Ameen Qudir

Published:
2018-05-08 00:07:28 BdST

তাসফিয়ার মৃত্যু ও আমাদের দায়


 


প্রফেসর ডা.তাজুল ইসলাম
__________________________


কিশোরী তাসফিয়া ফেইসবুক বন্ধু আদনানের সঙ্গে তাদের "প্রেমের(?) ১ মাস পূর্তি উপলক্ষে রেস্টুরেন্ট এ একত্রে উৎসব করে ফেরার পর " না ফেরার " দেশে চলে গেলেন।

এই নির্মম হত্যাকান্ডে এখনো পর্যন্ত ঐ বয়ফ্রেন্ড আদনান ও তার " কিশোর গ্যাং কে দায়ী করা হচ্ছে

।আদনান ঐ কিশোর গ্যাং এর প্রধান।

তাসফিয়ার বাবা তাদের সম্পর্ক সমন্ধে জেনে গেলে তিনি আদনানকে শাসিয়ে দেন ও তাসফিয়ার ফেইসবুক একাউন্ট বন্ধ করে দেন।

এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আদনান তাসফিয়াকে তার বন্ধুদের হাতে তুলে দেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

এরকম ঘটনা আগেও ঘটেছে এবং যথাযথ ব্যবস্থা না নিলে ভবিষ্যৎ এ ঘটবে।

আমরা কি একটু নির্মোহ দৃষ্টিতে এরকম ঘটনার পিছনে আমাদের দায় কতটুকু তা একটি ভেবে দেখবো?

প্রথমত: এলাকায় একটি কিশোর গ্যাং তৈরি হয়েছে,
তারা যাবতীয় অপকর্ম করে বেড়াচ্ছে
অথচ অভিভাবক হিসেবে আমরা তা জানবো না,
আমার সন্তান সেখানে জড়িত কিনা তার খোজ নেবো না,
খোজ পেলে সন্তানকে ঐ পথ থেকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা নেবো না

- যদি তাই হয় তাহলে অভিভাবক হিসেবে আমরা এর দায় এড়াবো কিভাবে?

প্রতিটি মা- বাবাকে তার সন্তানের বখাটেপনা, অপরাধের জন্য দায় নিতে হবে,

সমাজ ও আইনের কাছে জবাবদিহিতা করতে হবে

।এলাকার মুরুব্বীরা,পুলিশ প্রশাসন প্রথমে মিটিং করে এই দায়ভার ঐ অভিভাবকদের ঘাড়ে ন্যস্ত করবেন

যাতে পরবর্তী যে কোন অপকর্মের জন্য সরাসরি মা-বাবাকে তার জন্য কৈফিয়ত দিতে হবে।

২য়ত: এলাকার মুরুব্বীরাদেরকেও এর দায় নিতে হবে।
এলাকায় মাদক বিক্রি হয়,কেনা হয় ;

এলাকায় নানাবিধ অনাচার, অপরাধ ঘটছে স্হানীয় সমাজপতি, জনপ্রতিনিধি, মুরুব্বীরা কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না বা নিতে ভয় পারছে।

একসময় আমাদের সমাজে মুরুব্বীরা তেমন দায়িত্ব পালন করতো।এখন ভয়ে কেউ এগিয়ে আসছে না।এ ভয় কাটাতে হবে।

তবে সবচেয়ে বেশী দায় নিতে হবে স্হানীয় পুলিশ প্রশাসনকে।

তাদের নাকের ডগায় এতো কিছু ঘটছে তা কিভাবে সম্ভব?
উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে এরকম প্রতিটি অপরাধ ঘটার জন্য তাদের কাছে কৈফিয়ত চাইবে
কেন আগ থেকে।প্রতিরোধ করা হলো না,

কেন তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

এভাবে সবার স্ব স্ব দায়িত্বহীনতার জন্য যদি জবাবদিহিতা ও কৈফিয়তের ব্যবস্থা কঠোর ভাবে পালন করা হয়

তাহলে এরকম অপরাধ নাটকীয় ভাবে কমে আসবে

।কিন্তু বিড়ালের গলায় ঘন্টা বাধবে কে?
__________________________

প্রফেসর ডা.তাজুল ইসলাম
সোশাল সাইকিয়ট্রিস্ট
অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান
কমিউনিটি এন্ড সোশাল সাইকিয়াট্রি বিভাগ
জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল,ঢাকা
e- mail: [email protected]

আপনার মতামত দিন:


মানুষের জন্য এর জনপ্রিয়