Ameen Qudir
Published:2018-02-09 18:27:01 BdST
বাংলাদেশের মাদার তেরেজা লুসি হল্টকে নাগরিকত্ব দিন
ডা. অপূর্ব সাহা সৈকত
_______________________
বাংলাদেশের মাদার তেরেজা ; বরিশালের নাইটিঙ্গেল লুসি হল্টকে বাংলাদেশের সান্মানিক নাগরিকত্ব দিন । তাকে নাগরিক হিসেবে পেলে সম্মানিত হবে বাংলাদেশ।
৮ ফেব্রুয়ারি বরিশালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা লুসি হল্টকে বিশাল জনসেবায় দাঁড়িয়ে সম্মান জানিয়েছেন।
দেশরত্ন প্রধানমন্ত্রী ১৫ বছরের মাল্টিপল ভিসাসহ
লুসি হল্টর হাতে তাঁর বৃটিশ পাসপোর্ট তুলে দিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ , লুসি হল্টকে বাংলাদেশের অবস্থানের মর্যাদাপূর্ণ সুযোগ দেয়ার জন্য। এবার এই মানবতার দেবীকে যথার্থ সম্মান জানানোর পালা। এ জন্য রাষ্ট্র ও সরকার কর্নধারদের প্রতি আকুল আবেদন , লুসি হল্টকে নাগরিকত্ব দিন। তাতে সম্মানিত হব আমরা।
সরকার তাকে ভিসাসহ বৃটিশ পাসপোর্ট দিলেও
কিন্তু মিডিয়াকর্মী ও বুদ্ধিজীবীদের কাজ শেষ হয়ে যায় নি। মিডিয়াকর্মীদের প্রতি বিশেষ অনুরোধ
তাঁর জনসেবার অমর মানবিক কাজকে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরুন। তাঁর ব্যাপারে জানলে বিশ্বও তাকে সম্মান জানিয়ে ধন্য হবে।
আমরা গ্লোবের অন্ধকারে পড়ে আছি। আর কেবল নানা বিষয়ে রাজা উজির মারছি।
বাস্তবে বিশ্ব আমাদের অমরত্ব পাওয়া মানুষগুলো সম্পর্কে সবিশেষ জানে না।
বিশ্বের দরবারে লুসি হল্টকে তুলে ধরা দরকার।
ইতোপূর্বে ডাক্তার প্রতিদিনে লুসি হল্টকে নিয়ে মানবিক প্রতিবেদন
___________________
বাংলাদেশেই সমাহিত হতে চান বাংলাদেশের মাদার তেরেজা লুসি হল্ট
Published: 2018-01-22 12:19:30
সংবাদদাতা , বরিশাল।
____________________________
বয়স তার নব্বইয়ের কোঠায়। ৫৭ বছর ধরে এ দেশে মানুষের সেবা করছেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে নিজের জীবনের মায়া তুচ্ছ করে যুদ্ধাহত ব্যক্তিদেরও স্বাস্থ্যসেবা দিয়েছেন। অবসর মিললেও লোককল্যাণ থেকে নেননি অবসর। ফিরেননি জন্মভূমিতে। এ দেশের মাটি, মানুষ আর বাতাস ভালোবেসে রয়ে গেছেন এখানেই। ব্রিটিশ নারী এই লুসি হেলেন ফ্রান্সিস হল্ট। বাংলাদেশের মা। মাদার তেরেজা।
১৯৩০ সালের ১৬ ডিসেম্বর যুক্তরাজ্যের সেন্ট হ্যালেন্সে জন্ম হয় লুসি`র। ১৯৬০ সালে তিনি প্রথম বাংলাদেশে আসেন। যোগ দেন বরিশাল অক্সফোর্ড মিশনে। ১৯৭১ সালে যশোর ক্যাথলিক চার্চের স্কুলে শিশুদের ইংরেজি পড়াতেন সিস্টার লুসি। বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে চার্চটি বন্ধ করে মিশনের সবাই