Ameen Qudir

Published:
2018-10-02 21:06:07 BdST

যে আমার কাছ থেকে ফ্রি চিকিৎসা পায়, সেও বাইরে গিয়ে আমাকে গালি দেয়


 

 

ডা. অসিত মজুমদার
_________________________________


সিনেমায় অভিনয় করতে পারিশ্রমিক কত ?
আন্তর্জাতিক বাজারে ভারতীয় সিনেমার রমরমা ব্যবসা আর সমগ্র ভারতবর্ষে বলিউডের সিনেমার ব্যাপক চাহিদার সামনে দর বাড়ে আর্টিস্টদেরও।পাল্টে যায় বলিউডের সিনেমার ধরণ, পাল্টে যায় তাদের বাজার দর, পাল্টে যায় তাদের আর্টিস্টদের সম্মানীও। এসবের মধ্যে ছবি প্রতি কত পারিশ্রমিক পান আমির, সালমান ও শাহরুখরা।

আমির খান:
বলিউডে গুণগত মানের দিক থেকে সবচেয়ে এগিয়ে থাকা অভিনেতার নাম আমির খান। তাকে বলিউডের মিস্টার পারফেকশনিস্টও বলা হয়। এই সুপার স্টারের উপস্থিতিতে সিনেমায় অন্যরকম স্বাদ পায় দর্শকেরা। লগন, মঙ্গল পান্ডে, তারে জমিন পাড়, থ্রি ইডিয়টস, পিকে ছবির মতো ব্লকবাস্টার সিনেমায় অভিনয় করে তার ক্যারিয়ারকে নিয়ে গেছেন অনন্য উচ্চতায়। অভিনয় দিয়ে তার ধারে কাছে কেউ না থাকলেও পারিশ্রমিকের দিক দিয়ে তিনি আছেন সালমান খানের পরে। প্রতি সিনেমার জন্য আমির খান নেন ৪৫ কোটি রুপির মতো।

সালমান খান:
বলিউডের সিনেমায় দাবাঙ্গ খ্যাত নায়ক সালমানের উপস্থিতি মানেই ছবি হিট! ভারতের নব্বই শতাংশ দর্শকের মতো এমনই। সালমান ভক্ত ছাড়াও অন্যান্যরাও এই সত্যটা খুব করে বিশ্বাস করেন। কারণ, গত কয়েক বছরে বলিউডের এই সুপার স্টারের অভিনীত প্রায় প্রত্যেকটি সিনেমা-ই ব্যবসায়িকভাবে ব্যাপক হিট করেছে। তাই বলিউডে তার পারিশ্রমিকটাও যে সবার থেকে উপরে। বলিউডে সবচেয়ে বেশী পারিশ্রমিক নেয়া অভিনেতার তালিকায় সবার উপরে সালমান খান। তিনি প্রতি সিনেমার জন্য পারিশ্রমিক হিসেবে নেন ৬০ কোটি রুপি।

অক্ষয় কুমার:
আমির খানের পরেই সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক নেয়া অভিনেতার তালিকায় আছেন অ্যাকশন কমেডি ধাঁচের সিনেমায় যার সরব উপস্থিতি, মানে খিলাড়ি খ্যাত নায়ক অক্ষয় কুমার। তার পারিশ্রমিক ৪০ থেকে ৪৫ কোটি রুপির মধ্যেই।

শাহরুখ খান:
বলিউডের অন্যতম জনপ্রিয় নায়ক শাহরুখ খান, যাকে বলিউডের বাদশাহ বলা হয়। তিনি আছেন পারিশ্রমিকের তালিকায় চার নম্বরে। যদিও গত কয়েক বছরে বলিউডের এই বাদশাহ'র কোনো সিনেমাই ব্যবসায়িকভাবে ব্যর্থ হয়নি, সিনেমায় তার উপস্থিতি মানেই ব্যবসায়িকভাবে তুমুল হিট সিনেমা। প্রতি সিনেমার জন্য শাহরুখ খানের পারিশ্রমিক ৩৫ কোটি রুপি।

ঋত্বিক রোশান:
বলিউডের সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক নেয়ার মধ্যে একজন একজন কৃষ খ্যাত অভিনেতা ঋত্বিক রোশান। প্রচুর ফ্লপ সিনেমায় অভিনয় করলেও ঠিকই সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক নেয়া অভিনেতার তালিকায় জায়গা করে নিয়েছেন তিনি। বলিউডের এই হ্যান্ডসাম অভিনেতা প্রতি সিনেমার জন্য ২৫ কোটি রুপি নেন।


চিকিৎসকদের ভিজিট এত বেশী কেন?

চিকিৎসক কাকে বলবেনঃ
যাহারা ন্যূনতম ৫ বছর সপ্তাহে ৬ দিন ক্লাস করে সরকারি বেসরকারি মেডিকেল/ডেন্টাল কলেজ হাসপাতাল হতে “এমবিবিএস (MBBS)/বিডিএস (BDS)” ডিগ্রি পাশ করে বাংলাদেশ মেডিকেল এবং ডেন্টাল কাউন্সিল হইতে সাময়িক এবং ১ বছর প্রায় সারাদিন সারারাত হাসপাতালে ডিউটি করে ইন্টার্নশিপ শেষে পূর্নাঙ্গ রেজিস্ট্রেশন লাভ করে শুধু মাত্র এবং কেবলমাত্র তাদেরকেই “ডাক্তার” বলবেন এবং শুধুমাত্র তারাই নিজ নামের আগে ডা. লেখার অনুমতি পায়।

শিক্ষণ ও প্রশিক্ষণঃ
ভর্তির যোগ্যতা-
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষই চিকিৎসা শাস্ত্র বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। সকল উন্নত দেশসমূহে চিকিৎসা বিদ্যাগ্রহণের পর্যায় মূলতঃ তৃতীয়-ধাঁপে হয়ে থাকে। প্রতিষ্ঠান হিসেবে চিকিৎসা বিদ্যালয় কিংবা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়গুলো কোন একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে সম্পৃক্ত থাকে।

মাধ্যমিক বিদ্যালয় কিংবা উচ্চ মাধ্যমিক পাঠ শেষে ও প্রয়োজনীয় যোগ্যতা পূরণসাপেক্ষে তীক্ষ্ণ ধী-শক্তির অধিকারী শিক্ষার্থীকে প্রতিযোগিতামূলক ভর্তি পরীক্ষায় অবতীর্ণ হতে হয়। উত্তীর্ণরাই পরবর্তীকালে স্নাতক-পূর্ব পড়াশোনা হিসেবে চিকিৎসা বিদ্যায় অংশগ্রহণ করতে পারে ।

সাধারণতঃ শিক্ষা পাঠ্যক্রম সম্পাদনের জন্য পাঁচ থেকে ছয় বছরের প্রয়োজন পড়ে। বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরাই চিকিৎসা বিদ্যা অধ্যয়ন করে থাকেন। তারপরও মৌলিকভাবে চিকিৎসা সংক্রান্ত জ্ঞান অর্জনের জন্য আইন-কানুন এবং সারা বিশ্বে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের উপর নির্ভর করে পাঁচ থেকে আট বৎসর সময় ব্যয়িত হয়।

প্রাথমিক স্তরের শিক্ষাগ্রহণ অর্থাৎ চিকিৎসা শাস্ত্র স্নাতক ডিগ্রী অর্জন শেষে পূর্ণাঙ্গভাবে নিবন্ধনকার্য সম্পাদনের জন্য সাধারণতঃ এক থেকে দুই বছর অভিজ্ঞ ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে ডাক্তারী বিদ্যা চর্চার প্রয়োজন পড়ে। এ সময়কালকে ইন্টার্নশীপ কিংবা ফাউন্ডেশন বছর নামে যুক্তরাজ্যে উল্লেখ করা হয়। এরফলেই তিনি দেশের প্রচলিত আইন মোতাবেক বৈধ কিংবা নিবন্ধিত ডাক্তার হিসেবে পরিচিত।

