Ameen Qudir
Published:2017-12-27 17:26:39 BdST
আমরা মানুষ,কোন ফ্যাক্টরির মেশিন না
ডা. মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন
____________________________
আমাদের দেশের চাকুরীজীবী মানুষগুলা এতো হতাশ আর খিটখিটে কেন জানেন?
কারণ আমাদের দেশের প্রতিষ্ঠানগুলো এদের কর্মীদের একেবারে শেষ অব্দি নিংড়ে নিতে চায় কোন বিরতি ছাড়াই।জয়েনিং আর রিটায়ারমেন্ট ছাড়া কোন শুরু আর শেষের বালাই নাই।সপ্তাহে ৬ টা দিন,একেবারে কাজের চাপে চিড়েচেপটা করে ফেলে একদিন দয়া দেখিয়ে ছুটি দেয়,তাও নিজেদের স্বার্থে।
এই একটা দিন যেন নিজেকে পরের ৬ টা দিনের জন্য প্রস্তুত করতে পারে,তাই।
ছুটি নেবেন?দরকার ছাড়া দিতে চায় না।এরা ভাবে শুধু শরীর দিয়েই বুঝি মানুষ,এর মাঝে আর কিছু নেই।মন?সে আবার কি জিনিস?যে জিনিসের কোন বাস্তব মূল্য নাই,তার কোন অস্তিত্ব এরা স্বীকার করে না।মানুষের মন যে খারাপ হতে পারে,এক নাগাড়ে একই কাজ করতে করতে বিরক্ত হয়ে উঠতে পারে,চরম মাত্রার হতাশা ঘিরে ধরতে পারে-এসব কি এরা ভাবে কখনো?ভাবে না।
একটা মানুষের জীবনের একটা দিনের ২৪ ঘন্টার মাঝে ৮ ঘন্টা নিয়ে নিচ্ছে,তাও সকাল থেকে সন্ধ্যা,আর রাস্তাঘাটের অসহনীয় জ্যাম মিলিয়ে বেরোতে হয় কাকডাকা ভোরে,আর ফিরতে ফিরতে সেই গভীর রাত।টাকার এতো জোর?এমন করে একটা মানুষের ৬০ বছর কেড়ে নিচ্ছো,তাও কোন বিরতি ছাড়াই?
অথচ মানুষগুলো হতাশ হয়,বিরক্ত হয়।আর এই বিরক্তি যেয়ে পড়ে বৌ বাচ্চার উপর।বেচারিরা বিনা দোষে ঝাড়ি খায়,তারপর একদিন সহ্যের সীমা ছাড়ালে তারাও দুকথা শুনিয়ে দিতে ছাড়ে না।ফলাফল?সংসারে অশান্তি।
কি ক্ষতি বছরে ৭ টা দিন তাকে একটানা ছুটি দিলে??এই ৭ টা দিন সে নিজের মতো থাকুক,পরিবারের সাথে আনন্দঘন সময় পার করুক,কোথাও থেকে ঘুরে আসুক।দেখবেন,যেই মলিন মানুষটাকে ছুটিতে পাঠিয়েছেন,তার বদলে অন্য এক প্রাণোচ্ছল মানুষ ফিরে এসেছে।
আমরা মানুষ,কোন ফ্যাক্টরির মেশিন না।
_________________________
লেখক ডা. মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন । ঢাকা ।
আপনার মতামত দিন: