Ameen Qudir

Published:
2018-07-15 03:05:27 BdST

ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট ডাক্তার পরিচয় ও ওষুধের প্রেসক্রিপশন দিতে পারেন না







ডা. সোহায়েল শিবলী
_____________________

ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্টরা কি ডাক্তার ! তারা কি ডাক্তার পরিচয় দিয়ে চিকিৎসা ও ওষুধের প্রেসক্রিপশন দিতে পারেন !
এককথায় সোজা জবাব হল , অবশ্যই তা পারেন না।
তারা ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট হিসেবে মানসিক সমস্যাগ্রস্থদের সেবা দিতে পারেন। কিন্তু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। তারা ডাক্তারদের মত ওষুধ লেখার কোন অধিকার রাখেন না।

ডাক্তাররা যে ওষুধের প্রেসক্রিপশন করেন, এটা কোন বিচ্ছিন্ন অভিজ্ঞতা থেকে নয়। রীতিমত পাঁচ বছর মেয়াদী বেসিক পড়াশোনা , পরীক্ষায় পাসসহ নানা স্তর পার হয়ে এমবিবিএস বা বিডিএস ডিগ্রি নিয়ে বিএমডিসির রেজি:নিয়ে এই আইনী অধিকার লাভ করেন। অন্য কোন ডিগ্রিধারী একাজ করলে আইনের চোখে রীতিমত প্রানবিনাশী অপরাধ।
সম্প্রতি ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন শহরের নানা মহল থেকে বিচ্ছিন্ন অভিযোগ মিলছে, কিছু নন ডাক্তার এই ক্ষেত্রে ম্যাল প্রাক্টিস করছে।

ক্লিনিক্যাল সাইকোলজির এক ডিগ্রী কমপ্লিট না করা এক শিক্ষার্থী সিরাজগঞ্জে বসে নিজেকে ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট এবং ডাক্তার দাবী করে চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছিল বলে বিষয়টি অনেকের গোচরে এসেছে।রোগীকে ঔষধ প্রেসক্রাইব করছে সে । বিষয়টি অনলাইন মিডিয়ায় আসায় বেশ তোলপাড়।
ওয়াকিবহাল মহল বলছেন,
এই ধরনের অনৈতিক কার্যক্রম বন্ধে সকলের সোচ্চার হওয়া এবং দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির ব্যাবস্থা নেয়া জরুরী।

ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিষয়ে পাশ করা বিশেষজ্ঞরাও এ নিয়ে সোচ্চার। তারা বলছেন,
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগ এবং বাংলাদেশ ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি সোসাইটি সবসময় ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি সেবার সঠিক মান নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছে। এখানে পেশাগত নৈতিকতার বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে আলোচনা করা হয় এবং শিক্ষার্থী এবং এ সংক্রান্তসমিতির সদস্যদের জন্য নৈতিকতা বিষয়ে নিয়মিত প্রশিক্ষন আয়োজন করা হয় যার মধ্যে সাম্প্রতিকতম ছিল ১১ এপ্রিল ২০১৮ (বিভাগ আয়োজিত) এবং ৩ জুন ২০১৮ (সমিতি আয়োজিত) । ওই ভুয়া ডাক্তার গত দশ বছর ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগ বা সমিতির সাথে সম্পৃক্ত নয়।

ক্লিনিক্যাল সাইকোলজির কর্নধাররা বলেন, এ সংক্রান্ত জটিলতার আশঙ্কা থেকেই উদ্যোগ “বাংলাদেশ ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি কাউন্সিল এক্ট-২০১৬”র উদ্যোগ নেয়া হয়। । দুঃখজনকভাবে মনোবিজ্ঞান বিভাগ এবং বাংলাদেশ মনোবিজ্ঞান সমিতি না বুঝেই এই আইনটির প্রতিষ্ঠার বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় এবং প্রায় ৫ বছরের পরিশ্রম ব্যর্থতায় পর্যবাসিত হয়। এই আইন থাকলে আজ ওই ভুয়া ডাক্তারের মত -কেউ সাহস করত না এমন অনৈতিক আচরন করতে।
একজন ডাক্তার হিসেবে বাংলাদেশ ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি সোসাইটির কর্নধারদের এই সাহসী ও সময়োপযোগী বক্তব্যকে সাধুবাদ জানাই।

 

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি সোসাইটির সাধারন সম্পাদক এক বিবৃতিতে বলেন,
আমি বাংলাদেশ ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি সোসাইটির সাধারন সম্পাদক হিসাবে সংশ্লিষ্ট সকলের অবগতির জন্য জানাচ্ছি যে, এই পোস্ট এ উল্লেখিত প্রেসক্রিপশনে স্বাক্ষারকারি ( আইসিটি এক্টের কিছু
আইনি বাধকতার কারণে দায়ী ব্যাক্তির নাম উল্লেখ করা হল না ) ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট নন এবং তিনি আমাদের সমিতির সাথে কোন ভাবে যুক্ত নন। তিনি ডাক্তার না হয়েও ঔষুধ প্রেসক্রাইব করার মাধমে BMDC act এর গুরুতর লংঘন করছেন এবং সেবাগ্রহণকারী রোগীদের মারাত্নক ঝুঁকির মধ্যে ফেলছেন। তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করছি। জনগণকেও এ বিষয়ে সচেতন থাকার আহবান জানাচ্ছি ।

আপনার মতামত দিন:


মানুষের জন্য এর জনপ্রিয়