Ameen Qudir

Published:
2018-04-28 17:51:32 BdST

"কেন বেঙ্গালুরু,চেন্নাইর ডাক্তাররা ভগবান আর আমাদের ডাক্তাররা কসাই?"


প্রতিকী ছবি

 

ডা. আসিয়া চৌধুরী
__________________________

কেন ভারতীয় ডাক্তাররা ভগবান আর আমাদের দেশের ডাক্তাররা কসাই?

নতুন দেশে যাচ্ছে আদনান আর জয়া।হোল বডি চেক আপ করাবে আর সেই সাথে ঘোরাফিরা।লাখ খানেক টাকা নিয়ে যাচ্ছে ভারতের কোন বড় শহরে বেশ ফুরফুরে মেজাজে।সেখানে নেমেই একটা ভাল হোটেল নিয়ে ল্যাগেজ রেখে বেরিয়ে পড়ল ডাক্তার দেখাতে।হাসপাতালের গেটের সামনে যেতেই গেট রক্ষী গেট খুলে দিয়ে ওয়েলকাম জানাল দম্পতি কে,বেচারা পুলিশি পোশাক দেখেই খানিকটা চুপসে গেলো।মার-দাংগা যে স্বভাব টা বাংলাদেশ হলে ফুটে উঠত সেটা কেমন যেন মলিন হয়ে গেল।এবার গিয়ে দাড়ালো লম্বা লাইনে,যখন ঘন্টা খানেক পর সিরিয়াল এল তখন সুন্দরী রিসিপসনিস্ট বললেন আপনার টোকেনটা দিন প্লিজ।এবার তো মাথায় হাত।যাই হোক অনেক টোকেন আর সিরিয়ালের চরাই উৎরাই পেরিয়ে এবার সিরিয়াল পেলো ডাক্তারের।সেই সকাল ৮টাই এসেছে এখন বাজে ২টা।খবর পাওয়া গেল ডাক্তার এখন প্লেনেই আছেন,ল্যান্ড করবেন ৩টায়।অপেক্ষা আর অপেক্ষা,তবে অতি ভদ্র ভাবে। যাই হোক অবশেষ এ ডাক্তার ও মিলল আর সাথে কাংখিত টেস্ট,যা করাতে প্রায় ১৮০০০ রুপি গুনতে হল।বলে রাখি-আপনার বাসায় যখন মেহমান আসেন তখন খাতির-আপ্যায়ন বেশ ভালই করে থাকেন আপনি,যত টা না আপনার নিজের বাপ-মা আসলে করেন!!তাই বলে কি বাপ মা কে কম ভালবাসেন?হতেও পারেনা।হয়তবা সেই মেহেমানি আপ্যায়ন এর কারনে দম্পতি ভুলে গেলেন টাকার অংক টা,দুশলেন না কসাই বলে।যাই হোক রিপোর্ট আসল,সব নরমাল,বেশ খুশি(বাংলাদেশ হলে বলত নরমাল আসবে জেনেও করাইছে,কমিশন-কমিশন,ব্যাটা কসাই)কিছুটা যে অপেক্ষায় আর সময় অপচয়ে মেজাজ খারাপ ছিল তা বাজার ঘাট করে মনকে রাজি-খুশি করে নিলেন দম্পতি।খুশি মনে ফিরলেন দেশে।

এবার আসি বাংলার প্রেক্ষাপটে-
ডাক্তার ফি আর টেস্ট ফি বাবদ ১৫০০টাকা নিয়ে আদনান সাহেব চললেন বিশেষজ্ঞের চেম্বারে।ডাক্তার সমস্যা শুনে ঔষধ লিখে বাসায় চলে যেতে বললেন।আদনান সাহেবের মেজাজ খারাপ-ব্যাটা কসাই রোগ ই ধরতে পারেনাই,ওই কারনে টেস্ট ও দেয় নাই।এই ঔষধ খাওয়াবোনা।পরের দিন আরেক ডাক্তার।কিছু ঔষধ আর টেস্ট লিখে দিলেন।বের হয়ে আবারও মেজাজ খারাপ।দেখছস ব্যাটায় ১০০০টাকার টেস্ট দিছে,কমিশন খোর।সাথে যে সুহৃদয় বন্ধু ছিলেন তিনি বললেন-ল যাই আমার এক পরিচিত দোকান আছে তারে কই।তার বিশেষ-অজ্ঞ দোকানী দুই প্রেসক্রিপশন দেখে ভিটামিন আর গ্যাসের বড়ি দিয়ে ছেড়ে দিলেন।শেষে রোগ ভাল না হওয়ায় ডাক্তার ভাল না।
আসলে লাখ টাকার কাছে ১৮০০০ রুপি যেমনি ছেলে খেলা,তেমনি ১৫০০ টাকার কাছে ১০০০টাকার টেস্ট অনেক বড় কিছু।
আবার যখন বাইরে যাওয়া হচ্ছে তখন ফুল কোর্স ঔষধ কিনে এনে খাওয়া হচ্ছে আর দেশে হলে পরীক্ষার সাজেশন এর মত বেছে দিচ্ছে মূর্খ এক দোকানী।
দোষ টা কি তাহলে ডাক্তারের?একবার ভেবে দেখবেন।যে দেশে প্রেসক্রিপশন ছাড়া স্লিপিং পিল,এন্টিবায়োটিক দেদারসে বিক্রি হয় সেখানে তো সবাই শুধু ঘুমাবে আর অচিরেই ইনফেকটেড হবে।
__________________________

 

ডা. আসিয়া চৌধুরী । সুলেখক।

Diabetic Association of Bangladesh,Chapai Nawabgonj

 

আপনার মতামত দিন:


মানুষের জন্য এর জনপ্রিয়