Ameen Qudir

Published:
2018-04-12 21:39:40 BdST

মৃত্যুপথযাত্রীকে বাঁচাতে যেভাবে এগিয়ে এলেন কুমেকের ইনটার্ন ডা.আপন সাহা ও ওমর


 

 

সংবাদদাতা
______________________________

কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দুই ইনটার্ন ডাক্তার এক অসহায় ও মুমূর্ষু রোগীর জীবন বাঁচাতে এগিয়ে এলেন । যখন রক্তের অভাবে রোগী মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছিল, তখন সুচিকিৎসা পাশাপাশি রক্তদান করে রোগীকে জীবন দান করেন তারা। এই অনন্য কাজে কৃতজ্ঞতার শেষ নেই রোগী পরিবারের। যদিও মেডিকেল সংশ্লিষ্টরা জানেন, রক্তদান কর্মসূচির মত মহান জীবনদান কর্মসূচি মেডিকেল ছাত্রদেরই সামাজিক আন্দোলন। সন্ধানী আজ বিশ্বময় সুপরিচিত নাম রক্তদানের জন্য।
জেলার চান্দিনা শ্রীমন্তপুর গ্রামের বর্গাচাষী সুলতান আহমেদের স্ত্রী সেলিনা আক্তারকে মুমূর্ষু অবস্থায় কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তখন রোগীর প্রচুর পরিমাণে রক্তপাত হচ্ছিল। শরীরের পালস্ এবং ব্লাড প্রেসার ছিল না। কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে পরীক্ষা করে দেখেন সে অন্ত:স্বত্বা। হাসপাতালে আনার আগেই তার জরায়ু সংলগ্ন টিউব ফেটে গিয়ে রোগীর শারীরিক অবস্থা সংকটাপন্ন অবস্থায় ছিল। এসময় রক্তশূন্যতার কারণে প্রচুর পরিমাণ ‘ও’ পজেটিভ রক্তের প্রয়োজন হয়। কিন্তু ওই রোগীর সাথে তার কোনো স্বজন না থাকায় ডাক্তাররা বিপাকে পড়েন। পরে তারা নিজেরাই মানবতার মহান ধর্মের ডাকে রোগীর জীবন বাঁচাতে তারা রক্ত সংগ্রহে নামেন।

গাইনী বিভাগের ইন্টার্ন চিকিৎসক ডা. ওমর ফারুক ও ডা. আপন সাহা ওই রোগীর জন্য রক্ত দান করেন। পরে কুমিল্লা হাসপাতালের গাইনী বিভাগের প্রধান ডা. করুনা রানী কর্মকারের পরামর্শে বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে ডাক্তার ইশান, ডা. আসমা ও ডা. ইসরাত এর তত্ত্বাবধানে অপারেশন সম্পন্ন করা হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. বাপ্পী জানান, অপারেশন সুসম্পন্ন হয়েছে। রোগীর জীবনরক্ষায় সর্বাত্মক আমরা চেষ্টা করছি। রোগীর স্বামী সুলতান মিয়া জানান, তিন সন্তানের জননী সেলিনা আক্তারের মঙ্গলবার সকালে প্রচুর বুক ব্যথা শুরু হয়, বাড়িতেই সে অজ্ঞান হয়ে পড়ে। পরে তাকে চান্দিনা সেন্ট্রাল হাসপাতালে নিয়ে আসার পর সেখানকার ডাক্তাররা তাকে কুমিল্লা নিয়ে আসতে বলেন। তাই তাকে কুমিল্লা মুন হাসপাতালে নিয়ে গেলে তার অবস্থা খারাপ দেখে ডাক্তাররা কুমিল্লা মেডিকেল কলেজে নিয়ে আসার পরামর্শ দেন।

 

তিনি বলেন, আমার স্ত্রীকে বাঁচাতে ডাক্তাররা নিজের রক্ত দেয়ার পাশাপাশি যে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন । তাদের কাছে কৃতজ্ঞতার শেষ নেই। আমি ডাক্তারদের কাছে কৃতজ্ঞ। তিনি আরো বলেন, সেলিনা তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী। প্রথম স্ত্রী রৌশনারা সন্তান প্রসবের সময় মারা গিয়েছিল। প্রথম স্ত্রীর ২ মেয়ে এক ছেলে রয়েছে। ছেলের জন্মের সময় প্রথম স্ত্রী মারা গিয়েছিল। দ্বিতীয় স্ত্রী সেলিনার ২ ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। ছোট ছেলে সিজানের বয়স ৮ মাস। স্ত্রী সেলিনা অন্ত:স্বত্বা হয়েছে।
কুমেক হাসপাতালের গাইনী বিভাগের প্রধান ডা. করুনা রানী কর্মকার জানান, রোগীর গর্ভের সন্তান জরায়ুতে না হয়ে পাশের টিউবে জন্মেছিল, এতে টিউব ফেটে গিয়ে রক্তপাত শুরু হয়। মুমূর্ষু অবস্থায় আমাদের কাছে আসলে আমরা তৎক্ষনিভাবে তার অপারেশন করি।

আপনার মতামত দিন:


মানুষের জন্য এর জনপ্রিয়