Ameen Qudir
Published:2017-12-27 18:36:25 BdST
চিকিৎসক আন্দোলনকে কখনোই সরকার বিরোধী তকমা দেওয়া উচিত নয়
ডা. রেজাউল করীম :
কলকাতার প্রখ্যাত লোকসেবী ডাক্তার । সমাজচিন্তক।
___________________________
"তরী হতে তীর" বইটিতে হীরেন মুখার্জি মহাশয় লিখেছেন- সভায় তাঁর সরকার বিরোধী বক্তব্য নেহরুজি শুনতে পছন্দ করতেন। এটাই সুস্থ গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা। সরকারের নীতির বা তা রূপায়নের ত্রুটি নিয়ে আলোচনা সরকারকে দুর্বল করে না বরং শক্তিশালী হতে সাহায্য করে। রাজনৈতিক দলের সভায় বক্তব্য রাখা আর ট্রেড ইউনিয়নের নেতা হিসেবে বক্তব্য রাখাকে একই মানদণ্ডে বিচার করা উচিত হবে না। এই রাজ্যের ঐতিহ্য ব্যক্তি স্বাধীনতা ও দ্বিমত পোষন করার অধিকারের পক্ষে। রাজস্থান সরকার ৬৬ জন চিকিৎসককে গ্রেফতার করেছে ও সাধারন কয়েদিদের মত তাদের লক-আপে বন্দী করেছে। এই রাজ্যে সরকার সরকারী চিকিৎসকদের মধ্যে ভীতি সঞ্চার করছেন। এগুলি গনতন্ত্রের জন্য সুস্থ লক্ষণ নয়।
সাম্প্রতিক চিকিৎসক আন্দোলনকে কখনোই সরকার বিরোধী তকমা দেওয়া উচিত নয়। প্রথমত: এই আন্দোলনের মুখ্য উদ্দেশ্য হল: চিকিৎসকদের হৃত সম্মান পুনরুদ্ধার ও নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা। প্রতি মাসে গড়ে সাতজন করে চিকিৎসক নিগৃহীত হচ্ছেন আর প্রশাসন ঠুঁটো জগন্নাথ হয়ে বসে আছেন। যে আমলা গৌতম মুখার্জিদের "সরকার বিরোধী" বক্তব্য শুনেছেন, তারা নিশ্চয়ই চিকিৎসকদের সুরক্ষার ও সম্মানের দাবীর কথাও জানেন। সরকারকে চিকিৎসকদের তরফে অসংখ্যবার চিঠি দিয়ে আলোচনার দাবী জানানো হয়েছে- কিন্তু সে দাবী অগ্রাহ্য করা হয়েছে, ১৪৪ ধারা জারি করে সরকার তার নিজের কর্মচারীদের শান্তিপূর্ণ সমাবেশ বানচাল করার চেষ্টা করেছে।
চিকিৎসক আন্দোলন কখনোই কোন সরকার বিরোধী আন্দোলন ছিল না সরকার জোর করে কাউকে বিরোধী বানিয়ে না দিলেই ভালো হয়। এই চলতি সমস্যার সমাধান মুখ্যমন্ত্রী ছাড়া অন্যদের পক্ষে সম্ভব নয়- জননেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি আমি আস্থাশীল। তিনি বহু লড়াই আর সংগ্রামের মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠা পেয়েছেন। আমার বিশ্বাস তিনি মানুষের সংগ্রামী চেতনার প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আন্দোলনের প্রথম পর্যায় থেকে আমরা সরকারের সাথে আলোচনা চেয়েছি- চিকিৎসকরা কোন আর্থিক সুবিধা বা অন্যকোন সরকারী আনুকূল্য চাইছেন না। তারা নিজের পেশার প্রতি সুবিচার করার জন্য সুস্থ আইনের শাসন চাইছেন। চোখ রাঙিয়ে সেই দাবি থেকে তাদের সরানো সম্ভব বলে মনে করি না।
আপনার মতামত দিন: