Ameen Qudir

Published:
2018-04-11 01:48:54 BdST

ডাক্তারকে কসাই ,সিস্টারকে 'মালাউন মাগী' বলে অভিহিত করা নোংরা প্রোপাগান্ডা কাদের স্বার্থে


মিডিয়া নৈতিকতা মান্য করে অনুরূপ একটি প্রতিকী ছবি ব্যবহার করা হল। বার্তা সম্পাদক।


ডা. হৃদয় রঞ্জন রায়
______________________________

আপনারা নিশ্চয়ই দেখেছেন সেই ভিডিওটি ফেস বুকের বিভিন্ন গ্রুপে ছড়িয়ে দিয়ে ডাক্তারদের গোষ্ঠী উদ্ধার করা হচ্ছে। তারা নিজেরাই যেহেতু ছড়িয়েছে সুতরাং অামরা ডাক্তাররা অামাদের বক্তব্য রাখতেই পারি।

রোগী, রোগীর হাসব্যান্ড এবং ভিডিওকারীর কথপোকথন, অভিযোগ শুনলে যেন দরদ আর মানবিকতা উথলে উঠে ডাক্তারদের চৌদ্ধ গোষ্ঠীকে খুন করলেও গায়ের ঝাল মিটে না - এমন অভিনয় হয়েছে। এমনকি রোগী এক হিন্দু সিস্টারকে স্পেশাল মেনশন করে "মালাউন মাগী" ধরনের ঘৃনামূলক মনোভাবও পোষণ করেছে।

কিন্তু প্রকৃত ঘটনাটা কি? তার ৩৮+ সপ্তাহ হয়েছিল। এই সময়ে বাচ্চা পুরোপুরি ম্যাচিউর হয়ে যায়। তখন তাকে হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে অক্সিটোসিন ড্রিপ দিয়ে ব্যাথা উঠানোর চেষ্টা করতে হবে - বইয়ের ভাষ্য। ডেলিভারির প্রগ্রেস (সার্ভিক্স) দেখার জন্য কিছুক্ষন পর পর পিভি (রোগীর ৫ বার করেছে বলে সে নিজেই বলেছে) করতে হয়। বাচ্চা ডেলিভারির সময় প্রসূতি পায়খানা করে দিতে পারে - খুবই স্বাভাবিক। পেইন উঠানোর পরও ডেলিভারি প্রগ্রেস না হলে আর বেশি পেইন উঠানো যাবেনা। কারন তাহলে বাচ্চার ক্ষতি হবে। - এসব ঘটনাই কিন্তু হয়েছে। আর এই ঘটনাগুলী আবেগঘন পরিবেশে অভিযোগ আকারে বলেছে তারা। ডাক্তার কসাই কসাই....!!!

কিন্তু সত্য যেটি গোপন করেছে তারা সেটি হল আগেই জানা গিয়েছিল যে এই বাচ্চার VSD ও PDA (জন্মগত হার্টের জটিল ফুটো) আছে। অর্থাৎ অসুস্থ্য বাচ্চা। এসব ক্ষেত্রে অবশ্যই সিজার করতে হবে। সেকথা বলাও হয়েছিল তাকে। তারা রাজী হয়নি। আর এই অসুস্থ্য বাচ্চার কথা ভেবেই বেশি পেইন উঠানো হয়নি। কারন বেশি পেইন (জরায়ুর চাপ) এই বাচ্চারা সহ্য করতে পারেনা।

তাহলে কি হল বিষয়টা?
আমি কি বলতে পারিঃ
১। তারা নিজেই চেয়েছিল এমন অসুস্থ্য বাচ্চা না নিতে। তাই এমন করেছে। কারন আমি নিজেই দেখেছি বিকলাঙ্গ বাচ্চা হাসপাতালে ফেলে পালিয়ে গেছে বাবা মা। এমন অনেক বাচ্চার দায়িত্ব আমি নিয়েছিলাম শিশু বিভাগে ভর্তি করিয়ে।
২। হাসপাতালের বিল পরিশোধ না করার অশুভ চক্রান্ত। উপরি হিসাবে যদি কিছু ফাইন আদায় করা যায়!
৩। তারা প্রকৃতপক্ষে বিদেশী হাসপাতালের সিন্ডিকেট দালাল। তাই বাংলাদেশের ডাক্তারদের সম্পর্কে অপপ্রচারে নেমেছে।

মতামতঃ
এই ভিডিও পোস্টকারী, রোগী, তার স্বামী - উপরিউক্ত অভিযোগের ভিত্তিতে আইসিটি আইনে অপরাধ করেছে।

_____________________________

 

লেখক ডা. হৃদয় রঞ্জন রায়
লোকসেবী চিকিৎসক। সুলেখক।সহযোগী অধ্যাপক, রংপুর মেডিকেল কলেজ। 
____________
ভিডিওটি এখানে সংযুক্ত করা রুচিসম্মত নয় বিধায় বিরত থাকা হল। সম্পাদক

আপনার মতামত দিন:


মানুষের জন্য এর জনপ্রিয়