Ameen Qudir
Published:2018-10-25 02:31:27 BdST
মানুষের চিকিৎসা সেবার প্রয়োজনীয় সব কিছু করার কথা নিশ্চিত করলেন প্রধানমন্ত্রী
ফাইল ছবি
ডেস্ক
______________________________
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তাঁর জীবনে এখন একটাই কাজ তাহলো মানুষকে উন্নত জীবন উপহার দেওয়া। সে লক্ষ্যে যা যা করা প্রয়োজন তার সবটুকুই করবে আওয়ামী লীগ সরকার।দেশের মানুষের চিকিৎসা সেবার সবটুকুই নিশ্চিত করা হবে ।
২৪ অক্টোবর রাজধানী ঢাকাতে শেখ হাসিনা ন্যাশনাল বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক ইনস্টিটিউটের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন । আগুন পোড়া রোগীদের চিকিৎসায় নির্মিত ১৮ তলার সুবিশাল প্রতিষ্ঠান। সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়ে বিশ্বের বৃহত্তম বার্ন ইনস্টিটিটিউট চালু হল।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বার্ন ইনস্টিটিউট
দ্রুততম সময়ে প্রতিষ্ঠানটি নির্মাণ করা হয়েছে । যারা কাজে সম্পৃক্ত ছিলেন তাদের সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। মাত্র ২ বছরের মধ্যে কাজটি শেষ হয়েছে। তবে পুরোপুরি শেষ হতে সময় লাগবে। অনেক আধুনিক যন্ত্রপাতি কিনতে হবে।
আমাদের দেশে লোক বেশি কিন্তু নার্স-ডাক্তার কম। বিশ্বমানের ইনস্টিটিউশন গড়ে তুলতে যা যা লাগবে সে কাজগুলো আমরা করে যাব। বিদেশ থেকে উন্নতমানের সবকিছু আমরা সংগ্রহ করবো। আগুনে পুড়লে যাতে আর বিদেশে যেতে না হয়। এখানে যাতে যথাযথ সেবা পায়। সে জন্য নার্সদের প্রশিক্ষণ দেওয়া, উন্নত নতুন মেশিন আসলে সে বিষয়েও প্রশিক্ষণ দেব।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ যদি আগামী নির্বাচনে আমাদের ভোট দেয় তবে ক্ষমতা আসব। তখন এটিকে পুরোপুরি উন্নত প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করবো। আর যদি কোনো পরিবর্তন আসে তবে এটা যেন বার্ণ ইউনিটের মতো থমকে না যায় সেটি আপনারা দেখবেন।
হাতে মাত্র দশ বছর সময় পেয়েছি। এই সময়ে মধ্যে যতটুকু সম্ভব কাজ করে যাচ্ছি। চিকিৎসা সেবাটা যাতে সব দিক দিয়ে হয় সে বিষয়টা নিশ্চিত করছি।
আগামীতেও যদি নৌকায় ভোট দিয়ে এই সুযোগ দেন, তাহলে অবশ্যই আমাদের যে কাজগুলো এখন আমরা শুরু করেছি সেগুলো শেষ করতে পারবো এবং দেশকে আমরা উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করবোই।
২০২০ সালে বাংলাদেশকে ক্ষুধামুক্ত দারিদ্রমুক্ত দেশ হিসেবে উন্নীত করে ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী পালনের প্রত্যাশা করে ২০৪১ সালের মধ্যে দক্ষিণ এশিয়ায় উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তোলারও অঙ্গীকার করেন শেখ হাসিনা।
পাশাপাশি আগামী প্রজন্মের জন্য ভবিষ্যতে কিভাবে বাংলাদেশকে গড়ে তুলতে চাই সেলক্ষ্যে এরই মধ্যেই ডেলটা প্ল্যান দেওয়া হয়েছে সেকথাও উল্লেখ করেন তিনি।
এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে এগিয়ে যাবে। অনেক বাধা অনেক প্রতিকূলতার মধ্য দিয়েই আমাদের এগুতে হচ্ছে। তবে জাতির পিতা যে কথাটি ৭ মার্চের ভাষণে বলে গিয়েছেন, সেটাই সবসময় মনে করি। তিনি বলেছিলেন, কেউ দাবায়ে রাখতে পারবা না। তো কেউ দাবায়ে রাখতে পারে নাই, দাবায়ে রাখতে পারবে না। এটাই হলো বাস্তবতা।
বাংলাদেশের মানুষের চিকিৎসা সেবা দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য সরকারের বিভিন্ন গৃহীত পদেক্ষপ ও কর্মসূচির কথা তুলে ধরেন তিনি। মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন হবে এবং তাদের সুন্দর স্বাস্থ্য ও উন্নত জীবন হবে, এটাই আমাদের লক্ষ্য উল্লেখ করে বার্ন ইন্সটিটিউটের সাফল্য কামনা করে এটা মানুষের সেবায় নিবেদিত প্রাণ হয়ে বিশ্বে একটা শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে উঠুক সেই প্রত্যাশা করেন।
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন ঠেকাতে বিএনপি-জামায়াতের জ্বালাও-পোড়াও সম্পর্কে তিনি বলেন, শুধুমাত্র নির্বাচন ঠেকাতে হাজার হাজার মানুষকে পুড়িয়ে মারা। বাসে আগুন দেওয়া। মানুষের চলাচলের জন্য আমরা নতুন নতুন ১ হাজার বাস কিনেছিলাম এর প্রায় কয়েকশ পুড়িয়ে দিয়েছে বিএনপি-জামায়াত। অগ্নি সন্ত্রাসের কারনে বহু মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
সেই সময় এই পোড়া মানুষগুলির চিকিৎসা আমাদের করতে হয়েছে। অনেককে বিদেশে পাঠিয়ে চিকিৎসা করতে হয়েছে। প্রায় ৪ হাজার মানুষকে তারা পুড়িয়েছে। এর মধ্যে ৫০০ মানুষ মারা গেছে। ভবিষ্যতে যাতে এভাবে মানুষকে পুড়িয়ে মারতে না পারে সে বিষয়ে দেশবাসীকে আমরা সতর্ক থাকতে বলবো।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৬ সালের ৬ এপ্রিল এই ইনস্টিটিউটটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন এবং মূল ভবনের নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০১৬ সালের ২৭ এপ্রিল।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব সিরাজুল হক খান। স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন, সেনাবাহিনী প্রধান আজিজ আহমেদ, ইনস্টিটিউটের প্রধান সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন বক্তব্য রাখেন।
আপনার মতামত দিন: