক দলের নেতারা ছিলেন। এবার নতুন মন্ত্রিসভার সবাই আওয়ামী লীগের।

প্রধানমন্ত্রীসহ নতুন মন্ত্রিসভার আকার দাঁড়িয়েছে ৪৭ জনে। তাদের মধ্যে অর্ধেকের বেশি মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী প্রথমবারের মত সরকারের দায়িত্ব পালন করতে আসছেন। বিদায়ী সরকারে থাকা ৩৪ জনের নতুন মন্ত্রিসভায় স্থান হয়নি।

সরকারের ২৪ জন মন্ত্রীর মধ্যে নয়জনই একেবারে নতুন। বিদায়ী সরকারে না থাকলেও আগে মন্ত্রিসভায় দায়িত্ব পালন করেছেন এমন তিনজনকে শেখ হাসিনা ফিরিয়ে এনেছেন পূর্ণ মন্ত্রী হিসেবে।

পুরনোদের মধ্যে যে সাতজন মন্ত্রী নতুন সরকারে টিকে গেছেন, তাদের ছয়জনই আগের দপ্তরে থেকে যাচ্ছেন। এছাড়া গত সরকারের পাঁচজন প্রতিমন্ত্রীর এবার পদোন্নতি হয়েছে।

শেখ হাসিনার গত সরকারে অনির্বাচিত (টেকনোক্র্যাট) মন্ত্রী ছিলেন চারজন, তাদের মধ্যে দুজনকে এবারও সরকারে রাখা হয়েছে। এছাড়া টেকনোক্র্যাট হিসেবে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে এসেছেন একজন।

প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়া ১৯ জনের মধ্যে ১৫ জনই সরকারে আসছেন এই প্রথমবার। তিনজন শেখ হাসিনার গত সরকারেও প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। আর একজন আগে সরকারে থাকলেও গত মন্ত্রিসভায় ছিলেন না।

শেখ হাসিনা তার এবারের সরকারে তিন মন্ত্রণালয়ে তিনজনকে উপমন্ত্রী করেছেন, তাদের সবাই নতুন মুখ।

সোমবার বিকাল সাড়ে ৩টায় বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের কাছ থেকে দায়িত্ব পালনের শপথ নেবেন নতুন সরকারের সদস্যরা।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম রোববার বিকালে সংবাদ সম্মেলন করে নতুন সরকারের মন্ত্রিসভার সদস্যদের নাম ও দপ্তর জানিয়ে দেন।

বাংলাদেশে আগে কখনও এভাবে সংবাদ সম্মেলন করে নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যদের নাম ঘোষণা হয়নি। কারা সরকারে থাকছেন তার চূড়ান্ত তালিকা জানতে সাংবাদিকদের শপথ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হত।

 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

মন্ত্রি পরিষদ বিভাগ, জনপ্রশাসন ও প্রতিরক্ষা, সশস্ত্র বাহিনী, বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়

 

মন্ত্রী

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়: আ ক ম মোজাম্মেল হক

সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়: ওবায়দুল কাদের

কৃষি মন্ত্রণালয়: আবদুর রাজ্জাক

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়: আসাদুজ্জামান খান কামাল

তথ্য মন্ত্রণালয়: হাছান মাহমুদ

আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়: আনিসুল হক

অর্থ মন্ত্রণালয়: আ হ ম মুস্তফা কামাল
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়: তাজুল ইসলাম

 

শিক্ষা মন্ত্রণালয়: দীপু মনি

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়: এ কে আবদুল মোমেন

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়: এম এ মান্নান

শিল্প মন্ত্রণালয়: নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন

বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়: গোলাম দস্তগীর গাজী

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়: জাহিদ মালেক

খাদ্য মন্ত্রণালয়: সাধন চন্দ্র মজুমদার

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়: টিপু মুনশি

সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়: নুরুজ্জামান আহমেদ

গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়: শ ম রেজাউল করিম

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়: শাহাব উদ্দিন

পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়: বীর বাহাদুর উ শৈ সিং

ভূমি মন্ত্রণালয়: সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ

রেলপথ মন্ত্রণালয়: নুরুল ইসলাম সুজন

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়: ইয়াফেস ওসমান (টেকনোক্রেট)

ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়: মোস্তাফা জব্বার (টেকনোক্রেট)

প্রতিমন্ত্রী

শিল্প মন্ত্রণালয়: কামাল আহমেদ মজুমদার

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়: ইমরান আহমেদ চৌধুরী

যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়: জাহিদ আহসান রাসেল

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়: নসরুল হামিদ বিপু

মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ মন্ত্রণালয়: আশরাফ আলী খান খসরু

শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়: মুন্নুজান সুফিয়ান

নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়: খালিদ মাহমুদ চৌধুরী

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়: জাকির হোসেন

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়: শাহরিয়ার আলম

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়: জুনাইদ আহমেদ পলক

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়: ফরহাদ হোসেন

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়: স্বপন ভট্টাচার্য্য

পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়: জাহিদ ফারুক

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়: মুরাদ হাসান

সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়: শরীফ আহমেদ

সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়: কে এম খালিদ

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়: এনামুর রহমান

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়: মাহবুব আলী

ধর্ম বিষয় মন্ত্রণালয়ে শেখ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ ( টেকনোক্রেট)

উপমন্ত্রী

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ে হাবিবুন নাহার

পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ে এ কে এম এনামুল হক শামীম

শিক্ষা মন্ত্রণালয় মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল

দীপু মনি শিক্ষা মন্ত্রকে আসার আগেও সফল পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন। উইকিপিডিয়া বলছে ,
ডা. দিপু মনি (জন্ম: ৮ ডিসেম্বর, ১৯৬৫) একজন বাংলাদেশী নারী রাজনীতিবিদ যিনি ২০০৯ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৮ সালে আওয়ামীলীগের জয়লাভের পর বাংলাদেশে প্রথম মহিলা পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে তিনি নিয়োগ পান। ডা: দীপু মনি, এমপি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও সাবেক পররাষ্ট্র মন্ত্রী। দশম জাতীয় সংসদে ডা: দীপু মনি চাঁদপুর-৩ (চাঁদপুর- হাইমচর) এর প্রতিনিধিত্ব করছেন।সামাজিক উন্নয়ন এবং প্রশাসনিক ক্ষেত্রে তাঁর অনন্য অবদানের জন্য তিনি মাদার তেরেসা আন্তর্জাতিক পুরষ্কারে ভূষিত হন। ২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের ২০তম কাউন্সিলে তিনি পুনরায় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত হন । ৬ জানুয়ারী ২০১৯ এ তিনি একাদশ জাতীয় সংসদের অধীনে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এর দায়িত্ব পান।

দীপু মনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ-এর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এবং ভাষা আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ও পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র লীগের প্রথম কাউন্সিল-নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক এম.এ ওয়াদুদের কন্যা। তিনি হলিক্রস কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস এবং বাংলাদেশ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় হতে এলএলবি পড়েন। এমবিবিএস ডিগ্রি লাভের পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব পাবলিক হেলথ থেকে এমপিএইচ ডিগ্রি অর্জন করেন। এছাড়া তিনি লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিষয়ে মাস্টার্স ডিগ্রি ও হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমঝোতা ও দ্বন্দ্ব নিরসন এর ওপর একটি কোর্স সম্পন্ন করেন। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের একজন আইনজীবী ।একাদশ জাতীয় নির্বা

দিপু মনি চাঁদপুর-৩ আসনের নির্বাচিত সংসদ সদস্য। তাঁর নেতৃত্বে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়- প্রতিবেশী দেশসমূহের সাথে বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী থাকাকালীণ সময়ে তিনি কমনওয়েলথ মিনিস্ট্রেরিয়াল অ্যাকশন গ্রুপ-এর প্রথম নারী এবং দক্ষিণ এশীয় চেয়ারপার্সন নির্বাচিত হন। এছাড়া তাঁর নেতৃত্বে বাংলাদেশ সমুদ্র জয় করে। এতে করে বাংলাদেশ সরকার প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমার এবং ভারতের সাথে প্রায় চার দশকের সমুদ্র সীমা সংক্রান্ত অমীমাংসিত বিষয়টি আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় চূড়ান্ত ভাবে নিষ্পত্তির উদ্যোগ গ্রহণ করে ।


ব্যক্তিগত জীবন
বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের এ্যাডভোকেট তৌফীক নাওয়াজ দীপু মনি'র স্বামী। তিনি আন্তর্জাতিক একটি ল’ফার্মের প্রধান। তিনি উপমহাদেশের দু’ হাজার বছরের ঐতিহ্য মন্ডিত ধ্রুপদী সঙ্গীতের উৎস হিসেবে পরিচিত ‘আলাপ’ এর একজন শিল্পী। তাঁদের রয়েছে দু’সন্তান। পুত্র তওকীর রাশাদ নাওয়াজ ও কন্যা তানি দীপাভলী নাওয়াজ।

 

আপনার মতামত দিন:


মানুষের জন্য এর জনপ্রিয়