খুলনায় নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যান। কিন্তু পালিয়ে না গিয়ে নিজের জীবন বিপন্ন করে লুসি ছুটে যান পাশের ফাতেমা হাসপাতালে। সেখানে আহত অসংখ্য নারী, পুরুষ, শিশুর কান্না দেখে আপ্লুত লুসি অসহায় মানুষদের সেবা দিতে চান। অন্য দেশের এক নারীর এমন আগ্রহ দেখে চিকিৎসকরা বিস্মিত হলেও সম্মতি দেন। এরপর থেকেই মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে যুদ্ধাহত ব্যক্তিদের শুশ্রূষা দিতে থাকেন লুসি।
তারপর অনেক বছর কেটে গেছে। কিন্তু এখনো মানুষের সেবা করে যাচ্ছেন ৮৭ বছর বয়সী এই ব্রিটিশ নারী। এমনকি নিজের জন্মভূমিতেও ফিরে যাননি। ২০০৪ সালে অবসর গ্রহণের পর এখনো বাংলাদেশকে ভালোবেসে বরিশাল নগরের অক্সফোর্ড মিশনে দুস্থ শিশুদের অবৈতনিক ইংরেজি শিক্ষক হিসেবে কাজ করে যাচ্ছেন। লুসি’র শেষ ইচ্ছা তাকে যেন এই বাংলার মাটিতেই সমাহিত করা হয়। আর তাই মৃত্যুর আগে এই দেশের নাগরিকত্ব পেতে চান লুসি।
কিন্তু যে দেশকে ভালোবেসে তিনি পড়ে আছেন, সেই দেশে বেশ কয়েকবার নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করেও বিফল হয়েছেন তিনি। মাত্র ৭৫ পাউন্ড অবসর ভাতা পেয়ে অক্সফোর্ড মিশনের একটি জরাজীর্ণ কক্ষে থাকেন তিনি এখন। এই স্বল্প আয় থেকেই টাকা জমিয়ে দ্বৈত নাগরিকত্বের জন্য বেশ কয়েকবার আবেদন করেছেন এই জনহিতৈষী নারী। কিন্তু প্রত্যাশিত সাড়া মেলেনি। তবু লুসির বিশ্বাস, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যদি তার ব্যাপারে জানতে পারেন তাহলে নিশ্চয়ই তাকে নাগরিকত্বের অনুমতি দিয়ে দিবেন।
মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদান রাখায় গত বছরের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে লুসিকে সম্মাননা দেয় বরিশাল মহানগর পুলিশ।
লুসি বলেন, বাংলাদেশের জন্ম ১৬ ডিসেম্বর আর আমার জন্মও একই দিনে। এটা কাকতালীয় হলেও বিষয়টি আমাকে খুব ভাবায়। হয়তো এটা ঈশ্বরের খেয়াল! অবসর গ্রহণের পর সবাই দেশে ফিরে যায়। কিন্তু আমি এই দেশকে এত ভালোবেসে ফেলেছি যে, এর মায়া ছেড়ে যেতে মন সায় দেয়নি। তাই জীবনের সেরা সময়গুলো কাটানো এই বরিশালেই ফিরে এসেছি। মৃত্যুর পর এখানের মাটিতেই সমাহিত হতে চাই।
লুসি আরও বলেন, বেশ কয়েকবার এ দেশে নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করেছি। প্রতিবছর অনেক টাকা দিয়ে ভিসার মেয়াদ বাড়াতে হচ্ছে। গেল বছর ভিসার মেয়াদ বৃদ্ধি করতে ৩৮ হাজার টাকা লেগেছে। আমি এখন অবসর ভাতা পাচ্ছি ৭৫ পাউন্ড, যা বাংলাদেশের সাড়ে সাত হাজার টাকার সমান। সামান্য এই অর্থ থেকে বাঁচিয়ে আমাকে ভিসার জন্য ব্যয় করতে হয়।
আপনার মতামত দিন: