Ameen Qudir
Published:2017-08-10 02:11:35 BdST
"আপু আমার জীবনের একটা সমস্যা তোমাকে না বললেই আর হচ্ছে না"
ডা. নাসিমুন নাহার
_____________________________
একটা মেয়ে ফেসবুকে টুকটাক লেখালেখি করে একেবারেই নিজের মনের আনন্দে-সময় কাটানোর জন্য।অনেকে তার লেখা পড়ে, পছন্দ অপছন্দ করে।ইনবক্সে কমেন্টে অনেকে মতামত প্রকাশ করে।এ পর্যন্ত ঠিক আছে।কিন্তু.......
ধরা যাক মেয়েটির নাম তুপা।তো একদিন তুপা একটা মেসেজ পেল।তাতে লেখা ছিল--""আপু আমি তোমার অনেক বড় ফ্যান।খুব ভালো লাগে তোমার লেখা।লেখার থেকে আরো বেশি ভালো লাগে তোমাকে, তোমার straightforward attitude কে।আপু আমার জীবনের একটা সমস্যা তোমাকে না বললেই আর হচ্ছে না।যদিও তুমি আমাকে চিন না।
কিন্তু আমি গত ছয় সাত মাস ধরে তোমার আইডি ফলো করি।সব লেখা পড়ি।
আমার হাবিও তোমার লেখা খুব পছন্দ করে।ও তোমার কোন একটা পোস্টে লাইক/কমেন্ট দিয়েছিল যা আমার টাইম লাইনে এসেছিল।তখন থেকেই তোমাকে জানি। সমস্যাটা হচ্ছে আমার ধারনা আমার হাবি শুধু তোমার লেখা না তোমাকেও পছন্দ করে।এটা নিয়ে গত কিছুদিন ধরে আমাদের মধ্যে খুব বিশ্রী রকমের ঝগড়া হচ্ছে।আমি জানি তুমি খুব অবাক হচ্ছ এটা পড়ে।তুমি হয়তো কখনোই আমাকে বা আমার হাবিকে নোটিশই করনি।
কিন্তু আমার মনে হয় ও সিরিয়াসলি তোমাকে পছন্দ করে।কারন ও যখন মেডিকেলে পড়ত তখন নিজেও খুব লেখালেখি করত।ওর অনেক লেখা পেপার, পত্রিকাতে ছাপা হয়েছে।ও সাহসী সিম্পল মেয়ে পছন্দ করে, যা তুমি।তার উপরে তুমি ডাক্তারও।
প্রথম প্রথম ও যখন তোমার লেখার প্রশংসা করত আমি খুব একটা পাত্তা দেইনি।কিন্তু পরে লক্ষ্য করে দেখলাম ও রীতিমত তোমার পোস্টের জন্য অপেক্ষা করে, এডেক্টেড হয়ে গেছে।যদিও আমি বলেছি তুপা আপু তোমাকে জীবনেও পাত্তা দিবে না।তোমার মত ছেলের মুখে আপু ঝামা ঘষে দিবে।আপু আমি খুব অশান্তিতে আছি।কি করব বুঝতে পারছি না।
তাই তোমাকে বললাম।প্লিজ কিছু কর আমার জন্য।""
তুপা দুইবার পড়ল মেসেজটি।বোঝার চেষ্টা করল--- এখানে তার অবস্থান কি ? বুঝল এবং মেয়েটির আইডিতে ঢুঁ মেরে তার হাবিসহ বহুত পাবলিক করা হ্যাপি কাপল পিকচার দেখল মাশাল্লাহ।হাবি আছে তুপার ফ্রেন্ড লিস্টে।
সম্ভবতঃ ডাক্তার বলেই এড করা।তবে পার্সোনালী ভাইয়াটাকে তুপা চেনে না, কথাও হয়নি কখনো।অতঃপর তুপা ঘুমিয়ে গেল।
পরদিন সকালে অফিসে এসে পিসি অন করতেই মেসেন্জারে টুং টাং বেজে উঠল।দেখল মেয়েটির হাবি মেসেজ করেছে--- ""তুপা আমি খুব সরি আমার ওয়াইফের আচরণের জন্য।তুমি আমার জুনিয়র হবে।তোমার লেখা ভালো লাগে, একজন ডাক্তার, নিজের কমিউনিটির কারো লেখা পড়ছি-- এটা নিয়ে মাঝে মাঝে কথা হতো আমাদের ব্যাস এতটুকুই।আসলে আমার ওয়াইফ খুব ইনসিকিউরড ফীল করে।কাজিন বন্ধু ক্লাসমেট কারো সাথেই কথা বলার উপায় নেই।তুমি ম্যাচিউর এবং বুদ্ধিমতী মেয়ে।আশা করি ব্যাপারটা বুঝতে পারবে।
আমি খুব লজ্জিত আমার জন্য তোমাকে অস্বস্তিতে পড়তে হলো।""
তুপা একটা মেসেজ টাইপ করে ওদের দুজনকে ফরোয়ার্ড করল ----- ""দেখুন আমি মেয়েটা সামান্য হলেও নাকটা খুব উঁচু।আমি কখনোই কারো জীবনের তৃতীয়পক্ষ হবার কথা ভাবতেও পারি না।যখনই কোন সম্পর্কে ছিলাম বা থাকব সব সময়ই শুধুমাত্র একমাত্র হয়েই ছিলাম কিংবা থাকব।সুতরাং আমাকে নিয়ে একেবারেই ভিত্তিহীন ভাবে নিজেদের মধ্যে অশান্তি করাটা খুব দুঃখজনক।আশা করি আপনারা দুজনেই আপনাদের মেসেজের রিপ্লাই পেয়ে গেছেন।""
এরপর তুপা দুজনকেই ব্লক করে দিয়ে খানিকটা হেসে নিল।
#হ্যাপি_ফেসবুকিং
_________________________
ডা. নাসিমুন নাহার । লোকসেবী চিকিৎসক।
আপনার মতামত দিন: