Ameen Qudir

Published:
2019-01-05 00:53:14 BdST

ব্রতীসৈয়দ নজরুল মেডিকেলের মাতৃসমা শীলা ঠাকুর: বিশ্বমানের প্রতিষ্ঠান করার স্বপ্ন দেখতেন




 

ডেস্ক
______________________

দেশে এসে অসুস্থ হওয়ার আগ পর্যন্ত স্বামী সৈয়দ আশরাফের বাবা দেশের প্রথম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলামের নামে প্রতিষ্ঠিত কিশোরগঞ্জের মেডিকেল কলেজটির দেখাশোনা করতেন শীলা ঠাকুর । তিনি ছিলেন অনন্য সম্ভ্রান্ত ব্যাক্তিত্বের অধিকারী। কলেজের সর্বস্তরের শিক্ষার্থীর মাতৃসমা। শিক্ষক ডাক্তার কর্মীদের পরম অভিভাবক ও আত্মীয়সমা। সবার ভালমন্দের খোজঁখবর করতেন। মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে বিশ্বমানের প্রতিষ্ঠান করার স্বপ্ন দেখতেন তিনি। উদযোগও নিয়েছিলেন। উচ্চশিক্ষিত এই নারী মেডিকেল কলেজের শিক্ষা মান উন্নয়নেও ব্রতী ছিলেন।
অকাল প্রয়াত তিনি। স্বামী সৈয়দ আশরাফের অকাল প্রয়াণে মেডিকেল কলেজটির সর্ব স্তরের শিক্ষার্থী শিক্ষক কর্মী শোকার্ত। তারা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছেন প্রয়াত শিলা ঠাকুরকেও। বলছেন অমন মহৎ প্রাণ আর হয় না। অমন আপনজন আর হয় না।

অকাল প্রয়াত শীলা ঠাকুর ইসলামকে নিয়ে কথা বলেন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের ভাগ্নি দিলশাদ খলিল লেনা। তিনি বলেন,
মামি ছিলেন অন্য রকম সাধারণ এক নারী। যেমন মামার সহজ-সরল সাধারণ চলাফেরা, ঠিক তেমনই ছিলেন মামি। প্রভাবশালী একজন মানুষের স্ত্রী হয়েও তার কোনো অহমিকা ছিল না।’
লন্ডনের কিংস কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায়মারা যান সৈয়দ আশরাফের স্ত্রী শীলা ঠাকুর। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৫৭ বছর। তিনি দীর্ঘদিন দূরারোগ্য ক্যান্সারে ভুগছিলেন।

লেনা বলেন, ‘এমন প্রভাবশালী একজন মানুষের স্ত্রী হয়েও কোনো অহমিকাতো দূরের কথা, সামান্যতম কোনো ক্ষমতার প্রভাব খাটাতেন না মামি।’

 

সৈয়দ আশরাফের পরিবারের সদস্য ও তার স্বজনরা জানান, শীলা যুক্তরাজ্যের নাগরিক হলেও বাংলাদেশের টানেই শেষ জীবনটি ব্যয় করে গেছেন এদেশে।

 

লেনা বলেন, যুক্তরাজ্যের একটি খ্যাতনামা স্কুলের শিক্ষকতার লোভনীয় চাকরি আর আধুনিক জীবনের সুযোগ ছেড়ে গত আওয়ামী লীগ সরকারের মেয়াদেই বাংলাদেশে চলে আসেন শীলা। আপন করে নেন সৈয়দ আশরাফের পরিবারের সবাইকে।
মামি এতো অল্পতেই সবাইকে আপন করে নিয়েছিলেন যে তিনি যে একজন বিদেশিনী তা বোঝার কোনো উপায় ছিল না।

 

সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর মিডিয়াকে জানান, ‘জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফের স্ত্রী শীলা আসামের সম্ভ্রান্ত এক হিন্দু পরিবার (কুলীন ব্রাহ্মণ) পরিবারের কন্যা ছিলেন। সে সময়ে হিন্দু-মুসলমানের বিয়েটা বাঙালি সমাজ কিভাবে নিতেন জানি না। কিন্তু দুজনের প্রেমের শক্তি এতই প্রবল ছিল যে দুই পরিবারই পরে পরাজিত হয়, দুজনের একসঙ্গে পথ চলা শুরু হয়।’

সৈয়দ আশরাফের সদ্যপ্রয়াত স্ত্রীর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘মৃত্যু-গঙ্গার ওপারে বড় ভালো থাকবেন শীলা ঠাকুর বা শিলা ইসলাম।’


উল্লেখ্য, ১৯৮৪ সালে লন্ডনে আশরাফ-শীলা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। দাম্পত্য জীবনে তাদের এক কন্যা সন্তান রয়েছে। তারা দীর্ঘদিন যুক্তরাজ্যের লন্ডনে বসবাস করে আসছিলেন।

আপনার মতামত দিন:


মানুষের জন্য এর জনপ্রিয়