আইন-কানুন
পৃথিবীর অধিকাংশ দেশেই চিকিৎসককে তাঁর চিকিৎসা কার্য পরিচালনার জন্য সরকারের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হয়। জনগণ তথা রোগীর নিরাপত্তা ও রক্ষা করার লক্ষ্যেই স্বাস্থ্য সেবায় সরকারের এ ধরণের পদক্ষেপ গ্রহণ।
কিছু আইনে (যেমনঃ সিঙ্গাপুর) চিকিৎসক তাঁর শিক্ষাগতযোগ্যতা প্রদর্শনের লক্ষ্যে ডক্টর পদবী পত্র যোগাযোগ কিংবা নেমকার্ডে তুলে ধরতে পারেন। এমনকি তিনি যদি স্নাতক পর্যায়েও ডাক্তারী বিদ্যায় উত্তীর্ণ হয়ে থাকেন তাহলেও তিনি এ যোগ্যতার অধিকারী হবেন। কিন্তু অন্যান্য দেশে (যেমনঃ জার্মানি) ডক্টরেট পদবীধারীরাই কেবলমাত্র নিজেদেরকে ডাক্তার বা চিকিৎসক হিসেবে নিজের পরিচয় দেন।
যুক্তরাষ্ট্রে চিকিৎসাকে পেশা হিসেবে নেয়ার জন্য বিশেষ অনুমতিপত্র গ্রহণ করতে হয়। এছাড়া ইংরেজি ভাষাভাষী অন্যান্য দেশ বিশেষ করে যুক্তরাজ্য , আয়ারল্যান্ডসহ
কমনওয়েলথভূক্ত দেশে নিবন্ধন কার্যক্রম সম্পাদন করা আবশ্যিক।
ফ্রান্স , ইতালি এবং পর্তুগালে একজন সাধারণ চিকিৎসককে অবশ্যই ঔষধ প্রয়োগের লক্ষ্যে চিকিৎসার জন্য অর্ডার অব ফিজিশিয়ানের সদস্য হতে হয়।


দক্ষতা ও পেশাদারীত্ব পর্যবেক্ষণ
চিকিৎসকগণ তাদের পেশার প্রতি যথেষ্ট দায়িত্বশীল ও সময় সচেতন হয়ে থাকেন। তিনি চিকিৎসাবিদ্যায় তাঁর সহজাত দক্ষতা ও পেশাদারীত্বের পরিচয় রোগীর কাছে দিয়ে থাকেন।

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক হতে গেলে বাংলাদেশে আরও অতিরিক্ত চার থেকে আট-দশ বছর ব্যয় করতে হয়। কখনও কখনও আরও বেশী লেগে যায়।

অভিযোগ তো মানুষ করবেই। ডাক্তাররা তো মঙ্গলগ্রহ থেকে আসেনি। এদেশে কার বিরূদ্ধে অভিযোগ নেই। ডাক্তারদের কথাই মাঠেঘাটে। যে আমার কাছ থেকে ফ্রী চিকিৎসা পায় সেও বাইরে গিয়ে আমাকে গালি দেয়। এটা রক্তের দোষ। আর কিছু নয়। ঘূণে ধরা সমাজে ডাক্তাররা কি প্রচলিত সমাজের বিরুদ্ধে যেতে পারে???
আমেরিকা, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য বা অস্ট্রেলিয়া থাকেন এমন অনেকে বাংলাদেশে এলে আমার চিকিৎসা নেন। অনেকে বাংলাদেশের চিকিৎসকদের খুব ভাল বলছেন। যত মন্দ এদেশীদের কাছে এদেশের ডাক্তাররাই । মনে রাখবেন দু'একজন ব্যতিক্রম এর জন্য সব খারাপ হয়ে যায় না!!!

তাহলে বলুন চিকিৎসকদের ভিজিট আসলেই কত বেশী?

তথ্যসূত্রঃ গুগল

---------------------------
ডা. অসিত মজুমদার

MBBS, CCD (BIRDEM), Steno Diabetes Course (Denmark)

FCPS (Surgery, Part-2)

Senior Medical Officer

Bangladesh Institute of Health Sciences (BIHS) & Hospital

125/1 Darus Salam, Mirpur, Dhaka-1216

আপনার মতামত দিন:


মানুষের জন্য এর জনপ্রিয়