Ameen Qudir

Published:
2018-09-23 16:34:40 BdST

আলঝেইমারস ডিজিজ: স্মৃতিবিনাশী এক ব্যাধি


 


অধ্যাপক ডা. মোহিত কামাল
__________________________________


বেঁচে থাকার তাড়না লুকিয়ে থাকে সব মানুষের মনে। মৃত্যু অবধারিত জেনেও বেঁচে থাকতে চায় সবাই। বেঁচে থাকতে চায় অনন্তকাল।

বার্ধক্য মানেই কি অসুস্থতা? বার্ধক্য মানেই কি শারীরিক ও মানসিক ক্ষয়? পঙ্গুত্ব? মোটেই তা নয়। বার্ধক্যেও থাকা যায় তারুণ্যময়। পরিচর্যার মাধ্যমে জীবনকে সাবলীল রেখে থাকা যায় সুস্থ। নির্মম সত্য এই যে, মৃত্যুকে রোধ করা যায় না। কিছু কিছু ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট সময়ের আগে অনেকের জীবনে চলে আসে বার্ধক্য।

কেন দ্রুত চলে আসে এই বৃদ্ধকাল?

স্নায়ুকোষ নিউরনের ভেতর কিছু 'মুক্ত মৌলিক ধাতু' জমতে থাকে। এই 'ফ্রি রেডিক্যাল'ই নিউরনের ক্ষতের অন্যতম কারণ। শরীরের ভেতর প্রতিকূল অবস্থায় ত্রুটিপূর্ণ বায়োলজিক্যাল অক্সিডেশনের কারণে ফ্রি রেডিক্যাল সৃষ্টি হয়। গবেষণায় দেখা গেছে, ঝুটঝামেলামুক্ত স্নায়ুকোষ ১১০ থেকে ১২০ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকার ক্ষমতা রাখে। কিন্তু খুব কমসংখ্যক স্নায়ুকোষ এত বছর টিকে থাকে।

ফ্রি রেডিক্যাল স্নায়ুকোষের পুরো আয়ুস্কাল খেয়ে ফেলে। ফলে মস্তিস্কের নানা ধরনের কাজে বাধা আসে। বৃদ্ধকাল দ্রুত চলে আসার এটি একটি থিওরি। এই থিওরিতে বলা আছে- কোলাজেন, ডিএনএ, গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্রোটিন, জীবনের জন্য অপরিহার্য এসব অণুর মধ্যে আড়াতাড়ি সংযোগের কারণেও নিউরনগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ ছাড়াও ধারণা করা হয়, কোষের মেটাবলিজমের পর সৃষ্ট বর্জ্য পদার্থগুলো বয়সের সঙ্গে অল্প অল্প জমতে থাকে। এ জমার পরিমাণ যত বেশি হতে থাকে, তত ক্ষতি হয় কোষের; বৃদ্ধকাল এসে যায় নীরবে। মৃত্যুর আগমুহূর্ত পর্যন্ত উপসর্গবিহীন সুস্থতা নিয়েও কেউ কেউ বৃদ্ধকাল পার করে দেন। আবার কারও ইচ্ছার ফাঁকফোকর দিয়ে ঢুকে যায় গোপন ব্যাধি, নীরবে-নিভৃতে খেয়ে চলে স্মৃতির ভাণ্ডার। এভাবে স্মৃতির বিনাশ ঘটে। মানুষের জীবনে এ এক অসহায় অধ্যায়, করুণ পরিণতি।

স্মৃতির ঘরে তুষের আগুন লাগা এমন একটি রোগের নাম আলঝেইমারস ডিজিজ (Alzheimer's Disease )। এটি ডিমেনসিয়া রোগের একটি গুরুত্বপূর্ণ টাইপ বা ধরন। গবেষণায় দেখা গেছে, ৬৫ বছর বা তদূর্ধ্ব বয়সীদের ৫ শতাংশ, ৭৫ বছর বা তদূর্ধ্বদের ১৫-২৫ শতাংশ আলঝেইমারস রোগে ভুগে থাকে।

কিছুদিন আগেও রোগটি সম্পর্কে সাধারণ মানুষের মধ্যে তত সচেতনতা ছিল না। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগান এই রোগে আক্রান্ত হলে সারাবিশ্বের মানুষ মিডিয়ার কল্যাণে রোগটির ভয়াবহতা ও নির্মমতা সম্পর্কে অবহিত হয়।

প্রেসিডেন্ট রিগানের বাচনভঙ্গি ছিল অপূর্ব। বক্তৃতার ধরনটিও ছিল কৌশলী ও বুদ্ধিদীপ্ত। মৃত্যুর আগেই পাল্টে গিয়েছিলেন তিনি। স্মৃতিশক্তি ধূসর হয়ে গিয়েছিল তার। যুক্তি আরোপ বা পরিকল্পনা প্রণয়ন তো দূরের কথা, তিনি যে এক সময় প্রেসিডেন্ট ছিলেন- সে কথাও তার স্মরণে ছিল না।

কী ঘটে আলঝেইমারস রোগে : মস্তিস্কের নিউরনগুলো ধীরে ধীরে ক্ষয়ে যেতে থাকে। স্মৃতিবিভ্রাটের এটি সবচেয়ে বড় কারণ।

ডাচ্‌ স্টাডিতে দেখানো হয়েছে, স্মৃতি বিলুপ্তির জন্য এ রোগ ৭২ শতাংশ দায়ী। এ রোগে পুরুষদের চেয়ে নারীদের আক্রান্ত হওয়ার হার বেশি।

ডিউক বিশ্ববিদ্যালয়ের এলেন বোসেস ও তার সহকর্মীরা গবেষণায় দেখতে পান, রক্তের মধ্যে বিশেষ ধরনের প্রোটিনের (এপোই প্রোটিন) আধিক্য বংশপরম্পরায় উত্তরসূরিদের দেহে চলে আসে। যে ব্যক্তির রক্তে এপোই-৪ বর্তমান থাকে সে ব্যক্তি ৭০ বছরের আগে স্মৃতিবিভ্রাটে আক্রান্ত হতে পারেন। যাদের রক্তে এপোই-২ ও এপোই-৩ থাকে, তারা আরও ১০-২০ বছর পর আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকেন। সম্প্রতি ফ্রি রেডিক্যালকে আলঝেইমারস ডিজিজের একটি প্যাথজেনেটিক কারণ হিসেবে ধরা হয়।

ক্ষয়ে যাওয়ার কারণে মস্তিস্কের পুরুত্ব কমে আসে। ব্রেন সংকুচিত হয়। সেরিব্রাল সালকাইগুলো চওড়া হয়ে যায়। ফলে বিকল্প উপায়ে মস্তিস্কের নিলয়ের আকার বাড়তে থাকে।

অণুবীক্ষণ যন্ত্রের মাধ্যমে দেখা গেছে, মস্তিস্কের কোষে নিউরোফিবরিলার টেংগেলস, নিউরাইটিক প্লাগ ও হিরানোবডিস বিদ্যমান এবং অ্যামাইলয়েড ডিজেনারেশনের প্রমাণ। অ্যানালাইসিসে প্রমাণ পাওয়া গেছে, নিউরোট্রান্সমিটার যেমন অ্যাসিটাইলকোলিন, নরঅ্যাড্রিনালিন, সেরোটবিন, গামা গ্লুটামেট, সোমাটোস্টাটিন ইত্যাদি পদার্থের নিঃসরণ মাত্রা কমতে থাকে। ফলে স্নায়ুর সংকেত সঞ্চালন ক্ষমতা কমে যায়, অনুভূতি ও চিন্তায় ধস নামে।

আলঝেইমারস রোগের দুটি ধরন-৬৫ বছরের আগেই রোগটির সূচনা হতে পারে। রক্তের সম্পর্কের মধ্যে যাদের বিয়ে হয় তাদের সন্তানরা এ ক্ষেত্রে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। এ ক্ষেত্রে জেনেটিক কারণই দায়ী। এই টাইপে অবস্থা দ্রুত পরিণতির দিকে এগিয়ে যায়। শব্দ ব্যবহারে জটিলতা এবং গতিময়তার সমস্যা প্রকট থাকে। এ ক্ষেত্রে ক্রোমোজমাল ডিজঅর্ডার ট্রাইসোমি-২১ বেশি মাত্রায় ঝুঁকিপূর্ণ। বার্ধক্যজনিত আলঝেইমারস ডিজিজ। ধীরগতিতে রোগটি পরিণতির দিকে এগিয়ে যায়। রোগীর জীবনে ৬৫ বছর বা তার পর থেকে সমস্যা শুরু হয়। এ ক্ষেত্রে বুদ্ধিদীপ্ত আচরণই প্রথমে আক্রান্ত হয়।

উপসর্গের প্রকারভেদ ও পরিণতি : উপসর্গের পরিণতি বুঝতে হলে আমরা অভিনেত্রী রিটা হেওয়ার্থের সফল তারকা-জীবনের দিকে ফিরে তাকাতে পারি। তিনি ছিলেন সুন্দরী ও ব্যক্তিত্বময়ী। বুদ্ধিদীপ্ত আচরণ ও দুর্দান্ত অভিনয়ের জন্য তার খ্যাতি ছিল দুনিয়াজোড়া। ৬৮ বছরের এই খ্যাতিমান অভিনেত্রী আলঝেইমারস রোগে আক্রান্ত হন। ধীরে ধীরে তার স্মরণশক্তি লোপ পেতে থাকে। নতুন কোনো তথ্য তিনি শিখতে পারছিলেন না। নতুন কারও সঙ্গে পরিচিত হলে পরক্ষণে তার কথা ভুলে যেতেন। অ্যাপয়েন্টমেন্টের কথাও মনে থাকত না। এমনকি ঘরের সুইচ বোর্ডও খুঁজে পেতেন না। অল্পদিনের মধ্যেই কথা বলতে তার সমস্যা দেখা দিল। কথা বলার সময় ঠিকমতো শব্দ প্রয়োগ করতে পারতেন না। ফলে কথায় অসামঞ্জস্যতা ফুটে উঠত। এভাবে আস্তে আস্তে মনের উপলব্ধি ও চেতনাশক্তি লোপ পেতে থাকে তার। শরীরের গতিবিধায়ক সিস্টেম ঠিক থাকলেও গতিময়তা হারাচ্ছিলেন তিনি। কাজ করার ক্ষমতাও হারিয়ে ফেলেছিলেন। অনুভাবক সিস্টেমে কোনো সমস্যা ছিল না। কিন্তু কোনো বস্তু শনাক্ত করতে পারতেন না তিনি। তার চিন্তাশক্তি ও বুদ্ধিদীপ্ত আচরণ কমতে কমতে শূন্যের কোঠায় নেমে এলো। কালক্রমে ব্যক্তিত্বময়ী রমণীটি এক অসহায় মানুষে পরিণত হলেন। মৃত্যুর কাছে আত্মসমর্পণ করলেন। প্রকৃত মৃত্যুর আগে তিনি অনেক দিন এভাবে জীবন্মৃত ছিলেন। এখানে কেবল একটি উদাহরণ তুলে ধরা হলো। তবে রোগের প্রকাশভঙ্গিতে আরও নানা ধরনের পরিবর্তন থাকতে পারে। রোগটির ফলাফলের ব্যাপারে বলা যায়, সাধারণত প্রথম উপসর্গ শুরু হওয়ার পাঁচ থেকে আট বছরের মধ্যে রোগীর মৃত্যু হতে পারে। তবে মৃত্যুর আগে রোগীর করুণ অসহায় অবস্থা বেঁচে মরে থাকারই শামিল।

চিকিৎসা ব্যবস্থা : রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে রোগ নির্ণয় ও সামগ্রিক অবস্থা মূল্যায়ন করা হয়। রোগীর পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা, খাওয়া-দাওয়া, মলমূত্র ত্যাগ ইত্যাদির প্রতি নজর রাখতে হয়। এ সময় পুষ্টি বজায় রাখা খুব জরুরি। বিষাদে আক্রান্ত হলে অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট এবং ভিটামিনের প্রয়োজন হয়। অ্যাসিটাইলকোলিন নিঃসরণ বাড়ানোর জন্য কোলিনার্জিক ওষুধ ব্যবহার করা হয়। ইদানীং ফ্রি রেডিক্যাল অকার্যকর করার জন্য অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ভিটামিন (বিটাকেরোটিন, ভি-সি, ভি-ই) ব্যবহার করা হচ্ছে। বুদ্ধির সমস্যা হলে আমেরিকা বা ফ্রান্সে টেকরিন নামক ওষুধ ব্যবহার করা হচ্ছে। সম্প্রতি আমেরিকাতে আলঝেইমারস রোগের চিকিৎসায় এরিসেপ্ট ট্যাবলেট ব্যাপক হারে ব্যবহার করা হচ্ছে। এই ওষুধের মাধ্যমে মেমোরি, কগনিশন, জীবনযাত্রার মান এবং আচার-আচরণ উন্নত হয়। তবে রোগের চলমান ক্ষয় রোধ করা যায় না।

বার্ধক্যে সজীব থাকার উপায় : তারুণ্যের স্বাস্থ্য কাঠামোর গঠনশৈলীতে জেনেটিক বা বংশগত কারণগুলোর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। যতই বয়স বাড়তে থাকে জেনেটিক কারণ গুরুত্ব হারাতে থাকে। বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে, বয়োবৃদ্ধির বৈশিষ্ট্যগুলোর প্রায় অর্ধেক জেনেটিকনির্ভর। যারা ৮০ বছরের ওপরে বেঁচে আছেন, তাদের ক্ষেত্রে জেনেটিক ফ্যাক্টরের তেমন কোনো প্রভাব থাকে না। এর থেকে প্রমাণিত, একজন ব্যক্তি যত্নের মাধ্যমে শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটাতে পারেন। সেই উন্নতি ধরে রাখতে পারেন। সর্বোপরি বৈজ্ঞানিক জীবনযাপন পদ্ধতি অনুসরণ করে প্রকৃতির অপার ঐশ্বর্য ভোগ করতে পারেন। এই পদ্ধতির মধ্যে রয়েছে শরীর ও মন বিষয়ক কিছু সুস্থ পরিচর্যা, সচেতনতা।

সামাজিক যোগাযোগ রক্ষা করা খুব গুরুত্বপূর্ণ। সামাজিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় থাকার মাধ্যমে মানুষে মানুষে একটি পারস্পরিক আবেগীয় নির্ভরশীলতা গড়ে তোলা জরুরি। এ ক্ষেত্রে ইমোশনাল সাপোর্ট মানসিক চাপ বা পীড়নজনিত কষ্টকর পরিস্থিতিকে সহজ করে দেয়। বস্তুতপক্ষে ইমোশনাল সাপোর্টের মাধ্যমে স্ট্রেস হরমোনের প্রভাব কমানো যায়। দীর্ঘদিনব্যাপী স্ট্রেস হরমোনের উচ্চমাত্রা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থায় ধস নামায়। ফলে যে কেউ নানা ধরনের শারীরিক ও মানসিক অসুস্থতায় আক্রান্ত হতে পারে। এই যে সামাজিক যোগাযোগ, এটি আসলে সুস্থ মানসিক কার্যক্রমের বহিঃপ্রকাশ। সুস্থ মন উপহার দেয় সুস্থ শরীর; সুখী জীবন।

যতটুকু সম্ভব সব বয়সী ব্যক্তির সক্রিয় শারীরিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ থাকতে হবে। নিয়মিত ব্যায়াম করা জরুরি। নিয়মিত আনন্দময় চিত্তবিনোদনমূলক কাজের মাধ্যমে মনের স্বাস্থ্য সমৃদ্ধ হয়। দেহগত সামর্থ্যও বাড়ানো যায়। বিভিন্ন পেশির মধ্যে সমন্বিত কর্মোদ্দীপনা জাগানো যায়। গবেষণায় দেখা গেছে, ব্যায়াম না করার কারণে বয়স্কদের মস্তিস্কে নানা ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। স্মৃতিশক্তি কমে যায়। গবেষণায় আরও দেখা গেছে, পড়াশোনা, ক্লাস নেওয়া, ভ্রমণ, দাবা খেলা কিংবা পাজল সমাধানের মাধ্যমে মনকে উদ্দীপ্ত করা যায়। মনের ক্ষিপ্রতা কিংবা ত্বরিত চিন্তা করার শক্তি বাড়ানো যায়।

বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীরের কাঠামোগত পরিবর্তন হতে থাকে। তবু শরীরকে আগের অবস্থায় ধরে রাখার মনোভাব নিজের ভেতর জাগিয়ে রাখা খুই প্রয়োজন। এই মনোভাব দৃঢ়তর করার মাধ্যমে বার্ধক্যের পরিবর্তন রোধ বা শ্নথ করা সম্ভব। একই সঙ্গে মনে রাখা দরকার, নিজের মধ্যে যে কোনো স্ট্রেস মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা জাগাতে হবে। ধরে রাখতে হবে সে ক্ষমতা। এভাবে আঘাতজনিত পরিস্থিতি সামাল দেওয়া সম্ভব। বস্তুতপক্ষে বলা যায়, মানুষের মনস্তাত্ত্বিক গড়ন সুস্থ ও সবল রাখার মূল উৎস হচ্ছে সামাজিক, সাংস্কৃতিক, আত্মিক, ধর্মীয়, অর্থনৈতিক ও শারীরিক বিষয়গুলোর সমৃদ্ধ চর্চা ও সফল বহিঃপ্রকাশ।

বয়স্কদের নিজের কাজ যতটুকু সম্ভব ততটুকু নিজে করা উচিত। এ ব্যাপারে তাদের উৎসাহিত করা প্রয়োজন। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, তাদের কাজ করতে নিরুৎসাহিত করা হয়। তাদের কাজের ভার অন্যের ওপর দেওয়া হয়। কিন্তু এটি প্রমাণিত সত্য, বিভিন্ন কাজে বেশিমাত্রায় সহযোগিতা বয়স্কদের নিজস্ব ক্ষমতাকে অকালে খর্ব করে। ফলে তারা সহজে শারীরিক ও মানসিকভাবে অথর্ব হয়ে পড়ে।

যে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার ব্যাপারে বয়স্কদের সক্রিয় ভূমিকা থাকা উচিত। বিশেষ করে নিজস্ব স্বার্থসংশ্নিষ্ট বিষয়ে তাদের সিদ্ধান্ত বা মতামতকে অগ্রাধিকার দেওয়ার প্রয়োজন বেশি। নির্ঝঞ্ঝাট জীবনযাপনের জন্য যে কোনো বয়োজ্যেষ্ঠের চারপাশ নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা থাকতে হবে।

একজন বয়স্ক লোক নানা ফ্যাকাল্টির অভিজ্ঞতা সঞ্চয়ের মাধ্যমে সমৃদ্ধ হন। এ জন্য কম বয়স থেকে তাকে শারীরিক ও মানসিক কার্যক্রমের চর্চার মাধ্যমে গড়ে উঠতে হবে। সফল বয়স্কদের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সমাজকে অনেক কিছু দেওয়ার আছে। অভিজ্ঞতার আলোকে তারা পরিবার ও সমাজকে ঐশ্বর্যময় সমৃদ্ধি দিতে পারেন। তবে তাদের সেই অভিজ্ঞতাকে সফলভাবে কাজে লাগানোর চিন্তা উত্তরসূরিদের মাথায় থাকতে হবে।

২১ সেপ্টেম্বর ছিল বিশ্ব আলঝেইমারস ডিজিজ দিবস। আসুন, সবাই সচেতন হই। এ রোগ প্রতিরোধ করে তারুণ্যময় জীবনযাপন করি।
__________________________________

অধ্যাপক ডা. মোহিত কামাল
বাংলাদেশের অপ্রতিদ্বন্ধী কথাসাহিত্যিক

মনোশিক্ষাবিদ, অধ্যাপক ,মনোরোগবিদ্যা।

আপনার মতামত দিন:


মানুষের জন্য এর জনপ্রিয়